অমিত চক্রবর্তী / দুটি কবিতা
এই আবছাঅম্বর দুধরাত্রিতে
শুনছিলো হয়তো, চর্চা নেই বহুদিন
বহুদিন সে এক কিংবদন্তী নক্ষত্র একা,
সুপারনোভা হয়ে যার
আলো পৌঁছলো আমার আঙুলের ভোঁতা নিবে।
অর্ধেক শোনাটাও একটা বড় শৈলী, খেদ কম হয় এতে
আমি সাহস পাই আবার। আপনাকে সেদিন বলা হয়নি
সেই কুয়োতলা বা ভাঙা ইঁদারার কথা, বলা হয়নি
উল্টোরথের জিলিপিভাজায় হঠাৎ চুমুর স্বাদ,
কেউ পাল্টে দিয়েছে এই ঝাপসা আলো-আঁধারি,
ক্যানভাসে এখন নামডাক গর্জন,
আপদ বিরক্তির পোঁচ।
শুনছিলো হয়তো, চোখ ছিল তার দূর,
অসহায়, সুদূর বিবুধপুঞ্জে বাঁধা; অনেকক্ষণ পরে সে উঠে দাঁড়িয়ে
আকাশবাণী বা অনুভূতির টলমলানি হয়তো
দ্যাখো, দ্যাখো, ‘মিছুটানে’র হাতছানি কেমন এই আবছাঅম্বর
দুধরাত্রিতে।
বিধুমুখী
“বিধুমুখী, এই কি তোমার ভালোবাসার গুণ”? – গিরিশচন্দ্র ঘোষ
তখনও এদেশে পূর্ণিমার জন্ম হয়নি, গিরিশচন্দ্র আর আমি
দুজনেই বিধুমুখীর ভক্ত হয়ে পড়ি,
“আনো বিস্ময়” বলে গলাটা কেঁপে গিয়েছিলো তার
চলকে পড়া চায়ের কাপে, আচমকা চুমুতে
বিক্ষিপ্ত ঠিকরোনো মন, আমি প্রায় মনে মনে
প্রম্প্ট করেছিলাম সেদিন
নিভৃত,
নিভৃত প্রতীক্ষা কাকে বলে, অথবা
শুধুই প্রতীক্ষা, মুছে দাও এবার তরল ছলনা,
মুছে দাও বেদনার দামী পারফিউম,
চাবি নয়, অলংকার নয়, মনভোলানো নীরাজন,
আমাকে পাঠিও উসখুশ থামানোর খেলনা।
অমিত চক্রবর্তীর জন্ম সোনারপুর অঞ্চলের কোদালিয়া গ্রামে। ছাত্রাবস্থায় অনেক লেখা এবং ছাপানো কলকাতার নানান পত্রপত্রিকায়। পড়াশোনার সূত্রে আমেরিকা আসা ১৯৮২। এখন ক্যানসাস স্টেট ইউনিভারসিটি তে পদার্থবিদ্যার অধ্যাপক ও প্রাক্তন কলেজ অফ আর্টস অ্যান্ড সায়েন্সের ডিন । প্রকাশিত কবিতার বই দুটি - "অতসীর সংদারে এক সন্ধ্যাবেলা" (রা প্রকাশন ২০২১) ও "জলকে ছুঁয়ো না এখানে" (মিসিসিপির মেঘ প্রকাশন ২০২২)। দুটি পত্রিকার সহ সম্পাদক - উত্তর আমেরিকার নিউ জার্সি অঞ্চলের পত্রিকা "অভিব্যক্তি" এবং "উজ্জ্বল এক ঝাঁক পায়রা" কবিতা পত্রিকা।





কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন