চন্দ্রাণী গোস্বামী / দু'টি কবিতা
অনামিকা
এখনও করতলে প্রার্থনার মতো সুন্দর আকাশ
লেগে আছে।
শরীরে মেঘগুলো শান্ত ঢেউ,
গভীর পুরুষ্ট ঠোঁটে একচিলতে
প্রশান্তি, যেন মেঘের পাশে
শরণার্থী বৃষ্টি...
তার দুপাশে ভরন্ত ধান ক্ষেত
তার মাঝে অম্লান আলপথ...
কবি আসেনি তার কাছে
কোনো মানুষ এখনো
ছোঁয় নি সারল্য,
কবি, টের কি পাও
জীবনের রথচক্র তার
কোমরের কাছে ব্রীড়াবনত
আজও!
পাশ ফিরে শুয়ে থাকে
কেমন সীমাহীন নির্লিপ্তিতে
তোমারই অপেক্ষায় ...
কখনো সে যদি উঠে বসে
গেয়ে ওঠে না ফুরানো গান
"সকলই নিবে কেড়ে, দিবে না তবু ছেড়ে"
করতল খুলে ভিজতে চায়
হিমবুকের ভেতর ভীষণ এক
ভালো লাগা নিষিদ্ধ বৃষ্টিতে...
সেই এলোমেলো বৃষ্টিতে
যদি ক্রমাগত সে ভেজে,
ভিজুক।
আমি ওকে বৃষ্টির ছন্দ শেখাবো না।
সেদিন আষাঢ়
রাতের গলির মোড়ে দাঁড়িয়ে দীর্ঘ অপমানিত হবার পর
বাড়ির বউ ঘরে ফিরে এলো। সেদিন আষাঢ়,
তবে দিনক্ষণ কারুর মনেই নেই। এমন বৃষ্টি রাত জুড়ে,
ঢেকেছে সমস্ত পথ, যা কিছু সৎ-----
বউ হে, তুমুল বৃষ্টি... ঝাউবনে গিয়েছিলে যে, সে পথে
ঘন বৃষ্টিতে অধিক দ্রুতই ঘনায় অবেলা...
এদিকে ঘরে এখন 'শাওন গগনে ঘোর ঘনঘটা'য়
নতুন করে বৃষ্টির দেহ সিঞ্চন হচ্ছে -------
অপমানগুলো বুকের ওপর উপুড় হয়ে শুয়ে
বৃষ্টিতে ভিজছে। একে তো আষাঢ়, ওদিকে গানের
খাতায় তুমুল বান ডেকেছে।
একাকী প্লাবনে মত্ত রাত। বউটা সারহীন...
ঘুমাচ্ছে...
*************************************************************************
জন্ম সত্তর দশকের শেষদিকে। স্কুল জীবন, বড়ো হয়ে ওঠা সবই কলকাতা য়। পড়াশোনা স্নাতকোত্তর , কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে। বর্তমানে কলকাতার একটি কলেজে হিসাব রক্ষণ বিভাগে কর্মরত। ছোটবেলা থেকেই লেখালেখির প্রতি তীব্র আসক্তি। নতুন শতকের প্রথম দশকের শেষ থেকে নিয়মিত লেখালেখি। কবিতা আশ্রম, কৃত্তিবাস, গাঙ্গেয়, অপদর্থের আদ্যক্ষর, বম্বে ডাক, তমোহা, সাজি পত্রিকা, বিকল্প বার্তা সহ বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় লেখা প্রকাশিত।




অসাধারণ দুটি কবিতার অনুভব হৃদয়ে ধারণ করলাম আর একরাশ মুগ্ধতার আলোয় আলোকিত হলাম।
উত্তরমুছুন