বুধবার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০২২

পরানসখা ব্রজবাসী




কবিতা / পরানসখা ব্রজবাসী

সন্ন্যেসি মন








এই পরদেশে প্রার্থনাই শুধু' কী করিবা তুমি ধর্মাবতার ? পশ্চিমের ঐ ধর্মদেশ আমার; নীচে কাটা-মুণ্ডের মহাশ্মশান জ্বলে,উপরে রক্তে নিকানো আকাশ বিধাতার পাদপদ্মের মতো আরও লাল... ঐখানে ভবিষ্য লেখে এক নিরপেক্ষ রাজা -- যে,ফুল থেকে খুশবু, আশমান থেকে রাত্রিমেঘ, বিশ্বলোক থেকে গুটিয়ে নিচ্ছে আয়ু...  ঐখানে গন্তব্য আমার :


ফলত, দেশ নাই

পায়ের তলে ঘাস যেমন, হাঁস যেমন

সিংহদের বনে...

এই আমরা আছি ;

এই আমাদের সর্বংসহা

বৈরাগ্য বেশ, সন্ন্যেসিমন --

সম্বল শুধু তুলসির মালা

গলায় পরেছি ৷


দেখনি, মা-যোনি ভেদ ক'রে

উঠেছে কার হাতের লোহা

ছিটকে এসে লাগে রক্ত

থানকাপড়ের সাদায়;

এ দেহমনে, এ অঙ্গভূষণে

আরও বেশি সত্ত্বগুণে

এ মনোসন্ন্যেসি কেমন

লালন হয়ে যায় ৷













আর,এই গেরুয়া বসন সেতো

পুত্রের দেহ থেকে গড়িয়ে-আসা রক্ত --

জমাট বেঁধে এই সন্ন্যেসিবরন;

অধরমে দুঃখ নাই, মরণেও --

বলেন বিধাতা যিনি

সর্বকারণের কারণ ।


ফলত, আমরা মরি, আমদের

 বিধাতাও মরেন ,

ওই দ্যাখ পাণ্ডাহত ন্যাড়ামুণ্ডের

ভগবান -- আমাদের পিতা ;

ঐখানে ম'রে আছে

দ্বাপরের দ্বিপদ ধর্ম --

রক্ত ঝরে ফোটায় ফোটায় ...

শরবিদ্ধ হয়েছে তাঁর পা ৷




********************************************************************************************************



পরানসখা ব্রজবাসী

জন্ম: ২৬ অক্টোবর , ১৯৭৫ খ্রিস্টাব্দ | বর্ধমান জেলার গলসিতে  এরপর চার-বৎসর বয়সে সপরিবারে বোলপুরে৷অদ্যাবধি সেখানকারই বাসিন্দা । বাবা কৃষক| মা গৃহকর্মিণী । ১৮ বছর বয়স থেকে কবিতা লেখা শুরু প্রথম কবিতা 'মরু সাহারার বেদনা' শব্দের ঝংকার পত্রিকায় প্রকাশিত হয়  এরপর শতাধিক লিটল ম্যাগাজিন-এ লেখালখি শুরু  দরিদ্রতার জন্য মাঝেমধ্যে কবিতা লেখায় এবং পত্রিকা সম্পাদনায় বিরতি এবং দিবারাত্র পরিশ্রম  ২সেপ্টেম্বর ১০১২ `দেশ' পত্রিকায় প্রথম কবিতা প্রকাশ । পুনরায় অবর্ণনীয় দরিদ্রতার জন্য পত্রিকা-প্রকাশ এবং কবিতাচর্চা একেবারে বন্ধ  ভগ্নস্বাস্থ্য , ডায়াবেটিস, হৃদরোগ, অ্যাঞ্জিয়প্লাস্টি এবং দরিদ্রতা নিত্যসহযোগী ...জানুয়ারি ২০১৮ থেকে পুনরায় কবিতার জগতে প্রবেশ । দু'মুঠো অন্ন সংস্থানের নিশ্চয়তা থাকলেও  ভগ্নস্বাস্থ্য এবং টিন্নিটাস চিরসঙ্গী।খ্যাতির প্রত্যাশা নয়, যন্ত্রণাকে শিল্পে রূপান্তর ঘটাতেই এখন কবিতা লেখেন  তিনি বিশ্বাস করেন, প্রভুনাম শতবার লেখার সাথে সাথেই লেখা হোক শতকবির নামও । ভাগবতের পাশাপাশি পড়া হোক মরমীকবির কথা এবং তাদের অনশ্বর পঙক্তিসমুহ ।

               প্রকাশিত কাব্য: বধূ শ্যামলিমা, সম্পাদিত পত্রিকা: অরুন্ধতী

সম্মাননা: অর্ণব সাহিত্য সম্মান ,অকাদেমি অফ বেঙ্গলি পোয়েন্ট্রি'র সারস্বত সম্মান ,সৈকত সাহিত্য অকাদেমি'র শিশির চক্রবর্তী স্মৃতি সম্মান,অনন্যে অভিধা সৃজনী আকাদেমী'র ঋষি বঙ্কিম স্মারক সম্মান ।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন