মনোজ বাগ / দুটি কবিতা
তীক্ষ্ণ শর
তীক্ষ্ণ শর , বিদ্যুৎ বেগে ধেয়ে আসছে
লক্ষ্যে বিঁধে যাবে বলে ।
আমি তার চাঁদমারি !
আমি তার স্থির লক্ষ্য বস্তু !
আমিই তার মাছের চোখ !
যতটা সম্ভব ধীর স্থির হয়ে বসে আছি --
শরবিদ্ধ হবার আনন্দ বুঝে নেব বলে ;
শরবিদ্ধ হওয়ার যন্ত্রনা একান্তে পরখ করে নেব বলে ;
জীবন পণ করে সেজে ওঠা একটি একটি শরের
সব আনন্দ সুখ দুঃখ আকণ্ঠ পান করে ,
তাতে ওতোপ্রোত হবো বলে ।
শত-সহস্র চোখের দৃষ্টি তাই ঝরে পড়ছে আমারও উপরে !
এতটা দৃষ্টির সম্মুখে থাকতে থাকতেও তবুও
আমি ভুলতে পারছি না কেন ,
আমার সহজাত সব প্রবৃত্তিগুলিকে ?
আসলে আমারও যে আছে মাছের চোখ ।
আমারও যে আছে স্থির লক্ষ্য বস্তু ।
তাই দূরাগত কোন পিনাকের ধ্বনি যখনি শুনি ,
ছুঁয়ে দেখি নিজেরি তূণীর ।
অন্তরাত্মিকতা
কতটা স্মৃতি ধারন করতে পারে , মন !
বিস্মৃতির অতলে চিরতরে তলিয়ে যাবার আগেও
কতটা বাস্তবতার সাক্ষী থাকতে পারে , এই মন !
এই মনই এই জীবন বৃক্ষের বীজ ,
বীজের উজ্জীবন , তার শাখা-প্রশাখা-কাণ্ড-ফুল-ফল যা কিছু সব ।
আমাদের রোজকার চর্চিত যত যোগ ও বিয়োগ ,
আমাদের প্রতিটি উদ্ভব ও পরাভব ,
চৈতন্যের পরা ও অপরা সব প্রকৃতি ও তার প্রকরণ ,
এই মনেরই অবাধ প্রাণবন্ততার স্মৃতি ও তার উৎসারণ ।
আবিশ্ব চরাচর জুড়ে দেখি এই এক মনোভূমি ।
দেখি এরই একাত্মতা ভিতরে বাহিরে ,
আপাত আবেগে , পরমাবেশে ।
খুব ধ্যান দিয়ে রোজ অনুধাবন করি
এই মনেরই বিজ্ঞান ।
আবিশ্ব চরাচর জুড়ে পরমাত্মিকতার মহাভাব অনুধাবন
করতে চেষ্টা করি , এই মনেরই সাধনে ।
দেখি এক মহাজাগতিক বাস্তবতা এই মন-দর্পনে ।
ঈশ্বরের জগৎ-রূপ তন্নিষ্ঠ হয়ে দেখি ।
আধ্যাত্মিকতা , তন্নিষ্ঠ মনে পরমাত্ম-সত্যের এই মহাজাগতিক-রূপ
নিরন্তর অনুধাবন করার অভ্যাস ।
প্রতিটি মুহূর্তই ঈশ্বর দেখার , ঈশ্বর-সত্য অনুভব করার
অভ্যাস করি এই একনিষ্ঠ মনে ।
*********************************************************************************************
পেশায় ব্যবসাজীবী । কবিতা বেঁচে থাকার রসদ ; অনিবার্য এক ইন্ধনও । প্রিয় কবিতার গ্রন্থ : গীতা , ঈশোপনিষদ , গীতবিতান , আমিই মাটি , আমিই আকাশ (সুজিত সরকার) । কবিতা প্রিয় বিষয় হলেও সাহিত্যের প্রতিটি শাখাই টানে । সঙ্গীত ও চিত্রকলার প্রতিও প্রবল আকর্ষণ আছে । ভালো লাগে ভাবতে : আপাত যা কিছু -- এই সবই এক পরম সত্যেরই প্রকাশ ।




কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন