মঙ্গলবার, ১৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩

কবিতা * সোহম চক্রবর্তী




সোহম চক্রবর্তী / দুটি কবিতা

কাঠের পিয়ানো







হাত বাড়িয়েছি

যাতে তুমি ছেড়ে যেতে পারো


এখানে প্রেম নেই, অভিমানও

কবে যেন হাত ছেড়ে গেছে


বরং তোমাকে আজ

পৌঁছে দিই, চলো


যেখানে পাখির গান

কাঠের পিয়ানো

মানুষের স্মৃতি


হাত বাড়িয়েছি

যাতে তুমি এইসব

রেখে যেতে পারো, বহুদূর যাওয়ার সময়












যত দূরে যাই

যত দূরে যাই, তুমি হও রমণসম্ভবা...


যেন বিঁধে গেছি কখনও কোথাও,

এমন একটা রোদের সুতোয়

এগিয়ে যায় পথ, যত দূরে যাই

দেহজ সেলাই খুলে খসে পড়ে 

একে একে অতীতবোতাম – 


যত দূরে যাই, তুমি হও রমণসম্ভবা...

প্রণম্য দিগম্বর আমি, কাছে ডাকো

এইবার, সম্মতি জানাও!


************************************************************************************************



সোহম চক্রবর্তী 

জন্ম ১৯৯৭ সালের ৩১শে অক্টোবর। নদীয়া জেলার কৃষ্ণনগর কলেজিয়েট স্কুল থেকে ২০১৪ সালে মাধ্যমিক ও ২০১৬ সালে উচ্চমাধ্যমিক। Indian Institute of Science Education and Research Kolkata থেকে রসায়নে 5-year BS-MS dual degree লাভ ২০২১ সালে। বর্তমানে আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের Rutgers – The State University of New Jersey তে রসায়নে Ph.D. পাঠক্রমে গবেষণারত। প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ – ‘নির্জনতাগুচ্ছ’ (আদম প্রকাশনা, ২০১৯)। লেখালিখি বিভিন্ন লিটল ম্যাগাজিন ও বেতারমাধ্যমে। কবিতার পাশাপাশি স্বচ্ছন্দ মুক্তগদ্য, প্রবন্ধ ও অনুবাদেও। জীবনে একটিমাত্র ম্যাজিক – ‘গীতবিতান’।


1 টি মন্তব্য:

  1. সোহম, আমার অন্যতম প্রিয় কবি এবং সমকালীন বাংলা কবিতায় এক দৃপ্ত, সংবেদনশীল, সৌম্য কন্ঠস্বর। এই কবিকে পাঠ অনিবার্যভাবে অনাস্বাদিতপূর্ব অভিজ্ঞতা। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হল মাত্র পঁচিশ বছর বয়সেই সোহম নিজস্ব অবস্থান সুনিশ্চিত করেছে। যদিও এ এক নির্বোধের মত মন্তব্য হয়ে গেল। প্রতিভার বিচ্ছুরণ তো বয়সের সমানুপাতিক হবে, তেমন কোন প্রতিপাদ্য নেই।
    এখানে দুটি কবিতায় আবার সোহমের জাঁক পাওয়া গেল। প্রথম কবিতায় যে অভিজাত নিস্পৃহার ভেতরে চরম বিবিক্ততা ঘনিয়ে রয়েছে এবং এভাবেই যে আসক্তির স্পষ্ট আদল প্রতীয়মান হয়ে উঠেছে, তার মৌজই আলাদা। প্রতিটি স্তবকে মুক্ত হয়ে বিস্তারিত হয়ে উঠছে সংশ্লেষ আর এই প্যাটার্নেই সমকাল এসে চুপ করে বসছে লেখার শান্ত ঘাটে, যেখানে ছায়ার আলোয় দীপ্ত হয়ে আছে চারপাশ। এই পূর্ণতা কবিতাটিকে যে ঋদ্ধতা দিল, তার তুলনীয় সে নিজেই। এভাবে লেখার শরীর থেকে লেখাকেই বের করে নিয়ে আসার বিত্তে ভরে ওঠার সামর্থ্য সব ক্ষেত্রে থাকেনা, যখন সে দৃষ্টান্ত নির্মিত গয়...আহা! সে এক কালোত্তীর্ণ অভিজ্ঞান।
    আর দ্বিতীয় লেখাটি তো মহাকাব্যিক জমকের সার্থক নিদর্শন! শুধুমাত্র 'রমণসম্ভবা' শব্দটির প্রয়োগে, অবিশ্বাস্য প্রয়োগে যে মৌতাত তৈরী হয়েছে, তার বিকল্প হয়না! সোহমের কাব্যভাষায় এ এক আশ্চর্য রীতি, শব্দের সনাতনী রূপ চূড়ান্ত আধুনিক প্রয়োগে ব্যবহার করার অবিসংবাদী দক্ষতা! অনেকদূর যাবেন এই কবি। বাংলা কবিতাকে স্নেহের আশ্রয় দিতে যোগ্যতম কলমের সন্ধান আজ সুনিশ্চিত।

    উত্তরমুছুন