বুধবার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০২২

গল্প * দেবাংশু সরকার

 



ফিরে  পাওয়া  

দেবাংশু সরকার 

                         

                           এক

   

ইয়ার প্লাগটা কানে গুঁজে নিজের মনে গান শুনতে শুনতে হেঁটে চলেছে কুন্তল। শুধু গান শুনছে না, সেই সঙ্গে শিষ দিতে দিতে চলেছে সে।

 "কুন্তল দাঁড়াও। কুন্তল। মিস্টার হ্যামলিন। ও বাঁশরিয়া, দাঁড়াও।" চিৎকার করতে করতে দৌড়ে আসছে সাথী। দৌড়াতে দৌড়াতে এসে কুন্তলের হাতটা ধরে। ঘুরে তাকায় কুন্তল। কান থেকে ইয়ার প্লাগটা খুলে পকেটে রাখে।

  - থামলে কেন আমার কেষ্ট ঠাকুর? বাজাও তোমার বাঁশি।

  - কি হবে বাঁশি বাজিয়ে! সামনে যমুনাও নেই, কদম গাছও নেই।

   - কে বলেছে নেই? আছে, আছে, সব আছে। আমার চোখের দিকে তাকিয়ে দেখো। আমার কাজল কালো চোখে তোমার যমুনার কালো জলকে ঠিক খুঁজে পাবে। দেখো, একেবার তাকিয়ে দেখো।

      - ওগো কাজল নয়না হরিণী, যমুনাতো দেখালে, কিন্তু কদম গাছ?

      - সেটাও আছে। মনের চোখ দিয়ে দেখো, ঠিক খুঁজে পাবে।

     - সে না হয় আছে। কিন্তু সমস্যা যে অন্য জায়গায়!

      - কি সমস্যা?

      - রাধাটা যে ছিটিয়াল! কখন কি করে বসবে কেউ জানে না। একেবারে আনপ্রেডিক্টেবেল!

      - এই আমাকে রাগানোর চেষ্টা করবে না। তাহলে আমি বাড়ি ফিরে যাবো।

      - বাড়ি যাবে? চলো আমিও যাবো। এখনো কাকু কাকিমার সঙ্গে আমার আলাপ হলো না।

      কোনো উত্তর না দিয়ে চলতে চলতে কথা থামিয়ে সাথী গান ধরে,

      "সখী ভাবনা কাহারে বলে,

      সখী যাতনা কাহারে বলে...।"

      চমৎকার গানের গলা সাথীর। গেয়ে চলেছে সে,

       "...সখী ভালোবাসা কারে কয়..."

      গলা মেলায় কুন্তল,

      "সেতো অ্যাড্রিনালিন ক্ষয়।"

      গান থামিয়ে লাফ দিয়ে দু ফুট সরে যায় সাথী। তর্জনী তুলে গর্জন করে, "চুপ করো, শব্দহীন হও।" পরক্ষণেই আবার কুন্তলকে বলে, "একটা গান গাও। প্রেমের গান, ভালোবাসার গান। কাছে টানার গান।"

      - গান গাইতে গেলামতো। তুমি থামিয়ে দিলে কেন?

      - ইয়ার্কি মেরো না। গাও একটা গান। তুমি আমাকে কতটা ভালোবাসো, একবার গান গেয়ে বুঝিয়ে দাও।

      গান ধরে কুন্তল,

      "তোমায় কি কোনো দিন বলেছি,

       ভালোবাসি আমি তোমাকে?

       কেন তুমি ভেবে নিলে,

      তোমার প্রেমিক আমাকে?..."

      কুন্তলের গান শেষ হতেই, সাথী গান ধরে। একই সুরে, একই ছন্দে, একই লয়ে। কিন্তু ভিন্ন কথায়।

      "মোট, কজনকে তুমি বলেছো,

      ভালোবাসি আমি তোমাকে?

      এখন দেখি, সুযোগ বুঝে,

      লেঙ্গি মারছো আমাকে।"

      এবার কুন্তল চেঁচামেচি জুড়ে দেয়, "এই না, না, একদম বিলো দ্য বেল্ট হিট করবে না।"

      "কেন? তুমি দশ হাজার বার ম্যাসেজ করে জানিয়েছো আমাকে ভালোবাসো। দশ লাখ বার হোয়াটস অ্যাপে লিখেছো আমাকে ভালোবাসো।  দশ কোটি বার আমার কানে কানে বলেছো আমাকে ভালোবাসো। আর এখন উল্টো সুর গাইছো! দাঁড়াও দেখাচ্ছি মজা!" পাল্টা ধমকানি দেয় সাথী।

      - ঠিক আছে, আর একটা ভালোবাসার  গান গাইছি। একটু পুরানো গান। তবে খুব হিট গান।

      "তুমি এসেছিলে পরশু,

      কাল কেন আআসোওওনি?..."

      গানের সাথে শরীর দোলাতে থাকে কুন্তল। সাথী হাত পা ছুঁড়ে তার মনের ভাব প্রকাশ করতে থাকে।

      তপ্ত দুপুরে, নির্জন রাস্তায়, বহির্জগৎ থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন দুজন, নিজেদের মধ্যে একাত্ম হয়ে হেঁটে চলেছে। কিছু হাসি, কিছু গান, কিছু রাগ, কিছু অনুরাগ, কিছু এলোমেলো কথাকে সঙ্গী করে। একেই কি বলে প্রেম? 


                          দুই 

    

       পাড়ার লোকজন বলাবলি করে রজত বাবু জীবনে কিছু করতে পারুক বা না পারুক ছেলে দুটোকে মানুষের মত মানুষ করেছেন। বড় ছেলে কল্যাণ  এম, এ, পাশ করে একটা কলেজের লেকচারার। সেই সঙ্গে প্রচুর ছাত্র ছাত্রীকে প্রাইভেটে পড়ায়। কল্যাণের ছাত্র ছাত্রীদের ভিড়ে তাদের বাড়ি সকাল সন্ধ্যায় গমগম করে। ছাত্র ছাত্রীদের মধ্যে সে বেশ জনপ্রিয়। সেটা কেবল মাত্র ভালো পড়ানোর জন্য নয়। প্রতি বছর সে ছাত্র ছাত্রীদের কাছে পিঠে কোথাও ঘুরতে নিয়ে যায়, সম্পূর্ণ নিজের খরচায়।

      অন্যদিকে রজত বাবুর ছোট ছেলে কুন্তল আই আই টি খড়্গপুরের ছাত্র। তার পড়াশোনা প্রায় শেষের দিকে। এরমধ্যে ক্যাম্পাস ইন্টারভিউ দিয়ে চাকরি জোগাড় করে নিয়েছে। পড়াশোনা শেষ হলেই সে পাড়ি দেবে আমেরিকায়। বেশির ভাগ সময়েই তাকে খড়্গপুরে থাকতে হয়। অবশ্য মাসে দু এক দিনের জন্য সে বাড়িতে আসে। তখন সে হৈচৈ করে বাড়ি মাতিয়ে রাখে। মিশুকে স্বভাবের ছেলে কুন্তল তার দাদার ছাত্রদের সঙ্গে মিলে মিশে আড্ডা দেয়। এমন একদিন কুন্তলের সঙ্গে দেখা হয় সাথীর। কলেজ পড়ুয়া সাথী কিছু দিন হলো কল্যাণের কাছে পড়তে এসেছে। দৃষ্টি বিনিময় হয় দুজনের। কল্যাণের আরো অনেক ছাত্রীর সঙ্গে কুন্তলের আগে আলাপ পরিচয় হয়েছে। তাদের সঙ্গে সে কথা বলেছে, মজা করেছে। কিন্তু আজ কেমন যেন অন্য রকম অনুভূতি হচ্ছে তার। কি রকম সে নিজেও বুঝতে পারছে না। তার চোখ আটকে গেছে সাথীর চোখে। দুজনেই চুপ করে আছে। কেউ কোনো কথা বলতে পারছে না। যেন দুজনের স্নায়ুতন্ত্র দিয়ে অজানা কোনো শ্রোত বয়ে চলেছে। দুজনেই দাঁড়িয়ে আছে পাথরের মূর্তির মত। কেউ এগিয়ে আসতে পারছে না। আবার পিছিয়ে যেতেও পারছে না। অর্থাৎ দুজনেই আক্রান্ত হয়েছে প্রেম রোগে। অবশেষে দুজনের সম্বিত ফেরে অনান্য ছাত্রদের কোলাহলে। এরপর যখনই কুন্তল বাড়িতে আসে, দুজনকে একত্রে দেখা যায় কোনো পার্কে, কোনো নির্জন রাস্তায়।

      প্রতি বছরের মত এবারেও কল্যাণ ব্যবস্থা করেছে তার ছাত্র ছাত্রীদের নিয়ে বাৎসরিক ভ্রমণের। এবার তারা যাবে পুরুলিয়া। কুন্তলও এবার যাবে বলেছে। আগে কোনো বার না গেলেও, এবারে সে ভীষণ আগ্রহী এই ভ্রমণের ব্যাপারে। আসল কারন অন্য হলেও, মুখে বলছে, সামনের বছর সে বিদেশে চলে যাবে। আবার কত বছর পর সে দেশে ফিরবে তার ঠিক নেই। সেই জন্য সে এই দু দিন ওদের সঙ্গে আনন্দ করতে চায়।

      বেশ সকালেই বাস ছেড়েছে। যেতে হবে প্রায় আড়াইশো কিলোমিটারের মত। ছাত্র ছাত্রীরা গান গেয়ে, হৈচৈ করে মাতিয়ে রেখেছে। মাঝে মাঝে কুন্তলও গান গাইছে। ক্রমশ সহর, সহরতলী ছেড়ে বাস এগিয়ে চলেছে লাল মাটির দিকে। লক্ষ বড়ন্তি লেক হয়ে গড় পঞ্চকোট। সেখানের এক রিসর্টে রাত কাটিয়ে পরের দিন ফেরা। ছুটে চলেছে বাস, ক্রমশ মাটির রং পরিবর্তিত হচ্ছে। পরিবর্তিত হচ্ছে আকাশের রং। একটা দুটো করে দেখা মিলছে পলাশ গাছের। যত এগিয়ে আসছে বড়ন্তি লেক, তত বাড়ছে পলাশ গাছের সংখ্যা। বাস দাঁড়ালো বড়ন্তির কাছে। শয়ে শয়ে পলাশ গাছ লালে লাল হয়ে উঠেছে। পলাশ রাঙা প্রকৃতি যেন চোখ ধাঁধিয়ে দিচ্ছে। পলাশের রূপ দেখে বিমোহিত হয়ে উঠেছে সবাই।উচ্ছ্বসিত সাথী কুন্তলকে প্রশ্ন করে, "হোলি কবে?"

 - এখনো সাত দিন দেরি আছে।

- কিন্তু ওখানেতো হোলি খেলা শুরু হয়ে গেছে।

- কোথায়?

      - ঐতো ওখানে। দেখো, দেখো, ভালো করে দেখো পলাশের থেকে আবির নিয়ে মেঘ বালিকারা রং খেলছে আকাশ গঙ্গায়। যাবে, ওখানে যাবে? ওদের সঙ্গে রং খেলতে?

      - কি ভাবে যাবে?

     - চলো না যাই দুজনে। সাদা মেঘের ভেলায় চড়ে। পলাশ রাঙা, রঙের বন্যায় আমার মিশে যেতে ইচ্ছা করছে। তুমি যাবে?

     - সাথী তোমার ব্যাগে জলের বোতল আছে?

     - পিপাসা পেয়েছে?

     - না, পিপাসা পায় নি। তবে তোমার বকম বকম শুনে খুব পেট কামড়াচ্ছে। দেখি যদি জল খেলে কমে!

     - ধ্যাৎ!


                         তিন

 

দেখতে দেখতে দিন এসে গেল কুন্তলের আমেরিকা যাওয়ার। উজ্জ্বল ভবিষ্যত তাকে হাতছানি দিচ্ছে। বাড়ির সবাই খুব আনন্দিত।কেবল কুন্তলের মা কিছুটা মন মরা। কুন্তল তার মাকে বোঝায় যে পৃথিবী এখন গ্লোবাল ভিলেজ। ফোন করলেই তার সঙ্গে কথা বলা যাবে।   এমনকি তাকে দেখাও যাবে। তাছাড়া বড়দিনের ছুটিতে সে বাড়ি আসবে। আরো একজনের মন খারাপ। মাঝে মাঝেই কয়েক ফোঁটা জল চোখ থেকে গড়িয়ে নেমে আসে। এতো দুরে যাচ্ছে কুন্তল! তাকে ভুলে যাবে নাতো? অন্য কেউ এসে যাবে নাতো কুন্তলের জীবনে? 

     কুন্তল সাথীকে তার সঙ্গে নিয়ে যেতে চায়। বলে, "চলো না আমার সঙ্গে। একটা নতুন দেশে গেলে তোমার ভালো লাগবে। আমারো ভালো লাগবে। ভয়ের কিছু নেই। ওখানে অনেক ভারতীয় আছে। এমনকি বাঙালীও আছে। যাবে?"

      - আমার গ্র্যাজুয়েশনটা কমপ্লিট হতে দাও। তারপর না হয় পরের বছর দেখা যাবে।

     লাগেজ গুছিয়ে সাত সমুদ্র তেরো নদী পার হওয়ার জন্য বেরিয়ে পড়ে কুন্তল। শুরু হয় তার কর্মজীবন। কুন্তলের মনে হয় বড় অদ্ভুত এই দেশ। কাজ, কাজ, আর কাজ। সবাই ব্যস্ত কাজ নিয়ে। গল্প, আড্ডা, ঘোরা বেড়ানোর সুযোগ যে নেই তা নয়। তবে সব কিছু কাজের পরে। অলসতার কোনো জায়গা নেই এখানে। হয়তো সেই জন্যই দেশটা এত উন্নতি করেছে। কাজের মধ্যে থেকে সময় যে কখন কেটে যায় সে বুঝতেই পারে না।

      প্রায় পৌনে দুবছর চাকরি করার পর বড় দিনের এক মাসের ছুটিতে দেশে ফেরে কুন্তল। হৈ হুল্লোড়ে মেতে ওঠে। সাথীর সঙ্গে চলে গল্প, আড্ডা, বেহিসেবি ঘুরে বেড়ানো। আনন্দের দিনগুলো যেন তাড়াতাড়ি শেষ হয়ে যায়। সময় এসে যায় তার কর্মস্থলে ফেরার। এবারেও সে সাথীকে বলে, "চলোনা সাথী আমার সঙ্গে। খুব সুন্দর জায়গা। এখানের থেকে অনেক ফাঁকা, নিরিবিলি। প্রচুর বাঙালি পরিবারের সঙ্গে আমার আলাপ পরিচয় হয়ে গেছে। সেখানে গেলে যেমন উন্নত জীবন যাত্রা পাবে, তেমন বাঙালি পরিবেশ পাবে।"

      "না। বিদেশে যেতে ইচ্ছা করছে না। শুনেছি, বিদেশের এয়ারপোর্টে চেকিংয়ের নামে বিশ্রিভাবে গায়ে দেয়। শুনেই লজ্জায় আমার চোখ, কান বন্ধ হয়ে আসছে। যাবো কি করে? না, না, বাবা ওসবে আমি নেই। তার চেয়ে ভালো তুমি ফিরে এসো। এদেশে কি চাকরি নেই? নাকি এদেশের লোকজনরা কাজকর্ম করে না। হ্যাঁ এটা ঠিক যে ওখানে আয় বেশি। তেমনি খরচও বেশি। তার চেয়ে ভালো পাকাপাকি ভাবে দেশে ফিরে এখানেই কিছু করো।" উত্তর দেয় সাথী।

     কিছুতেই রাজি হয় না সাথী। অগত্যা কুন্তল আবার একাই ফিরে যায়। আমেরিকা থেকে সে মাঝে মাঝে বাড়িতে এবং সাথীকে ফোন করে। তবে এবার যেন সাথীকে কুন্তলের ফোন করাটা ক্রমশ কমে আসছে। আগে যেখানে সপ্তাহে দু-তিন বার ফোন করতো। এখন সেখানে মাসে দু- একবার করে। দিনের পর দিন ফোন আসছে না দেখে ধৈর্য হারিয়ে একদিন সাথীই ফোন করে।

     - কি খবরগো তোমার? দু সপ্তাহ হয়ে গেল ফোন করছো না! কি করছো এখন? 

     - কিছুই করছি না। এখন এখানে সন্ধ্যা। অফিস থেকে ফিরে, খাওয়া দাওয়া সেরে, বিছানায় শুয়ে তোমার কথা ভাবছি। তোমার কথা ভাবতে ভাবতে রাত কেটে যায়। সারা রাত ঘুম হয় না। সকালে অফিসে গেলে ঝিমুনি আসে। বসের কাছে ঝাড় খেয়ে ঝিমুনি কাটে। মাসের পর মাস একা থাকতে আর ভালো লাগছে না। এক্ষুনিতো আর সব কিছু ছেড়ে দেশে ফিরতে পারছি না। জানিনা এভাবে কতদিন চলবে!

     সামান্য কিছু কথা বার্তার পর ফোন ছেড়ে দেয় সাথী। তার মনে হয় কুন্তল যেন কথা বলতে চাইছে না। তার মধ্যে যেন সেই আবেগ, উচ্ছ্বাস আর  নেই। কেমন যেন দায় সারা ভাব। 

     বেশ কিছুদিন যোগাযোগ বন্ধের পর হঠাৎ একদিন কুন্তলের ফোন এলো। ফোনটার উপর প্রায় ঝাঁপিয়ে পড়লো সাথী।

     - কি করছো সাথী? কেমন আছো?

     - কি আর করবো! পড়াশোনা শেষ করে ঘরে বসে আছি। ভাবছি কবে তোমার ফোন আসবে।

     - হ্যাঁ, ঠিকই বলেছো। এখনতো সব কিছুই ফোনে বা কম্পিউটারে। ভালোলাগা, ভালোবাসা, মন দেওয়া নেওয়া সব কিছুইতো অন লাইনে। কিন্তু সাথী তার পরেওতো কিছু থাকে। তারজন্য দুজনকে কাছে আসতে হয়, ঘনিষ্ঠ হতে হয়। শরীরের চাহিদাকে তুমি অস্বীকার করতে পারো না। সব কাজ অন লাইনে হয় না সাথী, কিছু কাজ পড়ে থাকে অফ লাইনের জন্য। এরমধ্যে আমি একটা কাজ করেছি। একজন লম্বা চওড়া, হেলদি মেম সাহেবকে বিয়ে করেছি। খুব সুন্দর চেহারা। তোমরা যাকে বল হাইলি সে...। যাকগে ওসব কথা ছাড়ো। তবে তুমি চিন্তা কোরো না, তুমিই আমার একমাত্র প্রেম। ঐ জায়গাটা স্রেফ তোমার জন্য। কথা শেষ করেই স্বভাব গায়ক কুন্তল গেয়ে ওঠে,

     "তুমি আমার প্রেম,

      চৈত্র দিনের পাতা ঝরার সময়,

      মুকুল ফোঁটার প্রত্যাশা,

      তুমি আজ আমার মনের

      অনন্ত আশা।"

      কয়েক কলি গেয়ে চুপ করে যায় কুন্তল। অপেক্ষা করতে থাকে সাথীর প্রতিক্রিয়ার জন্য। চুপ করে থাকে সাথীও। কোনো প্রতিক্রিয়া আসে না তার দিক থেকে। অন্য সময় হলে পুরো গানটা শোনানোর জন্য বায়না করতো। কিন্তু এই সাথী যেন মানুষ নয়। ভাবলেশহীন এক পাষাণ প্রতিমা। কোনো কথা, কোনো সুর, কোনো ছন্দ তার মনকে ছুঁতে পারছে না। কোনো কথা বলতে পারছে না সে। কোনো কথা শুনতে পাচ্ছে না। ফোনটা ছাড়তে পারছে না। আবার ধরে রাখতেও কষ্ট হচ্ছে! ভীষণ কষ্ট হচ্ছে!

     সাথীকে চুপ করে থাকতে দেখে কুন্তল বলে ওঠে, "ঐ মোটাসোটা হেলদি মেম সাহেবের প্রতি আমার মনে কোনো প্রেম ভালোবাসা নেই। স্রেফ ঐ যাকে বলে অফ লাইন জবের জন্য বিয়ে করেছি।"

      কথাগুলো শুনে সারা শরীর ঘিনঘিন করে ওঠে সাথীর। সে ভাবে, মানুষ এতো নির্লজ্জ হতে পারে! সারাক্ষণ শরীর শরীর করে গেল! কি আছে শরীরে? কি থাকবে শেষের সেদিন? একমুঠো ছাই আর ধোঁয়া হয়ে উড়ে যাওয়া কিছুটা কার্বন ছাড়া? এরজন্য কুন্তল সাথীকে ভুলে গেল! অতীতের স্মৃতিগুলো সব মুছে গেল! ভালোলাগা, ভালোবাসা, আবেগ, অনুভূতি, মন দেওয়া নেওয়া সব মিথ্যে হয়ে গেল! আর ভাবতে পারছে না সে।

      সম্পূর্ণ একা হয়ে গেছে সাথী। সারাদিন ঘরেই থাকে। কোথাও যায় না। একবার ভাবে কুন্তলকে ফোন করে দেখবে। আবার ভাবে, কি লাভ! ফোনটাকে হাতে নিয়ে নাড়াচাড়া করে রেখে দেয়। বেশ কিছুদিন পর, হঠাৎ একদিন আসে কুন্তলের ফোন। কিছুটা দোটানায় পড়ে যায় সাথী। ভাবতে থাকে ফোনটা ধরবে কিনা। দেরিতে হলেও ফোনটা ধরে।

      - সাথী, একবার এদেশে আসবে? তুমি আমাকে এতো ভালোবাসো, অথচ আমি কেমন সংসার করছি একবার দেখবে না? একবার এসো প্লীজ। অন্তত কয়েক দিনের জন্য। আমি আমার কাজ করবো, তোমরা দুই সখীতে গল্প করবে, ঘুরে বেড়াবে। মেম সাহেব এখন কিছুটা বাংলা বলতে, বুঝতে পারে। ওর টেনে টেনে বলা বাংলা শুনলে তুমি মজা পাবে।

      - সখী! কে সখী? কার সখী? এই সব বাজে কথা বলার জন্য আর আমাকে ফোন করবে না।

      কলটা কেটে দেয় সাথী। তার দুচোখ দিয়ে নেমে আসে জলের ধারা। ক্রমশ নিজেকে গুটিয়ে নেয় সাথী। বাড়িতেও কারো সাথে খুব একটা কথা বলে না। সারাদিন ঘরে বসে থাকে। মাঝে মাঝে ফোনটা নিয়ে নাড়া চাড়া করে।   হয়তো অপেক্ষা করে থাকে একটা বিশেষ কলের জন্য। সে ভেবে পায় না সবকিছু যখন শেষ হয় গেছে, তার পরেও সে কেন তাকিয়ে থাকে ফোনটার দিকে? আবার কলটা এলেও তার কথা বলতে ইচ্ছা করে না। মাঝে মাঝে তার আকাঙ্ক্ষিত কলটা আসে। তখন সে ভেবে পায় না কি করবে? ধরবে, নাকি কেটে দেবে! ইতস্তত করতে করতে কলটা ধরে। কথা বলে কম, শোনে বেশি। আজও এসেছে কলটা। অপর দিকে সেই চেনা কণ্ঠস্বর।

      - সাথী, পুরানো দিনের স্মৃতিগুলো বারে বারে এসে আমাকে যেন রাঙিয়ে দিয়ে যায়। তোমার মনে পড়ে সেই সব দিনগুলোর কথা? কত মাঠে, ঘাটে, রাস্তায়, পার্কে আমরা আড্ডা মারতাম, গল্প করতাম! কত রেস্টুরেন্টে আমরা খেতে গেছি। তুমিতো কিছুই খেতে না, কেবল ডবল ডিমের অমলেট ছিল তোমার পছন্দ। রেস্টুরেন্টের সেই ছেলেটাকে মনে পড়ে, যে অমলেট কে মামলেট বলতো? শুনে তুমি হেসে গড়িয়ে পড়তে।

      - সব মনে আছে আমার। তবে তোমার মনে আছে দেখে অবাক হচ্ছি! 

      - এতে অবাক হওয়ার কি আছে? এটা ঠিক যে আমি বিয়ে করেছি। কিন্তু বিয়ে আর ভালোবাসাতো এক নয়। তুমি আমার ওয়ান অ্যান্ড অনলি লাভ। দেখবে একদিন ঠিক তোমার কাছে ফিরে যাবো। তবে তোমার ডবল ডিমের অমলেটের মত, এখন আমার জীবনে আর একটা ডবল এসেছে। মানে আমার ডবল বাচ্চা হয়েছে। মানে টুইন বেবি। প্লীজ কনগ্র্যাজুলেট মি।

      মুখ থেকে কোনো কথা বের হয় না সাথীর। কোনো রকমে ফোনটা ছাড়ে। ক্রমশ যেন জীবন্ত মৃত দেহে পরিণত হচ্ছে সে। তার বাবা মায়ের দুশ্চিন্তা বাড়তে থাকে। তারা সাথীকে বারে বারে বোঝানোর চেষ্টা করেন। তাকে আবার স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে বলেন। অন্যত্র বিয়ে করে সুস্থ স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে বলেন। তা না হলে তারাও যে শান্তিতে মরতে পারবেন না।

      অনেক বোঝানোর পর বয়স্ক বাবা মায়ের দুশ্চিন্তার কথা ভেবে সম্মতি দেয় সাথী।  সে ভাবে যা ঘটে গেছে সেটাকে সে একটা  দুঃস্বপ্ন ভাববে। অতীতকে ভুলে সে এবার সামনের দিকে তাকাবে। সে ভাবে যদি তার জীবনে প্রেম না আসতো, কুন্তল না আসতো, কি তফাৎ হত? আর পাঁচটা মেয়ের মত দেখা শোনা করে তার বিয়ে হত, সংসার হত। সেভাবেই সে ভাববে এবার থেকে। কোনো পিছুটান রাখবে না।


                         চার


      শুরু হল দেখাশোনা। নির্বাচিত হল পাত্র। বিদেশে চাকরি করতো, কিছু দিন হল দেশে ফিরেছে। এবার দেশে থেকেই সফটওয়্যারের ব্যবসা করবে। কয়েক বছর বিদেশে চাকরি করে পুঁজির ব্যবস্থা করেছে। বিদেশে থাকাকালীন বেশ কিছু ক্লায়েন্ট, কাস্টমারের ব্যবস্থাও করে ফেলেছে। পাত্র পক্ষ নাকি আগে কোথাও সাথীকে দেখেছে, তাই আর ঘটা করে পাত্রী দেখতে আসবে না। এগোতে থাকে কথাবার্তা।

      সাথীর মা একদিন সাথীকে বললেন, "বিয়ে হচ্ছে সারা জীবনের ব্যাপার। তাই বলছি পাত্রের সঙ্গে একবার কথাবার্তা বলে নিবি? একটু চিনে বুঝে নিলে ভবিষ্যতে অনেক সুবিধে হবে।"

      "তিন চার বছরেই একজনকে চিনতে পারলাম না! কয়েক মিনিটে আর কি চিনবো? ওসবের দরকার নেই।" প্রায় আর্তনাদের মত শোনায় সাথীর কথাগুলো।

      একদিন সাথীর বন্ধু মিমি এসে সাথীকে পাত্রের একটা ফটো দেখিয়ে বললো, "দ্যাখ দ্যাখ কি সুন্দর দেখতে। কি সুন্দর লম্বা লম্বা দাড়ি! রাস্তার পাগলদেরও এত বড়, এত ঘন দাড়ি দেখা যায় না। দ্যাখ একবার দ্যাখ।"

      "তুই আর কাটা ঘায়ে নুনের ছিটে দিস না। যা এখান থেকে।" বলতে গেলে ধাক্কা দিয়ে মিমিকে ঘর থেকে বের করে দিয়ে দরজা বন্ধ করে দেয়।

      দরজার বাইরে থেকে মিমি বারে বারে বলতে থাকে, "রাগ করিস না, দরজা খোল। একবার দেখ, ফটোটা একবার দেখ।" কিন্তু মিমির কথায় কান দেয় না সাথী। বন্ধ দরজা বন্ধই থেকে যায়। এর পরেও মিমি সাথীকে কয়েক বার ফোন করে, কিন্তু প্রতিবার সাথী ফোন কেটে দেয়।

      বিয়ের দিন সন্ধ্যায়, মুখে পান পাতা চাপা দেওয়া, পিঁড়িতে বসা সাথীকে হাজির করা হল বরের সামনে। আস্তে আস্তে নামলো পান পাতা, খুললো চোখ। একি! কাকে দেখছে সে! দাড়ির জঙ্গলে মুখ ঢেকে গেলেও, এই চোখতো সাথীর চেনা। হাজার চেষ্টা করলেও এই চোখ সে ভুলতে পারবে না। বিস্ফারিত হয়ে ওঠে সাথীর চোখ জোড়া। মুখ থেকে অস্ফুটে বের হয়, "তুমি!"

      পাশ থেকে মিমি ফিসফিস করে বলে ওঠে, "সেদিন অত করে ফটোটা দেখতে বললাম দেখলি না, তাই আজ তোকে চমকাতে হল। ওসব মেম সাহেব টেম সাহেব সব মিথ্যে কথা। তোর বর একটা পাক্কা ঢপবাজ। আমাকে বলেছে ওর শখ হল অন্যকে মুরগি করা। সামনে অনেক লোকজন আছে। এখন চেপে যা। পরে সুযোগ বুঝে আচ্ছা করে কড়কানি দিবি।"

      - বলছিস?

      - হ্যাঁ।

      বিয়ের পর্বে সাথী আর কোনো কথা বলে নি।

      বর কনেকে এনে বসানো হল বাসর ঘরে। সঙ্গে চলতে থাকে মিমি অ্যান্ড কোম্পানীর কিচির মিচির।

      তারমধ্যে কুন্তল সাথীকে প্রশ্ন করে, "কেমন আছো সাথী?"

      সাথীর মনের মধ্যে এখন কাল বৈশাখীর ঝড় বয়ে চলেছে। রাগ, কপট রাগ, হারিয়ে ফেলা অনেক কিছু ফিরে পাওয়ার চাপা আনন্দ যেন মিলেমিশে একাকার হয়ে গেছে সাথীর মধ্যে। কুন্তলের দিক থেকে মুখ ঘুরিয়ে নিয়ে চড়া গলায় সে বলে, "একদম আমার সঙ্গে কথা বলবে না। একটা মিথ্যেবাদী, জালি মাল কোথাকার!"

      - কেন? আমি কি করেছি?

      - মেম সাহেব, ডবল বাচ্চা। কি এগুলো?

      - এই জন্য রাগ করেছো! আমার ছোট  থেকে স্বপ্ন ছিল একটা তাগড়া মেম সাহেবকে বিয়ে করবো। কিন্তু সে রাস্তাতো অনেক দিন আগে বিড়ালে কেটে দিয়েছে! সে স্বপ্ন আর সফল হবে না। কিন্তু মনের মধ্যে জমে থাকা স্বপ্ন মাঝে মাঝে মুখে চলে আসে। কি আর করা যাবে!

      - আর ডবল বাচ্চা?

      - ওটাতো তোমার পরীক্ষা নিচ্ছিলাম। তুমি বরাবর অঙ্কে কাঁচা। দেখছিলাম তোমার উন্নতি হয়েছে কিনা।

      - মানে?

      - তোমাকে জুন মাসে বললাম বিয়ে করেছি। আর নভেম্বরে বাচ্চা হয়ে গেল! হয় হিসেব করতে পারোনি, নয়তো...।

      - নয়তো কি?

      - মোবাইল ফোনে ফাষ্ট চার্জার চালু হয়েছে জানি। কিন্তু মানুষের মধ্যে ...! আমার জানা নেই। তুমি এ ব্যাপারে কিছু জানো?

      - চুপ করো। সব সময়ে মুখে আজে বাজে কথা। একটা বাজে, মর্কট মার্কা ছেলে। না বলে কয়ে চলে এসেছে বিয়ে করতে।

      - কেন? সবাইতো জানে। মিমিরা জানে, তোমার বাবা মা জানে, আমার বাড়ির সবাই জানে। তুমি আমাকে আর ভালোবাসো না, আমার খবর রাখো না। তাই জানো না যে আজ আমার বিয়ে।

      - এই বেরোওতো এখান থেকে। আমি আর বদার করতে পারছি না। আমার মাথায় আগুন জ্বলছে।

      - শান্ত হন দেবী। ক্রোধ সংবরণ করুন। মিষ্ট বাক্য প্রয়োগ দ্বারা পতি দেবতার মনোরঞ্জন করুন। পতি দেবতার পাদোদক পান করিয়া পুণ্য অর্জন করুন।

      - উঁ! পাদোদক! তোমার সেক্সি মেম সাহেবকে খাওয়াও।

      - অশ্লীল বাক্য প্রয়োগ হইতে বিরত থাকুন দেবী।

      - সব বুঝি আমি। লিকপিকে ভেতো বাঙালি, সেক্সি মেম সাহেবের সঙ্গে এঁটে উঠতে না পেরে চাকরি বাকরি সব ছেড়ে পালিয়ে এসেছে।

      দুজনের কথার মাঝে আচমকাই মিমি ঢুকে পড়ে। সে বলে, "জানো কুন্তলদা, সাথীর এখন বিদেশিনী সখী জুটেছে। তাই আমাদের আর পাত্তা দেয় না। একদিন দেখা করতে এসেছিলাম, আমাকে দুরদুর করে তাড়িয়ে দিয়ে, দরজা বন্ধ করে দিল। আর দরজা খুললোই না!"

