বিচিত্র শব্দের প্রয়োগে ,ভাবনার গভীরতায় কবি অভিষেক মুখোপাধ্যায় এক স্বতন্ত্র কাব্যভুবন তৈরী করতে জানেন । কোথাও কোথাও অর্থান্বেষণ দুরূহ হলেও ,শেষ পর্যন্ত এক ভিন্ন স্বাদের কবিতাবোধ পাঠক পেয়ে যান । পড়ে নেওয়া যাক ----
কবি অভিষেক মুখোপাধ্যায়-এর দুটি কবিতা
শব দেখা আলো
ম্যাকাব্রা দ্রিদিম নাচে,
মৃত্যুসাজ সরলরেখায় কেন নাচে
ঘোড়া গিলে খায় পাগলা ঘোড়া!
দুকূল ছাপিয়ে দেবী আলো করে
পুরুষের শবের প্রহরা
চারিসূর্য কাঁকনে চমকায়।
হাড়গোড় ছড়ায় ছেটায়-
হে বিশাখভট্টারিকা
শেষ করো ঝালাপালা খরানিখাওন
এই চৈত্রবেলা; সুর ভজে চরাচর, ভজে
কুবিরের উপগান
চক্রবাক পাক মারে স্রোত- আদিম শূন্যের মাচান
বেদী ফেটে প্রকাশিল গুমর মুগুর
অবলোকিতেশ জাগো।
হাঁইয়ো বাখানি জারি নীল হরকাবানে
হ্রস্ব নাইফল
যে পথ সূচনা কোরে পুঁতে দেয় মুথাঘাস
রসনা বুলিয়ে দেয়, লোলুপ রোগাটে ভোগাপেট
সে পথে বাঘছাল, আর ক্লিভেজে গবেট
জড়ায় তিলকব্রহ্ম মাথা।
প্রসন্ন হ্লাদন লেখে ছায়াবিরুদ্ধতা।
তুমি কার মাঝি পারাপার?
গলুই টানিয়ে কাকে আড়াইঘর বিক্ষোভে ঠেলেছ?
দাহ শেষ হলে
যেই জ্যৈষ্ঠ চোখে পড়ল, নীল রৌদ্ররেখা-
নোনা জল ধীরে নামল, তুমি দেখলে চন্দ্রের বাঁদিক
প্রায় সাদা- বিন্দু বিন্দু সিগারেট চাহিদা
ওই উঁচু নালীমুখে, উদ্গীরণে কাক হাসে, জলকণা হাসে।
সারাটা সকাল তুমি ঘুমিয়ে কাটাতে, স্বপ্নক্রমে
পাঁজা ইট স্পর্শ করতে,
তোমাকে ধারণ করতো মালভূমির মতো যমকড়াই
সমস্ত শয়নক্ষত- শুকিয়ে যাওয়া রস
ফুটত টগবগ করে, দূরে ক্ষুর চালাবার সংগীতে
হুটার সঙ্গত দেয় তা ধেই তা থৈ শেষ পঞ্চাশ মিনিট
তুমি ভুজ্যিভাণ্ড থেকে বলছ আর পারছিনা, উত্তাপে
গলে যাচ্ছে কানের পাটা, নরম বুকের পেশি গলে যাচ্ছে
পীতমজ্জা শুষ্ক হয়ে এল...
হাঁ মূর্তি গঙ্গাঘট ফাটালো সন্ততি
আর জ্যৈষ্ঠ চোখে পড়ল লাল রৌদ্ররেখা
নোনা জল জিভে নামল, তুমি নগ্ন চন্দ্রের বাঁদিকে
মা'য়ের পা ধরে কাঁদছ...
'সিলিং ফ্যান চালিয়ে দাও না!'
সারাটা সকাল তুমি ঘুমিয়ে কাটাতে, স্বপ্নক্রমে
অভিষেক মুখোপাধ্যায়-এর প্রকাশিত গ্রন্থ-
তাম্বাকু সিরিজ(২০১৭), কড়ি এবং কোমল ধ্বনির ক্রন্দনভাষা(২০১৯)


কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন