শনিবার, ১৩ আগস্ট, ২০২২

নিমাই জানা



নিমাই জানা / দু'টি কবিতা


(১) একটি আততায়ী রংয়ের জিরাফ ও গনেরিয়া পাঞ্জাবি



অ্যাসপিরিন মেশানো শিথিল ঊর্ধ্ব মহাশিরার কাছে নৌকাটি এসে প্রতিদিন তরল রক্ত পান করছে কোন এক রাতের আততায়ী নৌকাটির মতো

নির্জীব শরীর বলে আর কিছু নেই , শুধু একটি বৈভব শূন্য নরম গন্ধরাজ রঙের পাতাবাহারে ঢেকে থাকা হাসপাতালের করিডোর বেয়ে অসংখ্য মৃত শাবকেরা জলাশয় ভেঙে ভেঙে পাঞ্জাবী রঙের নৌকার ভিতর নিজেদের স্ত্রীলিঙ্গ ঢুকিয়ে রাখে ,

আমি শুধু জিরাফের মতো একটি দরজা খুঁজে বেড়াই গভীর মধ্যরাতে , আসলে আমি জ্ঞানেন্দ্রিয়কে লুকিয়ে রাখার পর গনেরিয়া আক্রান্ত পাখিটির সাথে আমিও প্রতিদিন মৈথুন অথবা ঠোঁটালিঙ্গণে জড়িয়ে পড়ি

আমাদের সমকামী ক্রোমোজোমগুলো কোন এক কালো রঙের সাপের সাথে পলিইথিলিন পালক নিয়ে উড়ে গেছে সৌরাষ্ট্র প্রদেশের দিকে ,

আমি শুধু ক্ষয়জাত নাভিটির নিচে প্রতিদিন বরাহ পুরান পাঠ করে চলি ,  ব্রহ্মের মতো লঘিষ্ঠ দূরত্ব নির্ণয়ের আশায় আমার দেয়াল জুড়ে প্রতিটি রামকৃষ্ণ পুরুষ বসে আছেন উত্তর অভিমুখী যাত্রা করার পর

আমার ধর্মগ্রন্থী পোশাকটির নিচে ১৩ জোড়া ক্রোমোজোম লুকিয়ে রেখেছি প্রতিটি রাত্রিবেলার অশৌচ অস্ত্রাগার ,

আমার গণিতের পৃষ্ঠার কোন এক অপরিচিতা সম্পাদ্য নারী আমার রাতের রেইনকোট পড়ে নিয়েই বিবিধ প্রশ্নমালায় নেমে গেছে দুটো পা কর্দমাক্ত করার পর

আমাদের কোন সপ্তম শ্লোকের ইঙ্গিত ছিল না মুনি ঋষিদের মতো , অভয়ারণ্যে নেমে কতবার দুষ্মন্ত পাথর হয়ে গেলাম , আমার মুখ থেকে পদাতিক সৈনিকেরা ব্রহ্মপুত্রের সাথে প্রতিদিন যুদ্ধে অবতীর্ণ হয় ,  চাঁদ আসলে একটি ক্ষয় অসুখের নাম


ইছামতি রংয়ের সুদেষ্ণা নারী আমার নৌকাটির পাশে বাঁশি বাজিয়ে আমাদের ক্রমশ ও মাধবচক করে তোলে  ,আমরা ক্রমশ মুদ্রারাক্ষস হয়ে উঠছি











(২) যে পুরুষ ধৃতরাষ্ট্রকে সমকামী বলে না


যে পুরুষ মানুষটি চন্দ্রবোড়ার বৃত্তাকার দাগ নিয়ে চন্দন কাঠের উপর ঘুমাতে যায় তার গায়ের পালকগুলো ঠিক চকচকে দূর্গা মেডিকেলের মতো

একটা নরমাল স্যালাইনের ভেতর কতকগুলো বিষধর সাপ হেঁটে হেঁটে পরকীয়া সেরে ফেলে আমরা তাদের বিসর্গ চিহ্নটিকে জানালায় মেলে রাখি , ধৃতরাষ্ট্র সংখ্যা তত্ত্ব জানতেন

তিন দিন হল অশৌচ দাগ মুখে নিয়ে রঞ্জন রশ্মির তৃতীয় দৈর্ঘ্যকে বিষাক্ত কম্পাঙ্ক ভেবে মুখে পুরে নেয় জনহীন প্রান্তরের একগুচ্ছ সাদা উপজাতি মানুষ , 

একটি হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ নারী শুধু রাতের অন্ধকারে তৃতীয় মহাশিরা খুঁজে বেড়ায় আমাদের কপালের ভেতরের নরম ক্ষেত্রফলে  ,


আমরা তখন নরম ফর্সেপ দিয়ে পার্শিয়ান রঙের সেবিকা নারীটির ডিউটি ড্রেসের ভেতর অসংখ্য রামধনু রঙের পোশাকে গুঁজে দেই কান্নার অসহায়তা ,

একটি রক্ত পরীক্ষাগারে ঢুকে যায় জীবিত জীবাণু সংগ্রহের নেশাখোর পুরুষ , যারা মৃত্যুর পর গোলাকার হয়ে ঘুরে বেড়ায় প্রতিটি গাছের লম্ব দৈর্ঘ্যের ভেতর

আমি শুধু সম্প্রদান কারক চিহ্নটিকে পদান্বয়ী অব্যয়ের মতো মথুরা নগরীতে নিয়ে আসি বারবার ,

চৈতন্য রঙের তিলক ঝুলে আছে , আমি ও ঝুলে আছি , আমার অন্ডকোষ ঝুলে আছে , আমার ত্রিশূল ঝুলে আছে ,  আমার সাপের ফনা ও ঝুলে আছে।

অথচ কেউ কাউকে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেয়নি কখনো


নরম ঘোড়ারা ঔষধি বৃক্ষের তলায় এজিথ্রোমাইসিন আয়ু মুখে নিয়ে পারমুটেশন সেতার বাজাচ্ছে পশ্চিম দরজার ভাঙ্গা ছিদ্র মুখে নিয়ে , আজ আকন্দহীন বিছানাটি শীতল মনে হচ্ছে


*********************************************************************************************



নিমাই জানা

 এ সময়ের অন্যতম শক্তিশালী তরুণ কবি । রুইনান সবং পশ্চিম মেদিনীপুর থেকে লিখছেন প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ :  ছায়ার মূলরোম ও  নির্জন পুরুষ অসুখ


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন