বুধবার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০২২

গৌরীশঙ্কর দে



গৌরীশঙ্কর দে / দু'টি কবিতা

মেলবোর্নের ছেঁড়া পাতা-১








আমার শরীরে কোনো মেলানিন নেই।

মেলবোর্ন ছিঁড়েছে হাইপোথ্যালামাস,

আমি সদ্য পদ্য লিখে পোস্ট করে দেই,

পঙ্কজ পাঠক ভালোবাসেন প্রয়াস। 


আমার চিৎকারে চিল কান্না ভুলে যায়।

ছাদের কার্ণিশে এসে কিছুক্ষণ বসে,

তারপর উড়ে যায় দিগন্তরেখায়...

বিছানায় উঠে আসি পা মুছে পাপোষে।


মধুসূদনের কাছে রামকৃষ্ণ কেন

নীরব রয়ে গেলেন ভাবি সেই কথা!

স্বপ্নে দেখা দিয়েছেন রামপ্রসাদ সেনও,

অথচ করিনি তাঁকে জীবন দেবতা। 


সনেটের বনেটে কি পাপ ছিলো কোনো,

গিরিশ কি লুকোয়নি বোতল কখনো? 












মেলবোর্নের ছেঁড়া পাতা-


ঘৃণা দিয়ে ধুতে হবে আমার জীবন।

দয়া নয় মায়া নয় আবেগকুসুম

আমার বাগান জুড়ে ফুটেছে নিঝুম,

ইয়ারার জলে স্নাতা শুভ্র মেলবোর্ন। 


আমাকে রূপালী রোদে নারীর বিজন

সৌন্দর্য, প্রাতঃভ্রমণে নিয়ে গিয়ে জ্যুম

করে দেখিয়েছে নারী শরীরেতে ঘুম,

কোথায় কোথায় থাকে, কি ভাবে চুম্বন


দিয়ে তা জ্বালালে তবে ঘুম নামে চোখে,

মুঠো মুঠো অ্যালপ্রাক্স খায় ভদ্রলোকে?


'জীবন অপার জোফ্রি গুরুমুল শোনো।'

কানে কানে বলে গেল মেলবোর্ন যেন,

রবীন্দ্রনাথের কথা ভাবিনি তখনো,

নন্দিনী এসেছে সঙ্গে বনলতা সেনও!


টিকা: জোফ্রি গুরুমুল (Geoffrey Gurumul Yunupingu) একজন অন্ধ গায়ক ও সঙ্গীতকার। জন্ম: ২২শে জানুয়ারি ১৯৭১  মৃত্যু: ২৫শে জুলাই ২০১৭ ইনি অস্ট্রেলিয়ার প্রাচীন আদিবাসী (Aboriginal) সম্প্রদায়ের মানুষ। মূলতঃ গাল্পু (Galpu) ও গুমেজ (Gimatj) এ-ই দুটি আদিবাসী ভাষায় সঙ্গীত রচনা করে গীটার সহযোগে গাইতেন। মৃত্যুর পরে তাকে ডক্টরেট উপাধিতে ভূষিত করা হয়।


*************************************************************************************************



গৌরীশঙ্কর দে 

বাংলা কবিতায় একটি পরিচিত নাম ছন্দকুশলী এই কবি প্রতিনিয়ত আমাদের কাব্যপিপাসা পরিতৃপ্ত করে চলেছেন নির্বাচিত কবিতাসহ এ পর্যন্ত আটটিরও বেশি কাব্যগ্রন্থ তিনি রচনা করেছেন তাঁরকয়েকটি উল্লেখযোগ্য  কবিতার বই ---অশ্রু প্রপাতের নিচে * স্খলিত স্বপ্নের নীড় * ভাষামাতৃক্রোড়*আদিসপ্তগ্রাম * আশির বাদকের পত্রলেখা*অনৈশ্বর্য * নির্বাচিত কবিতা* 
আমার নিভৃতাবাস 



কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন