নিতাই চন্দ্র মাঝি / দু'টি কবিতা
পরিস্থিতি
রত্নের আকর আছে এই ভারত ভূমে,
গেছে ভুলে অমানুষ দীর্ঘ কাল ঘুমে।
যোগ্যতা পিছনে পড়ে কাঁদে সংগোপনে,
হয়তো বা সারা হবে ধনে প্রাণে মনে।
বিবেকের দুয়ারে দেখি লোহার কপাট,
বিচারের বাণী কাঁদে প্রমাণ যে লোপাট!
অশ্বডিম্ব প্রসব করে দেশের শিক্ষা নীতি,
চোরে চোরে আজ দেখি ভীষণ পিরীতি।
প্রতিবাদ থাকে শুয়ে টাকার পালঙ্কে,
বিষম কঠিন আজ নাগ মশায়ের অঙ্কে।
শিক্ষক জানেনা শিক্ষা তবু চলে শিক্ষা,
সর্বোচ্চ শিক্ষিত আজ পথে করে ভিক্ষা।
মাতালের জমে টাকা মদ ভাটি গেলে,
পুনরায় সেই টাকা যত মহিলার মেলে।
মাঝখানে বাহাদুর যে বাজায় বাঁশুরি,
লজ্জাহীন লোকে কয় ছলনা ও চাতুরী।
বুড়ো বাপ মরে খেটে ছেলে নেয় মোবাইল,
বিনা পড়ে পাশ করে তাও সেটা এম.ফিল.।
শুয়ে শুয়ে খেলে গেম খাদ্যে নাই রুচি,
বাপের দেহ হয় তুলো খায় যখন ধুনুচি।
তুষের আগুনের তৃষিত প্রেম
আজ প্রৌঢ়ত্বের দোর গোড়ায় আমি।
অনেক সম্ভব অসম্ভব কল্পনা নিয়েই-
কাটিয়ে দিয়েছি এতোগুলো বছর।
কোথা দিয়ে যে পড়ন্ত বেলায়-
দেখা হলো মানুষের মেলায়-
বুঝতেই পারিনি।
শুনেছি তুমিও নাকি তেমনই আছো।
হয়তো হবে নয়তো নয়, তবে এখনো আমি
তোমাকে পারিনি ভুলতে।
ভুলতে পারিনি তোমার দীঘল বেণীর গমনাগমন,
ভুলতে পারিনি সেই আশির দশকের লাল ফিতে বাঁধা খোঁপা।
কী থেকে যে কী হলো, দুটো পৃথিবী আলাদা হয়ে গেল।
সেদিনের সেই কদম্ব গাছটি আজো বর্ষায় ফুল ফোটাতে ভোলে না,
ভোলে না নদীর কিনারে থাকা উপলখণ্ডে বারিধারা ঝরে ঝরে পড়তে।
কেবল আমি অথবা তুমি গেছি ভুলে জীবনের মানে।
ডুমুর গাছ আঘাত পেয়ে এখনো ঝরায় অশ্রূ,
এখনো পাখির আধহজম খাবারের মতো উপাদেয় পাইনি কিছু।
অনেক দিন হলো, একবার প্রাণ ভরে দেখতে চাই তোমাকে।
আরো চাই পাগলের মতো ভালোবাসতে।
হয়তো এতদিন পরে এমন অবান্তর বায়না,
তোমার মনে নাড়া নাও পারে দিতে।
কিন্তু তাই বলে তো ভালোবাসা ব্যর্থ হোক চাইবে না তুমি।
আবারো সেই উপলখণ্ডের জলরাশির সশব্দ
পতনের সঙ্গে মিলেমিশে একাকার হলে ক্ষতি কি?
**********************************************************************************************



কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন