প্রাণজি বসাক / দুটি কবিতা
জীবনের কাচঘর
অক্ষয় অমর কেউ নয় একথা মানুষ জানে বোঝে
প্রতিটি প্রাণী একদা একদিন চলে যায় অলীক পথে
পকেটে পকেটে ভরাট থাকে অদ্ভুত সঞ্চয় গভীরে
প্রজন্মের কাছে দাঁড়াবার অমোঘ বাঞ্ছা লাটাইয়ের
সুতোয় বাঁধা - বিকেলের আকাশে ঘুড়ি যত ওড়ে
মনটাকে কতবার বেঁধে রাখবে ধরে রাখবে আঙুলে
হারাবার কিছুই থাকে না শুধু পড়ে থাকে অবিশ্বাস
জানাজানি হয়েই যায় ভাঙচুর অগ্নিসংযোগ ঘটলে
পোড়া পোড়া ছাইভষ্ম ভেসে আসে বোধের জাগরণে
তবে কি মানুষের প্রিয় শরীর ভঙ্গুর জীবনের কাচঘর
দাগ মরে না
জীবনভর কতরকম বাজারি দাগ নিয়ে ভাবতে হলো
প্রকৃতির কাছে নতজানু ক্ষমাপ্রার্থী দাগের ব্যাভিচার
অবিভাজ্য প্রত্যয়ে কোনোরকম ঘোষণা ছাড়াই দাগা
ক্যানভাসে আঁকা হয় কত না ছবি দাগ আড়াআড়ি
পাতার পর পাতা রেখে সবুজ গাছকে উপযুক্ত ভাবি
নৈঃশব্দ্যের শব্দ যথাযোগ্য চেতনায় স্বচ্ছ দাগে তুলি
হৃদকম্প ক্রমশ বাড়ে সংশয় বাড়ে আধেক আলোয়
পৃথিবী ভাবে চাঁদের শরীরের দাগ অহংকারের দাগ
খোলামেলা হাঁটাহাঁটি করে মানুষ অলিগলি রাজপথ
কেউ কয় হৃদয়ের দগদগে দাগ কেন যে মরে না হৃদে
***********************************************************************************************
পেশায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রশাসক ও নেশায় কবি। হিন্দি বলয়ে বাংলা ভাষার কবি। কবিতাই একমাত্র জীবনের ওষধি, একথায় বিশ্বাসী। স্কুল ও কলেজ জীবন কেটেছে উত্তরবঙ্গের তুফানগঞ্জ তথা কোচবিহার শহরে। চাকরিসূত্রে রাজধানী দিল্লিবাসী প্রায় ৪৩ বছর। আইআইটি দিল্লির ক্যাম্পাসে এবং আশেপাশে কাটালেন দীর্ঘ জীবন। কবিতা আড্ডা জমে ওঠে এখান থেকেই।
খোলবাদক পিতা ছিলেন তার কবিতার প্রেরণা। মূলত লিটম্যাগের কবি। কবিতা ছোটোগল্প অণুগল্পে তিনি স্বতঃস্ফূর্ত। দেশবিদেশে বহুবার সম্মানিত। বাংলা কবিতা নিয়ে বহুবার বাংলাদেশ এবং দুবার ইউরোপ ভ্রমণ করেছেন।
রূপসী বাংলা পুরস্কার, বনানী পুরস্কার , ভারত- বাংলাদেশ সাহিত্য সংহতি পুরস্কার, শৃন্বন্তু সারস্বত সম্মান, উত্তর বাংলা পুরস্কার,তিনবাংলা সম্মাননা উল্লেখযোগ্য। বিভিন্ন সময়ে তিনটি পত্রিকা এবং দুটি কাব্যসংকলন সম্পাদনা করেছেন। তাঁর রচিত কাব্যগ্রন্থের সংখ্যা ২২ টি।






কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন