বুধবার, ১৩ এপ্রিল, ২০২২

বিকাশ চন্দ

 


কবি বিকাশ চন্দ'র দুটি কবিতা


বরণ


শিরদাঁড়া বেয়ে নামছে অচেনা রক্ত স্রোত

শিউরে ওঠে আঁতুড় ঘর মাটির মুকুটে তথাগত

চূর্ণ আলোর বিলাসে সম্পর্ক বাঁধনে অনন্ত পথ


একটু আলো জ্বলুক হে আন্তরিক লৌকিক চোখ 

সমদর্শী আমি তিনি এবং আপনারা কেমন আলো মুখ

বুড়ো শিবতলা বারোয়ারী উৎসব একই ভূমি লগ্ন কাল

মাজার ছুঁয়ে গেছে আলো পথ ঈশ্বর ভূবনে


তর্জনী সময় ছুঁয়ে আছে রংচটা তালপাতার জন্ম ঠিকুজী 

কোথাও ছত্রখান খেরো খাতা দাঁড়িয়ে বিষাদ বৃহন্নলা

বয়সের সীমা অতিক্রম জানে প্রত্যয়িত সনদে দর্শনে

জল ডাঙায় বসতি উচ্ছ্বসিত জানেনা মদ মাংস নারী 


গাছের তলায় নিশ্চিন্তে ঘুমোয় আকাশ মাটি নক্ষত্র সংসার

প্রতি রাতে নেমে আসে অক্ষ ভাঙে গ্রহ ফেরতা জীবন 

চাঁদ মুখে লাল লজ্জা ছায়া শরীরের রক্ত জমে মুখে

ঋতুপর্ণা কাল জানে গাছের বাকল ছেঁড়ে বনজ সম্ভ্রম


শস্য শরীরে অক্ষর অভিমানে জমে পুরুষ্টু স্খলন 

গাঙচিলের ঝাঁক আর বকের সারি দেখে রূপশালী ধান

কথা জন্ম ভাসে শরীরী উত্তাপে প্রতি রাতে অগ্নি বরণ 









উৎসর্গ

সাত জন্ম পাক খাচ্ছে জাতক জন্ম পীঠ 

প্রকৃতি পুরুষ নাকি আর্য সত্য খোঁজে মায়া চাঁদ 

মহাকাশের নীলে এক ঢাল জীবন্ত ভালোবাসা 

ফিরেও দেখেনি কেউ স্বপ্ন ভুখ একা পাঁজরে খিলানে


অঝোরে ধুয়ে যায় বৃষ্টি পাতে চলন কালের ত্রিযামা 

তবু এতো সংহার সময় ভেসে যায় অনন্তের মুগ্ধ প্রশ্বাস

অগণিত মানুষের সারি অফুরন্ত জীবন সূর্যের তাপে

চলন কালের ক্রোধ জানে ঝরে পড়ে মানুষের জলছবি 


রাতের অন্ধকারে ঘাস ডোবা বৃষ্টিপাতে ডাকে না ব্যাঙ

নীরব অরণ্য জানে শেকড় বাকড়ে আত্মার অঙ্কুর

কেবল প্রশান্তি গলায় সুর তোলে অজ্ঞাত মুখ ছায়া

আকাশের ছায়াপথ চিনেছে বিভূঁই এদেশের রাত


মুখ ফেরানো মৌণ মানুষ কোথায় যাবে উর্ধশ্বাসে 

অভিলাষ ছিল না জেনে দাঁড়িয়ে ভয়ঙ্কর পরকাল

দহনে দোহনে সারাটা জীবন নীলকন্ঠ শিরা ও শরীরে 

শ্বাসকষ্ট বোঝে তবু প্রসন্ন শরীর ভাঙে 

মায়া মুদ্রায় আভূমি প্রণত আমার উৎসর্গ কাল


***************************************************************************



বিকাশ চন্দ 

 জন্ম ১লা এপ্রিল ১৯৫৫
লেখা শুরু ১৯৭২ থেকেই। গল্প, কবিতা, কাব্য নাটক,
গল্প, প্রবন্ধ নিয়ে এখনো জীবনচর্যা। প্রকাশিত 
কাব্যগ্রন্থ  :  বীজে অঙ্কুরে বিনষ্ট শিকড়ে ২০০৭,
বর্ণবিহীন বর্ণবিকাশ ২০১৬, ঋতু বদলের ছবি ২০১৭,
আকাশ গঙ্গায় নক্ষত্র ভেলা ২০১৭, বিষণ্ণ দ্রোহ কাল ২০১৮,
শূন্য শরীরে স্থপতির হাত ১৪২৫, সাদা ফুলের কফিন ২০২০,
অনুচ্চারিত শব্দের কোলাহল ১৪২৭, হৃদয় বাঁচে আত্মার 
আড়ালে ১৪২৮, প্রকাশ অপেক্ষায় : কাব্য নাটক "ঝিনুকের
চোখে মুক্তা জল " কাব্যগ্রন্থ "কোন যতি চিহ্ন নেই "। 
কলম আঁকড়ে বেঁচে থাকার প্রয়াসেই কালাতিপাত। 


1 টি মন্তব্য:

  1. গভীর জীবনবোধ উদগীর্ণ হচ্ছে ভাষাতত্ত্বের নিবিড়ে।এই নিবিড়তা কবির অন্তরআত্মারই অনাদিযোগ!🙏🙏

    উত্তরমুছুন