পাকা খেলোয়াড়
প্রদীপ দে
তিন্তিলী অতোটা বোকা নয়, সরল যতোটা ভাবে। সরলের চালাকি ধরে ফেলেও মজা নিচ্ছে তিন্তিলী। সরল একটা মধুর প্রতিশোধের খেলায় মেতে উঠেছে। পিসে হয়ে হয়তো দায়িত্ব নিচ্ছে। ঠিক বেছে নিয়েছে প্রখরকে। সরল কি করে জানলে তিন্তিলীর মনের কথা? প্রখরের চোখে কি তিলীর চোখ দেখে ফেলেছে? নাকি যারা প্রেম করে তাদের এই অভিজ্ঞতা জন্মে যায়? তাই হয়তো কারসাজি করছে, এমনও হতে পারে নিজে ভুগছি তুইও ভোগ, আমি একা কেন ভুগবো? প্রেমরোগ যে ছোঁয়াছে! এ রোগ একজন আরেকজনকে শুধু দেখলেই সেও আক্রান্ত হয়।
তিন্তিলী পাকা খেলোয়াড়,
-- দেখছি। দেখছি প্রকৃতি আমাকে দেখছে।
সরল আরো এককাটি বেশী,
-- চলো না একটু বেড়িয়ে আসি।
তিন্তিলী লাজহীনা,
-- তিনজনে যাত্রা অশুভ।
সরল লাফিয়ে ওঠে,
-- উরিঃ বাপ!
প্রখর এগিয়ে এসেছে একবারে তিন্তিলীর সামনে, চোখে ইশারায় কথা,
-- আমি তো লোভেই এসেছি এইটা জেনে, তুমি নাকি কুসংস্কারের বিপক্ষে, তাহলে এটা কেমন হল?
তিন্তিলীর চোখ বড় বড়।
প্রখর বুঝিবা ভয় পেয়ে যাবে, ভুল শুধরায়,
-- সরি! মানে আপনি?
সরল ছাড়ার পাত্র নয়,
-- ফারাক কি?
প্রখর মুখ ঘুরিয়ে নেয়। তিন্তিলী হেসে ফেলে। সরলের পাক্কা হিসাব, তিন্তিলী ফেঁসেছে নিশ্চিত।
হেসেছে মানেই ফেঁসেছে। সরল আস্তে করে সরে পড়ে।
প্রখর আর তিন্তিলী মুখোমুখি। প্রখরের বুক কি কাঁপছে? গলা হতে তাহলে আওয়াজ বের হচ্ছে না কেন? তিন্তিলী বুঝি কিছু শুনতে চাইছে। অপেক্ষার সময় যে বড় কষ্টের !
প্রখর তাও কিছু বলতে পারে না,হাত নাড়িয়ে তার সাথে যাওয়ার আকুতি জানায়।
তিন্তিলী ডাগর চোখের চাওনিতে কিছু শোনার তাগিদ।
প্রখর নাজেহাল। উপয়ান্তর না পেয়ে,
-- যাওয়া যেতে পারে?
তিন্তিলী যাবেনা। তবু দাঁড়িয়ে।
প্রখর আর পারে না, সাহসী হওয়ার চেষ্টা করে, আস্তে করে বলে,
-- চলো যাবে, আমার .....
তিন্তিলী লজ্জিত। ঘুরে দাঁড়ায়। প্রখর ভয় পায়। তাহলে কি?
এক মিনিটও কাটলো না, তিন্তিলী প্রখরের দিকে ঘুরে দাঁড়িয়েই আচমকা ওর হাতটা ধরে ফেললো, আবার ততোধিক আচমকাই হাতটা ছাড়িয়ে নিল।
প্রখর কিন্তু আর সু্যোগ হারাতে রাজী নয়, তিন্তিলীর হাতটা ধরে সোজা নিজের দিকে টান মারলো। তিন্তিলী সহজেই ধরাশায়ী হল প্রখরের চওড়া বুকে।
***********************************************************************************************************



কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন