কবিতাগুচ্ছ * রুমা ঢ্যাং অধিকারী
উপবেশিত
কিছু না-লেখায় কিছু একটা লিখতে চাওয়ার টাটকা ব্লো
ঝরে পড়ে সিঁড়ির হাতলে। এখানে যা রয়ে গেল সেই বিবশ গুঞ্জনে কেটে যাওয়া
তামাদি মনের সন্ধেকাল
তবু রঙিন ডাউনলোডে কখনও কখনও ঢুকে পড়ে রাজপথের বিপ্লব
তাতেই পুষিয়ে নেওয়া আমার নিজস্ব কোনো সেকেন্দ্রাবাদের চক্করকাটা
এইসব মোমবাতির গোপন সুতোয়
শব্দযানের ভ্রমণ
এই তো, ক্যান্টারবেরি ঘুরেফিরে নেমে পড়েছি মাধ্যাকর্ষণতত্ত্বে
ফোকরের প্রান্তও ইশারাময়
ব্রহ্মনিনাদ, তবে এসো হে
খুশবুর জ্যোৎস্না-তক্তায় করো উপবেশন
সকলেই তো মাস্তুলের ললাট প্রশস্ত করতে চেয়ে
খাড়া করেছে লাঠি
অক্ষরে পুষে রেখেছে ছদ্মবেশ...
প্রণামী
দীর্ঘ চুমুকের পর তোমার গান গিয়ে মিশেছে সমুদ্রে
আমি তখন জ্যোতি মাড়াইয়ের ভূমিকায়
আর যা কিছু রয়ে গেছে তা লবনের ঘ্রাণের কাছে
পড়ে থাকা মৃত অর্কিড। ঝুঁকে পড়া নতজানু আপেলের শোক, এবং
ধুলোশরীরের পৃথিবী
রংমহল একসময় ধুলোময়। ঝাড়বাতির কাহিনী তাই বয়ে চলে ভিন্ন ভিন্ন খাতে
আমি সেই গভীর শ্বাসে কেটে রেখেছি জীবন
দানের পর গ্রহণের নামে
বসে পড়েছি নিষ্ফলতায়
তুলোর মেঘ ছিঁড়ে সাজিয়ে রেখেছি পিপাসার প্রণামী
উত্তরকালীন
বৃষ্টির রোমাঞ্চপিডিয়া টেনে ফুটে উঠেছে শব্দের কেশর
ব্লাডশেলের গান শুরু হল আর এইমাত্র জানলাম
মুনলাইট প্রেমের রেপুটেশনে বাষ্পীভবন শুধুই কি অন্তর্গামী
টুলস নাকি মেঘের সংকলন
ইলেক্ট্রিসিটির চর্চায় সম্মতিবাচক
কিংবা সম্মতির চারকোণায় ইলেক্টেড দুপুর
এপর্যন্ত, দেয়ালগুলো জেনেছে ছুরির অশ্লীলতা
যেভাবে সহিসের হাত আস্তাবলে
যেভাবে স্থানত্যাগের পরেও পাওয়া যায় পার্ফিউমের সুগন্ধ
'তুমি'-বোধেও রয়ে যাবে তেমনি কালনির্ণয়ের রেফারি
তো আমাকে বলো
পেয়ার রিঙে এত ক্লান্তি আসে কেন?
গাঁটপুচ্ছে যদিও কল্পনা যায় যতদূর... উত্তরে
প্রজাপতির ওয়্যারহাউজ
জল ও পথের সংশয়ে যখন কোনো সীমানা থাকে না
ক্রিয়াপদের জড়তায় দিব্যি ছুঁয়ে ফেলা যায় অনিশ্চিত
যেহেতু নিশ্চিহ্ন পদাবলির কথা ভাবা নিষেধ
তো পোষা পাখির চোখ গোলাপবাগে
এবং ঠোঁট বন্ধন শ্লোকে
ধেয়ে আসছে তথাকথিত ঢালু দিন
অথচ একটাও লেখা হল না স্বেদ কর্মসূচির পাঠক্রম
প্রজাপতির ওয়্যারহাউজের যোগসূত্রে শুধু
থেকে গেল অক্টোপাসের সাঁতরে যাওয়া
আর মাছওয়ালার হুইশেল
আসলে এসব ছক্কা হাঁকার একরকম ফ্ল্যাগশিপ
অনুভব
এত কি আর বোঝানো যায় চল্লিশটা গ্রন্থির বাঁক খুলে!
অপরিচিতিও তবে এক চুল্লু বিশেষ
ছায়া টপকে টপকে লিখে ফেলছি অর্থহীন প্রলাপ
ওদিকে আকাশের সংকেতে
সমুদ্র উঠে আসছে পিয়ানো রিডে
এখানে ধ্বনি এক সহকর্মী
প্রথম শুক্লপদে আমি তাকে রেখে দেব পঙক্তির মেষকথায়
অতল তবু কুরে কুরে খায়
আর নেত্রের পুনরুদ্ধারে শত বুদবুদের হত্যালীলা
এরকমটাই বলা হয় বাসনা আসলে উদভ্রান্ত জীব
তার চর্চায় সেই ট্রাভেলার
গুটি গুটি পায়ে যে কিনা নেমে পড়েছে হাইকিংয়ে
যেমনটা শতাব্দীও
বৃদ্ধির অনুভবে
***********************************************************************************************************
ব্ল্যাকহোলের আধার থেকে জন্ম নেওয়া নীলচে কথাগুলো যখন মনের ঘড়া ভর্তি করে দেয়--- পোড়া এই সভ্যতা থেকে, জলন্ত চিতা থেকে উঠে আসে কিছু ভাবনা, কিছু অন্তরালের কথা। অব্যক্ত সেই ভাবপ্রকৃতি গুমরায় আর তাকে ঘিরেই যেসব শব্দের ঘূর্ণিপাক - এক নীরব যন্ত্রণাবোধ সেসবই নির্জন সময়ের ভাবজগতে ডুব দিয়ে তুলে এনে এই উলুবনে ছড়ানো যেন মুক্তো-- শব্দের মায়াজাল- কবিতার এই তো একমাত্র ধর্ম। কবিতার দেয়ালে লেগে থাকা উত্তমপুরুষ থেকে সবপুরুষ অতিক্রম করার এক খেয়াল। হঠাৎ করে পাওয়া এক জগৎ -- কবিতাজগৎ--মনের তাগিদে লেখা মনের টানে। কবিতা এক অসুখের নাম -- আমি সেই অসুখেই ভুক্তভুগী এক রুগী। কবিতার বই--- বাইশ স্কোয়্যার ফুট (২০১৮)





কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন