মঙ্গলবার, ৫ অক্টোবর, ২০২১

জয়দীপ সেন



হালকা কথকতার ভঙ্গিতে কবি জয়দীপ সেন ভাবনার অতল তলে ডুবিয়ে দেন পাঠককে ' এক বাটি জলে সামুদ্রিক ঝড় ওঠে ' শব্দের অনেক বাঁক পেরিয়ে, সেই ঝড় সঙ্গে করে ,পাঠক পৌঁছে যান অনাস্বাদিত এমন উচ্চারণে ' লাশ লুকোচ্ছ ,ও নদী ? ভ্রুণ লুকোচ্ছ ,ও মৃত মা ? ' পড়ছি ----

 


কবি  জয়দীপ সেন-এর দুটি কবিতা

 

আমি ও আমার পাগলী

 


হাতের কাছে ওটুকুই ভিজে―এক বাটি জলে সামুদ্রিক ঝড়

জানি খিদে পেয়েছে

আমাদের দৈত্য বুদ্ধের কোলে ঢলে পড়েছে―

এই পরিণতি স্বাদু মশলা দিয়ে রাঁধতে পারি, খাবে?

তেষ্টা পেলে বাটিতে চুমুক দিও


আমার রান্না প্রায় শেষের দিকে 

তারপর খাবো

তারপর দুজনে বসে সেলাই-এ মন দেব

নিক্তি ও নানান গাভীর ছায়া সংবলিত ডিজাইন―

পৃথিবীতে মৌমাছিরা থাকতে থাকতে...


রোজ রাতে তোমার প্রলাপ:

'প্যাবলো, আমি ছবি হতে চাই না'―অসহ্য হয়ে উঠেছিল

তাই তোমার ডায়েট পাল্টে দিলাম

এবার মরুভূমিতে তোমায় চমৎকার মানিয়েছে 

এখন জঙ্গল বুঝতে পারো, পাহাড় বুঝতে পারো

নদী দেখে বললে, দ্যাখো জয়, ঢেউ লাশ লুকোচ্ছে


লাশ লুকোচ্ছ, ও নদী?

ভ্রূণ লুকোচ্ছ, ও মৃত মা?


তোমাদের চেনা যায় না

চিনতে পারে না ভালো-সাবান-মাখা মানুষ

আমার পাগলী চিনে একাকার হয়ে যায়।



মিশেছি তোমার সঙ্গে


মিশেছি তোমার সঙ্গে তাই জানো নিশ্চই আমি স্রেফ কণ্ঠশিল্পী নই

আমি ছিদ্রান্বেষী টোকা দিলাম তোমার গালে 

অমনি মুখের প্লাস্টার খ'সে বালি ঝুরঝুর ঝরে পড়ল 

আর বালিতে ভৃগু আসন পাতল সিদ্ধার্থও 

বসল চুপটি ক'রে সে পরে সিদ্ধিলাভ করবে 

তবে কনক্লুড করার আগে তুমি বলো 

কর্তব্যে কতটা ঢিলেমি দিলে শেষ চুমুক ব্যর্থ হয় 

বলো কতক্ষণ চার্চের ঘন্টায় স্থির থাকে সভ্য নজর 

সে নজর কেমনতর যন্ত্রণা নাগাড়ে বেজে ক্ষান্ত হয় কিনা 

বলো চামড়ার দোহাই যখন সবটাই প্রাণীচর্চা 

তুমি প্লিজ দোয়া করো অভয় দাও জনসাধারণকে প্রত্যেকের হাতে

তেলেভাজা সিঙ্গারার মত তুলে দাও খাস্তা প্রতিশ্রুতি

ব্যালকনির নিচে দাঁড়িয়ে আমার গলায় 

মহম্মদ রফি শুনে কেঁদে ফেলেছে যেসব লোক 

ওদের কচি পাঁঠার ঝোল রেঁধে খাওয়াও


তুমি শাড়ি সালোয়ার বোঝো যেমন আমি নিশাত বুঝি 

সেই আমি এতদিনের আড্ডার নির্ঝর সূর্যের গ্রাসে দিলাম 

যুক্তিনিষ্টতা ধম্মে সইল না

তুমি যখন রোদে মেলে দিতে আমার অন্তর্বাস আর বলতে সবুর করো

আমি সৌভিক হতাম জানতাম শুকোনোর ফাঁদে পড়লে 

ভ্যানিশ হবার মন্ত্র জানতাম মৌন জগদীশ 

ল্যাংটো পুরুষ জানতাম আমার সব পথ ছুটে যায় 

একটিমাত্র বন্ধ দরজার দিকে

ধাক্কা দিচ্ছি শুনতে পাচ্ছি দরজার ওপারে ইশপ চেঁচাচ্ছে কী করি

ইশপ রুখে দাঁড়িয়ে ঠেকাচ্ছে দুমদুম দরজা-পেটানো

আমি তোমায় সাথে এনেছি একত্রে শক্তি দিয়ে ভেঙে ফেলবই মরা সেগুন

আমি ভূতের বংশ আমার ভালো লাগে তোমায় পেত্নীতে ধরলে







কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন