' হৈমন্তীক কাশে দ্যাখো / আগমনীর সুর.../ আমারও ছিল অনেক যজ্ঞদুপুর, / ভাবনার জলনূপুর ' কবি প্রদীপ ঘোষ অনায়াসে তাঁর ' ভাবনার জলনূপুর ' পাঠকের মনে , চেতনাপ্রবাহে সঞ্চারিত করে দিতে পারেন । সাবলীল ছন্দে , পরিশীলিত শব্দবিন্যাসে তিনি আমাদের মুগ্ধ করেন । পড়ছি ---
কবি প্রদীপ ঘোষ-এর দুটি কবিতা
শুঁড়িখানা
সময় তো থমকে থাকে না
সরে সরে যায়, দিনের উর্ণা
আর মাসের কুরুশ কাঁটায়
বোনা কত না উর্বী, বস্তসেনা
জানো একটা দুটো ইচ্ছা ছিল
ওই একটু আধটু ইশশশ্ ...
কত বসন্তে উজান বাওয়া
আষাঢ় শ্রাবণের নিশপিশ
হৈমন্তীক কাশে দ্যাখো
আগমনীর সুর...
আমারও ছিল অনেক যজ্ঞদুপুর,
ভাবনার জলনূপুর
উড়োখই জীবনে নদীর বুকে
পেঁজাতুলো মেঘের জলছাপ
ঈশ্বর হে, জানি জানি কি ধার্য
রেখেছ! কিই-বা পরিমাপ
অভিমানে যখন দখিনের মাঠ
এ মাহ ভাদরে বৃষ্টি ভেজা!
বাঁদিকের বুকে রক্তক্ষরণ
তখনও যে ভীষণ তাজা
নিঃসঙ্গ গাছের পাশে সলাজ
কুলকুল বয়ে চলা একলা নদী
বোকা ভীষণতো, আমি ভাবি
বেশ হয় ওরা বন্ধু হয় যদি !
বন্ধুতার উদযাপনে নিশুত
রাতে জোনাক থাক সাথে
চল মদিরায় মাতাল হই,
আমরাও চণ্ডাল ঘাটে আঘাটে
হাঁড়িকাঠ তো ডাকবেই আয় আয়,
এসো ঈশ্বরের শুঁড়িখানায় যাই
জেনো ব্যর্থ জীবনে ভক্তের
কোনো নবী ভগবান নাই....
ক্রঁদিত ক্রন্দসী যখন
এই যে আধা অধুরা অনিত্য চিত্রকল্প পড়ে রইলো
বালিয়াড়িতে ; ইতস্তত ঝিনুকের খোল ছড়িয়ে ছিটিয়ে !
সারি সারি নারকেল গাছ, ঝাউপাতার সংসার ফেলে
রেখে, সমুদ্র কত কত ফার্লং দূরে সরে গেলো বেমক্কা...
জন্ম তারিখ মনে পড়লেই মনে হয়, সহসা মিছিমিছি
সরে গেল কতই না অহেতুকী ঋতুমতী কালপর্ব।
কি বলবে ?
আতান্তরে অভিমান হয় না বুঝি ?
যদি দেখো চড়ায় নৌকো উল্টো পড়ে, কত আর গুনবে
বলো চরাচরে নুড়ি পাথরের হায় হায় ! কি মনে হয়
তোমার, দিন প্রতিদিন এ কি
বৃন্দগীতির আত্মহনন ?
জলচল রাখার চেষ্টা করেনি বুঝি ধীবর !
জিজ্ঞেস করবে কি, পেতেছিল সাগরে বাসর ?
আসলে তুমি ঠিক বুঝবেনা জানো !
বির্পযয় নাহলে জানতেও পারতে না তিন শতাব্দী অধিক
রসিকা তিলোত্তমা নাগরীর বাঁদিকের স্তনের অল্পস্বল্প
নিচেই জীবন্ত 'বৌরানি খাঁড়ি'র (বউবাজার) দাফন...
বলো কি বলবে নাগর ?
.....শরৎ জানে, শীত আর দূরে নয়, পাতা খসানোর
সময় শুরু হবে। বেলাশেষে ছাতিমগন্ধী
মৃগমদের গন্ধে প্রমত্ত বাতাস উন্মন।


কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন