বুধবার, ১৩ এপ্রিল, ২০২২

নিমাই জানা



কবি নিমাই জানা-র দুটি কবিতা


অবৈধ ছায়াপথ ও দ্রাক্ষাফলের বাগান


প্রতিটি মানুষের কামজ শরীরের ভেতর 

একটি অসমাপিকা ক্রিয়ার শ্মশান থাকা উচিত , 

যাকে কান্নার শবমন্ত্র শেখালেই সে প্রতিটি রাতে জড়িয়ে ধরবে 

সাপের মতো সপ্তর্ষির তিনটি অশ্রুসিক্ত শাঁখামুঠো রতি

আমি গলিত অশ্রু রেখে যাবো গাছের অনাল গ্রন্থির বর্জ্য সামগ্রীর কাছে , 

দ্রাক্ষাফল স্তন সমগ্রের মতো ঝুলে থাকবে আমার শিরস্ত্রাণের কাছে ,

ঘুম এলেই নারীটি আমাকে পরকীয়া ঈশ্বর ভাবতেই থাকে  , 

আমি একাকী ঈশ্বরীর কাছে নত মস্তকে মঞ্জিরা বাজিয়ে চলি, 

উপুড় করি সব জন্মপরবর্তী কষ্টকর কথা

চাঁদ ক্রমশ দ্রাঘিমাহারা হয়ে মহাশূণ্যে বিলীন হয়ে যায় 

আরেকটি গর্ভাশয়ের জন্য , ব্রহ্ম মুহূর্তের বাবা উলঙ্গ হয়ে দেয়ালে 

হেঁটে বেড়ান যৌগিক চিহ্ন হয়ে

সেফট্রায়াক্সন ৫০০ মিলিগ্রামের একটি পুংকেশর নৌকা 

আমাদের অস্থির করে তোলে বটগাছের উলম্ব অক্ষরেখায় দাঁড়িয়ে ,

আমি শিউলিপুর আর কাঁটাখালির নোনাচরের অবৈধ ছায়ারেখাগুলোকে 

পর্যায় সারণির বাম বক্ষ ভাবি

আমার জৈবনিক রসায়ন ঘরের তন্ময় পুরুষটি একাকী 

অগ্নি বৃক্ষের ফুল তুলে আনছে সায়াহ্ন বেলার আগে

নিজেকেই পুজো করি যজ্ঞ আগুনের জন্য , 

এখানে বৈষ্ণব সাপেদের মাথা ক্রমশ মনিরত্নম হয়ে যায়  , 

শান্তনু হাসছেন এবার









দ্বিঘাত সমীকরণ ও নাঙ্গলকাটা মানুষেরা


অন্তিম ভোরবেলায় স্বয়ং চিহ্নের তিনটি কর্কটকান্তি শ্বেতশুভ্র হ্লাদিনী নারীরা 

শুয়ে থাকে অনাদি ব্রহ্ম জন্মের জন্য

ঈশ্বর জন্ম নিয়ে নেমে আসেন অমৃতময় কুঞ্জে , অচ্যুত শরীর

রথ থেকে নেমে যাওয়ার পর সকলেই আদিম প্রাচীন মুখোশ পরে নেয় , 

একটি লতানো বটের নিষিদ্ধ পরজীবীরা শুয়ে থাকে মুখোশ ঢাকা 

ভূগোল বৃন্তের দিকে মুখ রেখে , সবাই পলল অথচ প্রেমিক

এখানে সকলেই পিচ্ছিল হতে থাকে লাল জবা ফুলের মতো ,  

একটি বৈধ অ্যালকোহলিক শ্মশান বিন্দুর ভাঙা কাঁচের টুকরোর ভেতর 

হলুদ রঙের ঘোলাটে জল আর জন্ম ঘরের পোকা থাকে বিষ্ণুপুরাণের ভেতর

আমার ঠোঁটের মৃত সেবিকারা আঙ্গুল ছুঁয়ে 

এসকরবিক এসিড ছুঁড়ে দিয়ে আসছে হলুদ মর্গের ভেতর , 

আমি অর্ধমৃত থাকি আজ

ইছামতি নারীটি বিসর্গ চিহ্নের মতো আমার সাথে দীর্ঘ পথ বয়ে যায় 

আমি ঘূর্ণবাত বৃষ্টির উপেক্ষা করেও শাপমুক্ত হই এ নরককুণ্ডে

পর্যায় বৃত্ত গণিত পাষাণ ঈশ্বরের সাথে ছদ্মবেশী হয়ে ওঠেন

সঙ্গমের পর ,

ক্রমশ বৈভব ফেলে গোপীনাথপুর আর নাঙ্গলকাটার মানুষেরা মত্ত হয়ে ওঠেন 

ঈশ্বরীয় শরীরের সব রঙ মুছে ফেলে

বৃষ্টির জলে কতবার বৈধব্য হয়ে যায় প্রাচীন মুকুট 

আর নিঃশর্ত অভিমান ফেলে ,লাল রঙের শিরস্ত্রাণের উপর 

একটি দ্বিঘাত সমীকরণ ঝুলে আছে

আমি তাকে নৈসর্গিক খেয়াঘাট বলি


*************************************************************************



নিমাই জানা

 এ সময়ের অন্যতম শক্তিশালী তরুণ কবি । রুইনান সবং পশ্চিম মেদিনীপুর থেকে লিখছেন প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ :  ছায়ার মূলরোম ও  নির্জন পুরুষ অসুখ


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন