স্বপ্নদীপ রায় / দু'টি কবিতা
অবুঝ বসন্ত
অনেকক্ষণ পর শান্ত হল চারপাশ!
ঝড় এলে তোলপাড়টা বেগতিক ঢুকে পড়ে
অচিনপুরের একরোখা দরজাটা দিয়ে,
ওই চাবিকাঠি আমার আওতাভুক্ত নয়--
শুধু চাবিখোলার একটা মৃদু শব্দ শোনা যায়--
হাওয়ার তোড়ে ভেসে যাওয়া মেঘের মত
কাটাঘুড়িটা উথলে যায় পাঁচিল টোপকে ওপারে--
নখের কোণ নিরীক্ষণ করি অতদ্পর;
একটা কালো রাতপাখির গনগনে লাল ঠোঁট চিরে ফালাফালা করে দিয়েছে সুন্নত--
এখন ছেঁড়া হৃদপিণ্ড মায়ের ছেঁড়া শাড়িতেই
যেটুকু লেগে আছে জান্নাত--
আরও অনেক টন পাথর এখনও বুকে ধরা বাকি---
ফস্ করে তালা ঠেলে যথাস্থানে ফিরে গেল
দস্তুরমত দুর্যোগ--
এখন তোমার আকাশ আমার বিছানার মতই আলুথালু --
এঁদো গলিতে স্তনচাপা এঁটো ঘায়ের কিছু আবছা অনুযোগ!
তবু জানতে ইচ্ছে হয় ---
যে বারুদে জ্বলছে মোর ভাদর
সে আগুন কী তছনছ করেনি তোমারও শ্রীঘর?
অনেকক্ষণ পর শান্ত হয়েছে চারপাশ--
চায়ের জল বসিয়েছি সবে;
--এখন এসব প্রসঙ্গ থাক!
স্বরবর্ণ
এই যে দাঁড়িয়ে
আড়াই ফুট ব্যাসার্দ্ধের উপর ছ'ফুটের একটা কাণ্ড --
চূড়ায় তার কুণ্ডলীপাকানো এক অর্বুদের হিসেব--
প্রত্যঙ্গে শিরায় স্নায়ুতে পাকুড়--
ভদ্রাসনে পূর্বপুরুষের গাঙ্গেয় রক্ত!
হাত ছড়ালেই উড়ে যায় নীলাচলের পাখি
হৃদয়ে ওঠেনামে অনির্বাণ একটা সূর্য--
চামড়ায় শাপলার মত জড়িয়ে জাপটে
ছায়া ছায়া নির্মেদ গন্ধ--
এই স্তবেই তোমার আমন্ত্রণ--
মেলে ধর হে ভূমা!
তোমার সর্বোৎকৃষ্ট ভাস্কর্য--
সাক্ষী হতেই গ্রীবার নীচে উঠেছে বৈশালী ঢেউ
কর ছুঁয়েছে এ রাঙা গোধূলি আবাল্য---
নাভি থেকে নির্বাণের পথে উন্মোচিত হোক
আড়ালের প্রথম স্বরবর্ণ!!
*******************************************************************************************************


কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন