{ এই বিভাগে আমরা এমন দু-একটি কবিতা পড়ব , যে কবিতা আমাদের অন্তর্লোকে বিস্ময় সৃষ্টি করে শুধু নয় ,আমাদের কবিতা পড়ার আনন্দে অবগাহন করায় , প্রতি দিন প্রতি মুহূর্তে | এই পর্যায়ের কবি যে সবসময় বিখ্যাতই হবেন , এমনটা নয় , তিনি অখ্যাত তরুণ তরুণতর কবিও হতে পারেন , কিন্তু ,শর্ত একটাই ,কবিতাটি যেন আমাদের মর্মলোক স্পর্শ করে | স্বরবর্ণ / ১৩ সংখ্যায় 'প্রিয় কবি প্রিয় কবিতা ' বিভাগের কবি হলেন মণীন্দ্র গুপ্ত |}
পূর্ণিমা
মণীন্দ্র গুপ্ত
আজ চতুর্দশীর রাত।
গাছপালার হাসির মধ্যে এসে চাঁদ আটকে গেছে।
আর যেহেতু মেয়েটির নাম পূর্ণিমা----- ওদিকে একা একা সে
পাড়ি দিচ্ছে মধ্য গগন।
চাঁদিনী বা নিশ্চন্দ্র রাতে ও সে পূর্ণিমা। খর দিবসেও
সে পূর্ণিমা।
ঘুরে ঘুরে সে অ্যানিমিয়ায় ভোগে। সন্ধের মুখে ঘুষখুসে জ্বর আসে।
দৈবঞ্জ বলেছেন, বিয়ে দিলে সে মৃতবৎসা হবে। বৈদ্য বলেছেন,
সূতিকা তার ভবিতব্য।
চতুর্দশী পেরিয়ে পূর্ণিমা যখন আমার কাছে এল, আমি
ভাবতে লাগলাম ওকে কোথায় বসাই;
পূর্ণিমা সিং হলে ও যাবে গুরু বিপিন সিংহের নর্তনালয়ে
নাচ শিখতে।
পূর্ণিমা বিশ্বাস হলে ও যাবে ঝালতলা বস্তি থেকে উষায় বেরিয়ে
যাবে ঝি খাটতে।
পূর্ণিমা বাগচী হলে ও স্বামীর সঙ্গে যাবে কানাডা।
পূর্ণিমা সরদার হলে বিপক্ষ পার্টির লোকেরা ওকে ধান কাটার মরসুমে
বলাৎকারের জন্য টেনে নিয়ে যাবে।
কিন্তু রাতের বেলা, ধোয়াপোছা পূর্ণিমা, তত সহজ মেয়ে না।
সব শুনে সে খিলখিল করে হেসে উঠল। তারপর
গভীর হয়ে দুহাত বাড়িয়ে বলল, 'এসো আমরা এই
পূর্ণ নিশীথিনীর মধ্যে ডুব দি।'
********************************************************************************************



কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন