কৌশিক সেন / দু'টি কবিতা
কেকা
নষ্ট হতে হতে বহুদূর হেঁটে গেছে এই জনপদ
জানি, কেউ বেঁচে নেই, থাকবার কথাও নয়,
এক অসুখ থেকে অন্য অসুখে সংক্রমিত হয়
যে দেশ, এক শ্বাসযন্ত্র থেকে অন্য শ্বাসযন্ত্রে
বয়ে যায় যে বাতাস, তার ঠিকানায় নিশ্চিন্তে
রেখে আসা যায় অতলান্তের জাহ্নবীগান।
যে বালক গোপনে তার শরীরে লুকিয়ে রাখে
বনের ময়ূর, তাকেও শুধিয়ে দেখেছি, সেও
কেকাধ্বনির প্রতিশব্দ উদ্ধার করতে পারেনি।
জানি, কেউ শুনতে পাবেনা, তবুও এই
গুমোট সন্ধ্যায় নিঃসঙ্গ বালক বিছিয়ে রাখে
ময়ূরকণ্ঠী মাদুরখানি।
কষ্ট পেতে পেতে বহুদূর বয়ে গেছে যেসব তটিনী
জানি, তাঁদের শরীরে সম্পূর্ণ অবগাহনের পরই
স্পষ্ট হবে বিরহী ময়ূরের ভাষা!
জুঁই
সতত মেঘবারি মরমে মশগুল
আমার বাসাবাড়ি তাড়িত শিখিপাখা
পরতে ঢাকা শোক কামিনা জুঁইফুল
লালিত মালাডাকা বালিকা ইস্কুল
একাকী কাদাপথে থেমেছে রথচাকা
সতত মেঘবারি মরমে মশগুল
নিশানা দূরে দূরে মানিনি মাস্তুল
নিভৃত সন্ধ্যায়, সে বড় মায়ামাখা
পরতে ঢাকা শোক, কামিনা জুঁইফুল।
সবই তো ঠিক ছিল, তবুও পথভুল
আবেশে রাতভর অবুঝ নিশিডাকা
সতত মেঘবারি মরমে মশগুল
এপথে ছড়ানো অনামি বনফুল
বাতাস জানে নাকি, আকাশ মেঘে ঢাকা
পরতে ঢাকা শোক, কামিনা জুঁইফুল।
নিকানো সাঁঝবেলা, ভরেছে বিলকুল
হারানো বাঁশিটিকে খোঁজেনি মধুশাখা
সতত মেঘবারি মরমে মশগুল
পরতে ঢাকা শোক, কামিনা জুঁইফুল।
**********************************************************************************
**********************



কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন