বুধবার, ১৩ এপ্রিল, ২০২২

শর্মিষ্ঠা ঘোষ





কবি শর্মিষ্ঠা ঘোষ-এর দুটি কবিতা 


শহরের ইতিকথা 


ভোরের মঙ্গলস্নানে নক্ষত্র জ্বলে কবিতার ধ্যানে। পাখী আর পথিকের সহজ গৃহরচনা। ঘর ছাড়ে ঘরবাঁধার সুমিষ্ট উপকরণের খোঁজে। দুপুরের দীঘিজলে স্বচ্ছ শিশুমনের ক্রেংকার। ভেসে থাকা ডিঙির দাঁড়ে মায়াব্যধি। গোধূলিফেরত দিঠিটান ঘরফিরতিকে শোনায় মটরশুঁটির আকর্ষআকুলি গান। ঘোমটা পেরনো সিঁদুরের প্রচ্ছদে বাঁধাই হ্যারিকেন ফিসফাস। মধ্যরাতের ঝিঁঝিঁস্বর মাখা ঘুমন্ত শিশুর মুখে ঐশ্বরিক নির্মলতা। এহেন নিটোল স্বচ্ছতার নিকট স্বচ্ছন্দে নিভে যায় কুরুক্ষেত্রের চিতা, পরাজিত হয় মরিচার ধর্মজ্ঞান। মনে হয় যেন গল্পকথা। অথচ, এমনই হতো এই তো সেদিনও...

          আর এখন...রেলিঙের ফাঁকে কয়েদী পোশাকের ক্ষীণ রোদে তিলেক উষ্ণতা। শিশুদের চোখে মৃগয়ামুক্তির নীলাভ দিশেহারা রেশ। অজস্র পথের জটিলতায় বেপথের দাপট। জোর যার মুলুক তার নিয়মে ব্যক্তিগত দিনরাত। সহজাত সংলাপ মরেছে কবেই, এসেছে প্রলাপের প্রতাপ। সময়ের ফেরে সহজ জলকেলি ভুলে বন্যা চিনেছে মানুষ। 'ফলন' ফেরার, পরিবর্তে ভিক্ষাবাটি নিয়ে সময় ঘোরে বিকল্পের দ্বারে দ্বারে। 

          যা কিছু ছিল, তা সস্নেহে  জমে থাকা স্বরের আর্তদাগে, মিলিয়েও মেলায় না। চার অক্ষর, একটি শব্দ হারিয়ে, জীবন আজ ক্ষ্যাপাচাঁদ। যার ক্ষোভে খোলাবুক কিশোরের ফুটবল মাঠ, আড়বাঁশি ধুলোমাখা বাতিল, মৃত চিলেকোঠা। আর আকাশ-বাতাসে ভ্যাকসিনের মত জটিল রসায়নের বেদখলদারি...










সিদ্ধ 


তার কাছে যত যোগঋণ

বলেছিল, বৃথা এ আঁচড়কামড় বাস

       ছলনার জলদাগে গোপনপত্রে তিল।

দাবীত্যাগে প্রাপ্তি সারি সারি। 

যেমতে ছেড়ে যায় পুরনো পথ

       পুরনো লেখাজোকা, নদীর 

       আবছাপ্রায় রূূপনারা'ণ মাত্রাদাগ।

এখানে চৈতন্য ঠাস

       ধ্যানের নির্জনতার কানায় কানায়

মেঘমুক্ত নাক্ষত্রিক পরবাস…


***************************************************************



 শর্মিষ্ঠা ঘোষ

জন্ম কলকাতায়। বিভিন্ন বিষয়ে পড়াশোনা ও লেখালেখি শখ। কবিতা প্রকাশিত হয়েছে বিভিন্ন সাময়িক পত্রিকায়। দৈনন্দিন জীবনের যন্ত্রণা, প্রেম, পাল্টে যাওয়া রঙ লাগে কবিতায়।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন