খুকু ভূঞ্যা / দু'টি কবিতা
ভুঁইলতার আত্মকথা
সময় আমার কাছে বসে থাকো
যেমন জ্বর এলে মা বসে থাকে সারারাত
দুচোখের পাতা এক না করে নিঝুম চুপচাপ
ঘন ঘন পাল্টে দেয় জলপট্টি
অসুখ থেকে মানুষ কোনদিকে যায়--
মধ্য গগনের সূর্য যতই মনে করিয়ে দিক
অসুস্থ রাতের ঘুম ভাঙে না
জরাজীর্ণ এক ছায়া বুকের মধ্যে চেপে মনে করা যায় কি
সকাল মায়ের আঁচলের চাবির গোছা
পুরোনো স্মৃতিতে পুঁতে ফেললে জন্ম ক্ষত
আমি লক্ষ্মীছাড়া হয়ে যাব চিরদিন
স্মৃতি আমার ভাত, স্মৃতি আমার ঘর উঠোন স্বপ্ন তপোবন
তুমি স্মৃতির কাছে বসে থাকো সময়
শিশুর মতন লালন পালন করো
স্নেহ প্রেমে ভরিয়ে দাও
পূর্বমুখী হয়ে আর একবার বেড়ে ওঠতে দাও
ভুঁইলতার কাঁপন-
হাওয়ায় উড়ছে গুঁড়ো গুঁড়ো স্বপ্নের শব
সিঁদুর পরে দাঁড়িয়ে আছে ভাষা জননী
গায়ে তার আম কাঁঠালের ঘ্রাণ
সবুজ মমতা পাতা ঘাস আঁচলে,
শিখা নরম হলে আগুন নত হয় আলোর কাছে তেমনি
ভাষা পুষ্ট হয় উর্বর মাটি পেলে, স্বকীয়তা আত্মগৌরব কিংবা নিজস্বতা
তুমি আমি সাহেব মেম ,হাই হ্যালো দিয়ে শুরু হয় সকাল
কি হবে দেখে সূর্যোদয়,
দিগন্তে উড়ে যাওয়া পাখির গান ছুঁতে, বুকে তুলে নেওয়া একতারা
কবে চলে গেছে আলতা রাঙা পায়ে ঘোমটা বধূমা
শ্মশান ছিঁড়ে এনো না দুগ্ধগন্ধে লেখা ঘুমপাড়ানি সুর
নিছক ভাষা দিবস
মনে প্রাণে মাটি হও, নিজের ভেতর ফুলের চাষ হোক তুমুল
সবুজের মায়া ছুঁতে অরণ্য হয়ে যাও
দীপ জ্বলুক, ধূপ পুড়ুক
যার আত্মদহন যত বেশি সে তত খাঁটি
পোড়াও নিজের ভেতর পৃথিবীর জঞ্জাল
ভাষা একটি বৃক্ষ
সবুজ পাতা, বোধ জ্ঞান চেতনা
দেখো সে নুইয়ে পড়ছে ভয়ঙ্কর খাদের দিকে
একুশের মিছিল জোট বাঁধো,এক হও
ভাষা নয়,দু'শো ছ'টি হাড়ের একটা একটা ক্ষয়ে যাচ্ছে প্রতিদিন
হাওয়ায় উড়ছে, গুঁড়ো গুঁড়ো স্বপ্নের শব
ক্রমশ বেড়ে যাচ্ছে চশমার পাওয়ার--
************************************************************************************************
জন্ম: ১৯৮৪ সাল ২২শে অক্টোবর । পঃ মেদিনীপুর জেলার পিংলা থানার অন্তর্গত জলচক সংলগ্ন জঁহাট গ্ৰামে। মা: শ্রীমতী রাধারানী মাইতি । বাবা: শ্রী রবীন্দ্রনাথ মাইতি। শিক্ষা: মাধ্যমিক । পেশা: গৃহবধূ।



কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন