' শিরায় উপশিরায় অকারণ দানা বাঁধুক গভীর নুলিয়ারা। কৌশিকী অমাবস্যায় নক্ষত্রচারী হোক মন। ' কবি কৌশিক সেন এমন জীবনের অভিলাষী , কেননা যে জীবনে ' কবিতার মতো দুরারোগ্য ব্যাধি নেই ...' সে জীবনের প্রতি ঘৃণা পোষণ করেন কবি । পড়ে নেওয়া যাক -----
কবি কৌশিক সেন-এর দুটি কবিতা
মায়াজন্ম
এক একটি জন্ম সমূলে উৎপাটিত করবার পর আমার ক্রোধ প্রশমিত হয়।
যেসকল জন্মে পরকীয়া নেই, মহামারী নেই, বাঁধভাঙা শোক নেই, কবিতার মতো
দুরারোগ্য ব্যাধি নেই... না, না, সে জীবন আমার ভাবতে ঘৃণাবোধ হয়। যদি
একটি জীবনেও কালিয়নাগের মাথায় চড়ে নাচতে না পারি, লালায় সিক্ত করতে
না পারি, মন্থনের হলাহল, তবে কি লাভ অমন ক্লেদাক্ত জন্মের! কি লাভ,
বেজন্মা উঞ্ঝবৃত্তির!
সেসব জন্মে রোজ ঘুমের বড়ি খেতে হয় অনমনীয় স্বপ্ন দেখবো বলে,
সেডেটিভ চুষতে চুষতে ঝাঁপ দিতে হয় হোমের আগুনে, প্রেমের অঙ্গুরীয়তে
ভরে রাখতে হয় নীলাভ হেমলক! আমি সেইসব জন্ম পাড় হতে চাই
আলোর গতিতে!
পাহাড়ি ময়ালের সবুজ আলাপনে বরং ভরে উঠুক সেইসব মায়াজন্ম।
শিরায় উপশিরায় অকারণ দানা বাঁধুক গভীর নুলিয়ারা। কৌষিকী অমাবস্যায়
নক্ষত্রচারী হোক মন। নিরস্ত্র নেমে যায় গ্ল্যাডিয়েটারের খেলায়!
আহা, বড় সুখ সেই মায়াজন্মে!
স্নায়বিক
নিউরনের গভীরে এই কারুকার্য যেদিন চেয়েছিলাম,
সেদিন অবিন্যস্ত রোদ উঠেছিল শুকনো পাতার আঙিনায়।
পাতার ছায়ায় মেলে ধরতে চেয়েছিলাম উপশিরার আদলে
নদী, নাকি নদীর আদলে তীব্র উপশিরাই!
যেসব সুখানুভূতি বড়ই স্পর্শকাতর, সকলই মিয়োসিসে
বিভাজিত। কানাভাঙা চাঁদ জানে এইসব। একান্তে বলে গেছে,
ঠিক কোন পরিস্থিতিতে রক্তক্ষরণ হয় মস্তিষ্কে! ঠিক কোন
মাহেন্দ্রক্ষণে ধ্রুবতারা ডাক পাঠায়!
পুজো শেষ। আসন খালি করে উথে গেছেন দ্বিজশ্রেষ্ঠ।
তন্ত্রীতে এখনও বেজে চলেছে ব্রহ্মসঙ্গীত। শাখায়, প্রশাখায়
বিরল পাখির কূজন। স্নায়ুতে স্থিরতা নেই তবু! কৃষ্ণা চতুর্দশীর
আকাশে এই সুদীর্ঘ ক্ষোভ লিখে রেখে যাই।
প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ - রাই জাগো গো...


কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন