কবি সুজয় যশ -এর দুটি কবিতা
একটা দিন তুমি
ধরো একটা দিন তুমি একা !
এখানে শহর নেই । মানুষ নেই । তোমার প্রিয়
মুঠো ফোন --- সেটাও নেই ।
একা ! অর্থাৎ একাই ।
একটা ছিপছিপে গাছের তলায়
তুমি দাড়িয়ে দাড়িয়ে ছায়াদের পরিধি
মাপছ । নিজেকে ছায়া থেকে রোদ্দুরে রেখে
দেখে নিচ্ছ নিজের ছায়ার মাপ ।
বড় থেকে ছোট হচ্ছে । ছোট থেকে বড় ।
তোমার ছায়ার ওপর দিয়ে লাল পিঁপড়ে
কেমন নিজেদের মতো হেঁটে চলেছে ।
তুমি রোদ থেকে ছাওয়ায় আসলে
গাছের ঠান্ডা লাগতে থাকে । রোদ্দুর
মাখতে গাছের শির ডগে বসে
পালকে ঠোঁট ঘষে যাচ্ছে একটা নতুন পাখি ।
তুমি কখনোই একা হতে চাওনি । তবু
ভিতরে ভিতরে একা হয়ে গেছো অজান্তে ।
নিজের সাথে খেলতে খেলতে আজ
তুমি হেসে উঠলে । একা একা ।
ধরো আজ সারাটা দিন তুমি এভাবেই
ঘাসের ওপর মেলে রাখলে নিজেকে ।
প্রজাপতিদের দেখে তুমি নিজের হাত দুটো
অজান্তেই মেলে দিলে । তুমি ভাসছ
নিজের ভেতর । নরম মেঘের মতো ।
মাটিতে মাটিতে মেঘের গন্ধ ।
ফুলের গন্ধ তোমার ছায়ায় ।
একদিন । এই একদিন । তুমি শিখে গেলে
ছায়া হতে । শিখে গেলে মেঘ ছুঁতে ।
শিখে গেলে নিজে নিজে ।
একা । অর্থাৎ একাই ।
প্রেমময়
তুমি কখনো প্রেমে পড়েছ ?
আমি প্রেমে পড়ি রোজ .....
রোজ রোজ পোড়া ধূপের গন্ধের প্রেমে পড়ি ।
ভোরের আলোর প্রেমে যখন আকুল হয় মন
প্রেমে পড়ি আবার
সহজাত পাখিদের সুরে ।
গাছের বাকল ছুঁয়ে অনন্ত প্রেম ।
সবুজ পাতায় রাখি অনাবৃত প্রেম ।
এত প্রেম তবু মেটে না মনের আকুতি ।
ধুলোর বুকে বৃষ্টির গন্ধে র প্রেম ,
আমি ভেসে যাই দিগন্ত শেষে রাখাল বাঁশির সুরে ।
শালিকের ঝগড়ায় খুঁজি প্রেম ।
আকাশের রঙে মিলে মিশে যাই ।
মেঘের ভেতরে বৃষ্টি মাখি নভঃশ্চর প্রেমে ।
এত প্রেম তবু কেন চোখে জল আসে !
হে প্রেমময় তুমি ছাড়া সব প্রেম অসহায় ।
যে প্রেম পায়নি ছুঁতে কেউ, দাও হে নাথ
তোমার প্রসাদ করে ,
না হয় পূজার ফুলে ।
সব প্রেম বেঁচে থাক তোমার চরণে ।
*******************************************************************


'একটা দিন তুমি '-কবিতাটি কালের সীমান্ত ছাড়িয়ে এক যুগোত্তর সৃজনে রূপান্তরিত হয়েছে।দ্বিতীয় কবিতাটিতে প্রেমের ভিতরের করুণরস নিংড়ে বের করে এনেছেন কবি,ছাকনি দিকে ছেঁকে তুলে ধরেছেন অশেষ প্রার্থনা-"পূর্ণ কর মোর ধূলোর সিংহাসন!"তোমার তুলনা তুমিই🙏🙏
উত্তরমুছুন