সাধন চৌধুরী / দু'টি কবিতা
মুদ্রণের অফসেট
মখমলের আভিজাত্যে বাস শিল্পিত স্বভাব
সিল্কের মিহিন পর্দার আড়াল, অন্তর্বাস
নেমে এসো বর্ণপরিচয়হীন ধূসর
মাটিময় সমতটে । অঘোষিত সম্রাট এই ঘাসমাঠ
অপরিচিত তোমার, তবু নান্দীমুখ রচে ।
স্বনির্বাচিত সমগ্র কবিতা পরিশীলিত শ্রোতা
ফ্লুরোসেন্ট আলো ঝলকানির বর্ণালীতে ভাসো
ব্রহ্মতেজে শব্দবন্ধ ভেঙে গ'ড়ো , অল্পজন হিতায়
কবিজনোচিত আত্ম-অহমিকা ,ধৃষ্টতাহীন কিছুটা তবু……
দূরান্বয়ী বল্গাহীন , মাথার ওপর বেগবতী তারা- খসা আলো সরে যায়
শব্দদ্যুতি, অপেক্ষা আনত
মূঢ় ভেড়ির দল নীচে , ঘনিষ্ঠ আঁধারে স্থানু
বোঝেনি বিলকুল এ শিল্পের রম্য কারুকৃতি
অতিসূক্ষ্ম বোধ , ব্লেডের দু-ফলা ধার
কারুবাসনা মুখ তোলে , মুদ্রণের অফসেটে ।
অলৌকিক ঘ্রাণ
নির্জন অরণ্যভূমে বৃক্ষও যৌনতা ভিক্ষু
স্বতঃস্ফূর্ত ডেকেছিলে তাই
বয়সের অঙ্ক এক অকপট সংশয়
ভাটাপড়া রমণের সুখ অভ্যস্ত সংযম , তবু
হে নির্জন কপোতী বাসনা, পাশাপাশি কিছুক্ষণ
হাতের মুঠিতে হাত, অনেক চোখের বিড়ম্বনা স'য়ে
আড়ষ্ট ছুঁয়েছি, ফিরেছি নিস্পৃহ একা
আপনার জানালার কোণে ঘুণ পোকা
দুঃখী নিবিষ্ট মাকড় । একা জাল বোনা ।
রোদ ডাকে বারান্দায় শীতের সম্মোহ ওম
কখনও গোধূলি বিকেলের আলপথ
দেখা হয় শামকল পাখি, জমির জলায় হাঁটে
লম্বা পা ফেলে, ডাহুকের ডাক যেন কান্নার সানাই
কান্না ছোঁয়াচে বড়ো, আমি তো প্রণয়ী নই
লজ্জায় চোখ মুছি, সম্মত ফসলের ক্ষেত ছাড়া
আর কোনো সাক্ষী নেই। সন্ধ্যার আবছা আলোয়
হরিত্ রঙের শাড়ি হাঁটে, তুমি নও প্রিয়ংবদা
তোমার ফেলে যাওয়া স্মৃতির আল্পনা -রেখা
সদ্যপাকা বাসমতী, সন্নত মাটির মুখে চায়
তবু মন খালি নয়, অলৌকিক ঘ্রাণ নিয়ে ফিরি ।
****************************************************************************************************
মূল নাম,সাধন চৌধুরী, বাড়ি, আসানসোল, করুণাময়ী হাউসিং,প্লট_২৩,পোঃঅঃ,রামকৃষ্ণ মিশন, বিবেকানন্দ সরনি,পশ্চিম বর্ধমান। অবসরপ্রাপ্ত কলেজ টিচার। বাংলা ভাষা ও সাহিত্য নিয়ে স্নাতকোত্তর, বিশ্বভারতী। প্রকাশিত কোনো কবিতার বই নেই।




দুটো কবিতাই ভীষণ ভালো লাগলো। শুভেচ্ছা জানাই।।
উত্তরমুছুন