অমিত চক্রবর্তী / দু'টি কবিতা
সর্বনাশের মলাটছবি
গাছের ছায়া পড়েছে চোখে, অথবা মেঘের টুকরো এসে
আশ্রয় নিয়েছে ভেজা, এ হল সর্বনাশের মলাটছবি। মেঘ
এখানে
লুকিয়ে হাত বেড়ায়, গাছের ফাঁকে, সুড়ঙ্গে হাত,
কখনও আরো গভীরে, পাতার নেটওয়ার্কে ভিক্ষা–
এ মেয়েটির কিন্তু গৃহ অথবা সমুদ্র নেই।
অগোছালো পায়ে হাঁটে সে, বিশৃঙ্খলা শরীরে,
হয়তো মনমরা অবসাদ, হয়তো দরাদরি
এসে ছেঁকে ধরে তাকে,
মধ্যস্থতার ভিড়ে মাঝে মাঝে চমকানো সুগারহাই
মাঝে মাঝে ফেলে আসা একটুকরো
ক্যান্ডি–প্রেমের ভগ্নাংশ।
এখন তো আর সে বাড়িও নেই যে বাবুল বেরিয়ে আসবে –
লম্বা দালান বেয়ে নামবে, আর গালে হাত ঘষে বলবে,
এত মেঘ চোখে, আজ কি বৃষ্টি হবে ভূমিকা,
না গান?
আনমনা
প্রতিটি জন্মদিনের ছায়ায় আমি ঘরবাঁধার গান শুনেছি
গতকাল –
একটু হেলেপড়া বৃক্ষ, নগ্ন রুক্ষ শরীর, তার ছায়াতে পুরোনো
গান,
শ্রুতি, ঘোরাফেরা করে, সম্মোহনে জড়ায়।
বেদনা তো আর কিছুই নয়, একটা অসতর্ক মুহূর্ত,
বলের লাইনে যখন মাথা নেই, আড়ব্যাটে ফসকে যায়
সাজানো বাগান, এসো আমরা জপ করি এখন, এটাই ভাল ফল,
এটাই ধ্যান, এমনটিই হওয়ার কথা ছিল
এই চিনির রসে চুবানো কষা, আড়ষ্ট মনটার।
তার চেয়ে বরং আমি আনমনা হব।
কারণ আমি শিখেছি ইদানীং, এই মুখঢাকা বিকেলে,
এই গ্রামশহরের
পাশ কাটানো দেমাক বা উদাসীন ঝঙ্কারে ঝালায়
আমি শিখেছি যে এ উৎসবে আর যাই হোক
মিথ্যে মানাবে না।
******************************************************************************************
অমিত চক্রবর্তীর জন্ম সোনারপুর অঞ্চলের কোদালিয়া গ্রামে। ছাত্রাবস্থায় অনেক লেখা এবং ছাপানো কলকাতার নানান পত্রপত্রিকায়। পড়াশোনার সূত্রে আমেরিকা আসা ১৯৮২। এখন ক্যানসাস স্টেট ইউনিভারসিটি তে পদার্থবিদ্যার অধ্যাপক ও প্রাক্তন কলেজ অফ আর্টস অ্যান্ড সায়েন্সের ডিন । প্রকাশিত কবিতার বই দুটি - "অতসীর সংদারে এক সন্ধ্যাবেলা" (রা প্রকাশন ২০২১) ও "জলকে ছুঁয়ো না এখানে" (মিসিসিপির মেঘ প্রকাশন ২০২২)। দুটি পত্রিকার সহ সম্পাদক - উত্তর আমেরিকার নিউ জার্সি অঞ্চলের পত্রিকা "অভিব্যক্তি" এবং "উজ্জ্বল এক ঝাঁক পায়রা" কবিতা পত্রিকা।




কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন