'কোন কোন দিন এমন হয়--/ কোথায় নামব ঠিক করতে না পেরে/ নেমে পড়ি অচেনা স্টেশনে' কীসের অন্বেষণে বিভুঁই কবিমন ছুটে ফেরে রক্তাক্ত অনেক দিনের ভেতর থেকে 'কোন কোন দিন '-এর অনাবিল প্রশান্তির খোঁজে-- তারই স্নিগ্ধ মর্মরিত অনুভব জড়িয়ে রয়েছে কবি স্বপন নাগের কবিতায়।পড়ছি ----
কবি স্বপন নাগ-এর দুটি কবিতা
কোন কোন দিন
কোন কোন দিন এমন হয় --
সারাটা দিন কেটে যায় অন্বেষণে
এখানে ওখানে কাছেপিঠে সেরে
পাড়ি দিই অজানা সুদূরে
শহরের অলিগলি খোঁজা শেষ হলে
মফস্বল পেরিয়ে পৌঁছে যাই গ্রামে
এ বাড়ি ও বাড়ি ঘুরে ফুরিয়ে যায় দিন
রাত্রি নামার আগে ফিরে আসি ঘরে
দারুণ শূন্যতা এক সশব্দে হেসে ওঠে
সাঙ্গ হলে ঘোরাঘুরি খোঁজাখুঁজি
পড়ে থাকে হতাশা শুধু --
এমন হয় কোন কোন দিন
কোন কোন দিন এমন হয় --
কোথায় নামব ঠিক করতে না পেরে
নেমে পড়ি অচেনা স্টেশনে কোনো
ছোট্ট গুমটি চা-ঘরে কুপি জ্বলে
মৃদু আলোয় রহস্যময় দুলতে থাকে
অচেনা মুখের ছায়া
কেউ চেনে না এমন গাঢ় কুয়াশায়
সারি সারি চেনা মুখ আলোকিত হয়
পাড়া গাঁ-র অন্ধকার এসে বলে
'বড় দেরি করলে হে
আবেশপুরের বাস ছেড়ে গেছে কবেই'
অচেনা অন্ধকারে ক্লান্তি আসে আমার
মুখে নিভন্ত বিড়ি নিয়ে কেউ
চাইতে আসে একটু আগুন --
এমন হয় কোন কোন দিন
কোন কোন দিন এমনও হয় --
অনেকখানি আলো দিয়ে নবমীর রাতে
আমাকে পথ দেখায় মীরহাটির চাঁদ
উঁচুনিচু মেঠোপথে সাবলীল হেঁটে যাই
অবৈতনিক হাওয়া এসে
কানে কানে শোনাতে চায় গোপন কথা
হাওয়ারই হাত ধরে
দূর থেকে ভেসে আসে আজানের সুর
শব্দ তুলে শুকনো পাতারা সব
ঝরে পড়ে মাটির আশ্রয়ে
আমার পথচলা বাজতে থাকে সুরেলা মর্মরে
এমনও হয় কোন কোন দিন
ভুলে যাব বলে আমি
দূরে সরিয়ে রাখি যাবতীয় দুঃখ সন্তাপ
এরকমও হয় কোন দিন
অস্ফুট স্বরে বলে ওঠে শেষরাত --
সবকিছু ভুলে যাওয়া ক্ষমাহীন পাপ।
গ্রামছাড়া ওই ...
বাদাবনের ওপার থেকে
রোজ সকালে সূর্য ওঠে।
মাথার ওপর উপুড়-আকাশ
পাখির ঝাঁকে কিচিরমিচির,
নদীর ঘোলা জলকে ছুঁয়ে
তুলছে মাথা অখ্যাত ঘাস,
ঘাসের মাথায় টুকুস ফুল
নাকছাবি তার টুকটুকে লাল
হাওয়ায় দুলছে --
তারই ছবি ছিরিকছিরিক
ক্যামেরা সব ধরে রাখছে।
লঞ্চঘাটে এক ভিখিরিনি
জন খাটে তার একলা মরদ,
সন্ধে হলেই রক্তে নেশা
ছলকে ওঠে বেহিসেবি।
চায়ের দোকান এত্তটুকুন
অনেক লোকের আসা-যাওয়া
মেট্রো নাকি মাটির নিচে
হাসপাতালের সফেদ বালিশ,
নার্সদিদিটির মাথায় মুকুট
সেসব যেন বিলেত টিলেত
মাইরি বলছি গল্প শোনায়
তর্ক অনেক ই ভি এমে
শহরবাবু টিপছাপ নেয় ...
তিনটে ইটের উনুনে ভাত
ভাতের খিদে মেটে আলু
ছিন্ন ফ্রকের আব্রুতে স্তন
ক্যামেরাতে বন্দি করে।
শহর থেকে কারা আসে
কতরকম খিদের কথা
জানেও ওরা !
বইয়ের রাশি
লেখাপড়ার ঘ্যামও আছে।
বাঁচতে গেলে খাদ্য চাই
এমন কী আর নতুন কথা,
কে না জানে
অস্ত্রও চাই বাঁচতে গেলে ;
নইলে ওরা
কেন বলো দিনেরাতে
সব্বাইকে মিথ্যে বোঝায় !
প্রকাশিত গ্রন্থ :
কাব্যগ্রন্থ
• ইচ্ছে আমার বনকাপাসী মাঠ
• স্থির স্বপ্নে জেগে আছি
• প্রিয় ২৫
• বিষাদ এসে ঘর বেঁধেছে
অনুবাদ
• প্রিয় ২৫
(কবি কেদারনাথ সিং-এর হিন্দি কবিতার বাংলায়ন )
রম্যরচনা
• ONLY FOR তোমার জন্য


দুটো লেখাতে কি এক ঘোরলাগা বাস্তবতা।
উত্তরমুছুন