মঙ্গলবার, ৫ অক্টোবর, ২০২১

আশ্রয়ের অন্য এক রূপ * অনিমেষ



সম্প্রতি আমাদের ছেড়ে চলে গেলেন সত্তরের বিশিষ্ট কবি প্রবীর রায় । স্মৃতিচারণ করলেন কবি অনিমেষ ।



সূচিপত্র * প্রবীর রায় 


১   অতনু নামে একটি ছেলে ছিল৷   ১

২   অতনু নামে একটা বাবা ছিল   ৩০

৩   অতনু নামে একটা দাদু ছিল   ৬০

৪   অতনু নামে একটা ছবি ছিল   ৮০


৫   অতনু নামে কেউ ছিল না   ১০০ 


এই কবিতাটি কবির মুখ থেকে শোনবার পর থেকে   আজও ভুলতে পারিনি । অবাক হয়েছিলাম এখনও হই।পরিচয়ের পর থেকেই  তাঁর কাছাকাছি আসতেই  প্রশ্রয় পেয়েছি সবসময় ।আমার লেখা থেকে আমার পত্রিকা আমাদের সবসময় স্নেহ দিয়ে গেছেন। 




আমাদের শুরুর দিকের যাত্রায় প্রবীরদা পাশে থেকেছেন । কখনও শূন্য হাতে ফেরাননি। আশ্রয় প্রশ্রয়ে কখন যে ডালপালা ফুলে ফলে ভরে উঠলো বুঝতেই পারিনি। ওয়েব ডুয়ার্সের প্রায় প্রতিটি সংখ্যাই দাদার কাছে লেখা চাইতাম।কখনও দিতে পারতেন কখনও পারতেন না।


কথা ছিল মুখোমুখি আমার প্রিন্ট পত্রিকার জন্য সাক্ষাৎকার দেবেন সেটাও তথাকথিত সাক্ষাৎকারের চেয়ে একটু আলাদা হবে এটাই স্বাভাবিক।রাজি হয়েছিলেন। আমিই সময় করে উঠতে পারছিলাম না।


দুদিন আগেই বললেন "অনিমেষ তুমি আর রঙ্গন  গ্র্যাজুয়েশন করেছো আমি খুব আনন্দ পেয়েছি খুব খুশী হয়েছি" 


যখনই কথা হতো সবশেষে বলতেন "তোমার লেখা আর তোমাকে নিয়ে আমার খুব চিন্তা হয় ,এই আছো এই হঠাৎ করে নেই হয়ে যেতে চাও । এত কিসের তাড়া অনিমেষ!" 


আর কখনও দাদা বলে আবদার করতে পারব না।কখনও কোনো লেখা নিয়ে সংশয় থাকলে বলতে পারব না "দেখো তো দাদা লেখাটা!খুব খারাপ হয়েছে কি!" । কখনও লেখা পড়ে ফোন আসবে না"অনিমেষ ওই লেখাটা পড়লাম ,ভালো হয়েছে ,লেখো লেখো " আর কখনও তোমার সময়ের বাইরে ফোন করা হবে না। এত তাড়া ছিল যাবার!একবার মাত্র শ্যামলছায়ায় গিয়েছি আর আজ শ্যামলছায়ায় গেলাম কিন্তু আজ তুমি দেখতে পেলেনা। দেখতে পেলে হয়তো খুশী হতে খুব। 


আমরা অভিভাবক হারালাম । আজ শেষবারের মতো তোমার পা ছুঁয়ে এলাম। শুনেছি তুমি নাকি খুব বৃষ্টি ভালোবাসতে! তাই বলে এইভাবে চলে যেতে হয় !...


প্রবীরদার সর্বশেষ কাব্যগ্রন্থ থেকে একটি কবিতা-


"অন্ধকার হাতড়ে খুঁজছে আলো

এই সংবাদের পর একটি কালোছবি


কালো হাতড়ে খুঁজছে সাদা

এই রংহীনতার দায় কার

ভাবতে ভাবতে চোখ বুঁজে আসে"

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন