মঙ্গলবার, ৫ অক্টোবর, ২০২১

কানাইলাল জানা



ব্যথার ভেতর অপ্রকাশিত থাকে সৃষ্টির বীজ। কবির অন্তর্ভেদী দৃষ্টি তাকে খুঁজে আনে। ডালে ডালে ফুটে ওঠে সৃষ্টির ফল-ফুল। ব্যথার ভেতর দিয়ে বৃক্ষ উঠে এলে তার/ ডালপালা থেকে ঝরে বৃষ্টির ফোঁটার মতো আশা-আকাঙ্ক্ষা, গুড়িতে বসে বসন্তবৌরিও ভাবে ' একটা সংসার কি পাতা যায় না এখানে?' এমনই অনুভব ফুটে ওঠে কবি কানাইলাল জানার কবিতায়।



কবি কানাইলাল জানা-র দুটি কবিতা  


ব্যথার ভেভর



ব্যথার ভেতর দিয়ে যখন একটি ধানখেত উঠে আসে 

অনেক বেশি হয় সে আবেগঘন,

মিছরির দানার মতো চেয়ে থাকে তার 

আধপাকা ধান।

ব্যথার ভেতর দিয়ে বৃক্ষ উঠে এলে তার 

ডালপালা থেকে ঝরে বৃষ্টি ফোঁটার মতো 

আশা আকাঙ্খা, গুঁড়িতে বসে বসন্তবৌরিও 

ভাবে 'একটা সংসার কি পাতা যায় না এখানে?' 


ব্যথার ভেতর দিয়ে যখন একটি দিঘি 

আত্মপ্রকাশ করে তলার গেঁড়ি শামুকও পায় 

পর্যাপ্ত আলো। ঘরে ফিরতেই চায় না হাঁসের 

দল এমন মোহ মাখানো তার জল! ডুবতেই 

চায় না রুই কাতলা এমনই চাঁদের হাঁকডাক..


ব্যথার ভেতর দিয়ে যখন মানুষ বড় হয় তার 

থাকে একটি তৃতীয় নয়ন যা দিয়ে একজন 

বিষম মানুষকেও সে দ্যাখে কৃপাসিন্ধু, শক্ত 

আঘাতকে পায় মাখন নরম এবং কঠিনতম 

সময়কে নেয় সুস্বাদু বাদাম বরফি...



সময়ের সনেট 


কোন্ দিকে যাই কোন্ দিকে আছে ভালো

অস্থির সময় জানে আছে কোন্ আলো

সমস্ত জলের স্রোতে বয়ে যায় কথা

আমার আমিকে নিয়ে নেই মাথাব্যথা 

সুখ যায় অস্তাচলে বিনির্মানে থাকি

কোবিডের ঘেরাটোপে নিজস্বতা রাখি

হাতের তালুতে ক্ষয় জীবনের ভয়

প্রতিবাদ আছে কিন্তু সমাধান নয়

সময় ফুরোয় যত প্রয়োজন তার

প্রত্যেকেই একা একা মৃত্যু -পারাবার

আসছে শীতের দিন হয়তো রঙিন

বসন্তে আনন্দ চাই থাকবে না ঋণ

কোথায় দাঁড়াই বলো সীমানার শেষ 

হিমের প্রথম স্পর্শে থাকে যেন রেশ...






কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন