ভাবনার গভীরতা, শব্দ প্রয়োগের জাদু কুশলতা কবি অমিত চক্রবর্তীর কবিতাকে বিশিষ্টতা দেয়। ' তোমাকে রোজ কবিতা পাঠাব--' কিন্তু কী রকম সে কবিতা? ' মেশিন সঙ্গীত ' অর্থাৎ গতানুগতিক ছাঁচে ফেলা কবিতা সে নয়। কবির এই আত্মনিমগ্নতা কবিতা পাঠককে মুগ্ধ করে। পড়ছি ----
কবি অমিত চক্রবর্তী-র দুটি কবিতা
রোঁয়াওঠা কোমল জাদু ভেলভেট
নিজের মন শত্রু হয়ে গিয়েছিল রমণীর,
শরীরও শত্রু, তাই হৃদয়ের হাড়ভেঙে, খোলস ছিঁড়ে
এক তির্যক পরিকল্পনা আসে। দু ধরণের জিনিসে
আকর্ষণ তার, সংশয় অথবা রঙ্গিলা পাখি,
হারিয়ে যাওয়া সব নিয়ে, আর তারপর যে প্রকান্ড চালচিত্রে
মেশে এই সংরাগ, সে সমুদ্র অথৈ, মসৃণ বেগুণী।
তোমাকে রোজ কবিতা পাঠাব – হটাৎ, নতুন একটা,
কখনো পুরোনো, যদিও অনুক্রমে বা প্যাটার্নে
আমি থতমত খাই, এদিক সেদিক ঘুরি, একেবারে দক্ষ নই
মেশিন সঙ্গীতে। পুরোপুরি নিঃস্ব এ কবিতা,
হাঁটুমুড়ে লেখা,
তবু চলে যেও না – তার শব্দসুতোর চাহনি
এখন অস্পষ্ট, সঙ্কেতে তন্তুবিশেষ নার্ভ,
আঁকড়ে ধোরো সেই বেদনার কাছি,
রোঁয়াওঠা, কোমল এক জাদু ভেলভেট শাল।
ব্রাক্ষ্মক্ষণ
অ্যালার্ম বাজা আর ঘড়িটা সজোরে থাবড়ানো – এর মধ্যের
ন্যানোসময়টুকূ আমার। এই ব্রাক্ষ্মমুহূর্তে আমি অধিকার শূন্য,
সম্পূর্ণ নিঃস্ব, ভাঙা হালখাতা । এখন শান্ত সে, আওয়াজ নেই কোনো,
তোলপাড় নেই,
আজ কী কী কাজ, সুরমার টেক্সট, উত্তরে হাত কেঁপে যায়,
কালের অশান্ত ধ্বনি, আমি ছাড়া কী
কেউ উপলব্ধি করেনি, ব্যথা পায়নি তীব্র –
বধ্যভূমে আমি একবার অনুভব করেছিলাম
কী একটা কথায়, ‘এই শোনো না’ বলাতে
হেসে উঠেছিল যুদ্ধনায়িকা। জেতার মঞ্চ তার জীবনের ধূম,
রণক্ষেত্র,
এ দিকে আমার ছিল না কোনো রসদ অথবা সম্মোহন।
হে সময়ের দেবতা, ঘড়ির বেনামী মালিক, আর একটু
পরিমিতি, লম্বা ব্রাক্ষ্মক্ষণ? একদিন?
অমিত চক্রবর্তী-র কবিতার বই
অতসীর সংসারে এক সন্ধ্যাবেলা


অনাবিল আনন্দ পেলাম।
উত্তরমুছুন