      মিমি থামতে সাথী আবার কথার ছুরি চালাতে থাকে, "জুটেছেতো, আমেরিকান সখী জুটেছে। তার সঙ্গে কত কথা হয়! একদিন জিজ্ঞাসা করলাম  - তোমার হাবি এখন কি করছে? কি বললো জানিস? বললো - হাবি এখন খাবি খাচ্ছে।"

      দুকানে আঙুল দিয়ে কুন্তল বলে, "পুণঃ পুনঃ অশ্লীল বাক্য শ্রবণ করিয়া আমার কর্ণ যুগল কলুষিত হইতেছে।"

      - বুঝতে পেরেছি সাধু ভাষায় কথা বলার এই স্টাইল মেম সাহেব শিখিয়ে দিয়েছে। ঠিক আছে বৌভাতের ঝামেলাটা যাক, তারপরে দেখবো সেক্সি মেম সাহেবের সঙ্গে অফ লাইন জব করা ডবল বাচ্চার বাপের কত দম! 

      - বারংবার অশ্লীল মন্তব্য শুনিতে শুনিতে আমার হৃদ স্পন্দন বহুগুন বর্দ্ধিত হইয়াছে, মনে হয় অবিলম্বে এক সশব্দ বিস্ফোরণ ঘটিবে।

      - এবার থামতো তুই। অনেকক্ষন ধরে প্যাঁক প্যাঁক করে চলেছিস!

      "পতি দেবতাকে 'তুই' সম্বোধন! হায়, হায়, একি শুনিলাম! না, না,আর নয়! আর এই স্থানে আমি অবস্থান করিবো  না! ধরণী দ্বিধা হও। আমি অবিলম্বে পাতাল প্রবেশ করিবো।" কুন্তল কিছুক্ষণ মাটির দিকে তাকিয়ে থেকে আবার বলতে শুরু করলো, "ধরনী দ্বিধা হইলো না! আমাকে অবজ্ঞা করিলো! উত্তম, অতি উত্তম। আমি স্বয়ং খনন কার্য সম্পন্ন করিয়া পাতালে প্রবেশ করিবো। দেবীর সখীগণ আপনারা অনতি বিলম্বে কুড়ুল,  কোদাল সংগ্রহ করিয়া আনুন। এই বাসর গৃহ হইতেই আমি খনন কার্য আরম্ভ করিবো। সেই খনন কার্য হইতে বারিধারা নির্গত হইলে, আমি সলিল সমাধি গ্রহন করিবো। সেই স্থান হইতে অগ্নুৎপাত হইলে, আমি অগ্নি সমাধি গ্রহন করিবো। কোনো কিছু নির্গত না হইলে ঐ খনন ক্ষেত্রে আপনারা পাতাল রেল চালাইবেন। আমি বিনা টিকিটে ভ্রমণ করিবো। তথাপি ধরাধামে প্রত্যাবর্তন করিবো না।"

      - থাম, থাম। অনেক ভাট বকেছিস। একটা দুনম্বরি, ছ্যাঁচ্চোড়, জালি মাল কোথাকার!

      - জালি বলো বা দুনম্বরি বলো, আমার স্ট্যান্ড পয়েন্ট ক্লিয়ার।

      - তোর আবার স্ট্যান্ড পয়েন্ট! কি সেটা?

        - ভালোবাসি।


**********************************************************************************************



দেবাংশু সরকার 

পেশা মেডিকেল রিপ্রেসেন্টেটিভ। স্কুলের পত্রিকায় নিয়মিত লেখার অভ্যাস থাকলেও, তারপর দীর্ঘ বিরতি। লকডাউনের প্রথম বছরটা কেটে যায় টিভিতে রামায়ণ মহাভারত দেখে। দ্বিতীয় লকডাউনের  অখন্ড অবসরে আবার আবার লেখার দ্বিতীয় ইনিংসের শুরু।

সাম্প্রতিক লেখা  - প্রজাপতি সাহিত্য পত্রিকা /সৃজন সাহিত্য পত্রিকা/ রংমিলন্তি প্রকাশনা/ কারুলিপি অনুগল্প সংকলন/ অবেক্ষন/ ড্যাস সাহিত্য পত্রিকা/ লেখা ঘর সাহিত্য পত্রিকা/ সমন্বয় পত্রিকা/ মৌনমুখর সাহিত্য পত্রিকা/ তুলি কলম আকাশ/ ঘোড়সওয়ার/ স্নিগ্ধা প্রকাশনী/ নীরব আলো পত্রিকা/ সর্বজয়া পত্রিকা এবং স্বরবর্ণ পত্রিকাতে প্রকাশিত হয়েছে।


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন