শুভদীপ রায় / দুটি কবিতা
বিরহকাল
ভালোবাসায় জং ধরেছে বুঝি?
আকাশ তাই রোদে শুকোচ্ছে না;
আলমারিটাও ভীষণ অগোছালো,
একলা হওয়ার শব্দ ওদের চেনা।
তোমায় ওরা খুঁজে আনবে বলে
পাঠিয়েছি সুর, গানের মতো করে,
ভেজা মাঠের বুকের উপর দিয়ে-
সাজিয়ে রাখি- পুরোনো সব দেনা।
ঠোঁটের ভিতর সবটাই কি ভালো?
কোথাও কোনো রাত্রি জমে নেই?
হয়তো, সব জমিই আছে খালি,
কিম্বা কেউ জানতেই পারছে না।
সূর্য উঠে সেঁতলে গেছে পাহাড়,
রোজ কাঁহাতক কাঁদতে ভালো লাগে?
শান্ত হবে- তারও উপায় কই?
নদীরও যে আগুন ছোঁয়া মানা।
ঘর পোহাতে শালিকগুলো এলেও
বলতে হবে- বাড়িতে ঘর নেই;
আগাম কোথাও হারিয়ে ফেলার আগে,
খুঁজব- আজও আছে কাদের ডানা।
কুয়াশাটা জমাট বেঁধে এলে,
কিরম যেন বাঁচার নেশা হয়,-
খালি পায়ে বেড়িয়ে পড়ি আবার,
যে গলিতে আমার যাওয়া মানা।
রাতবিরেতে এমনি করেই রোজ,
স্বপ্নসুখে চমকে জেগে উঠি,
চাঁদের আলোয় ভীষণরকম ঘামি
সাজিয়ে বসি অজস্র বাহানা।
বাজারে যাই রোদ কিনব বলে,
আকাশটাকে বিছিয়ে দিই দাওয়ায়,
ভালোবাসায় জং ধরেছে বোধহয়,
তাই, তোমার খবর পাওয়াই যাচ্ছে না।
বিরহবিলাস
আমাকে ডেকো আরো, আমাকে ডেকো না-
উদাস চরাচরে দুঃখ বয়,
বিরহে সুখ তবু, বিরহী সুখী না-
নিমেষে জমে ওঠা দুঃসময়
মৌন হবে বলে, এদেশে গান ধরে,
গভীরে জাগে আরো জন্মদাগ,
ব্যথার কথা কত সহজে বেড়ে চলে
আমাকে দেখে রাখে দুর্বিপাক।
কাগজে শোনা যায়- মিছিল কত দূর!
চিঠিতে ধুলো জমে, ব্যস্ত তাক।
বালিশে নদী মরে, টেবিলে কে সাজালো-
বইয়ের ভাঁজে রাখা রাজ্যপাট?
কিছু কি খুঁজে পেলে?- তাকের শূন্যতা
মধ্য পঞ্চমে হাতড়ে যায়।
সিড়ির নীচে রাখা জমানো ছেলেবেলা,
আগলাবার আগে, পালাতে চায়।
আমিও যুগে যুগে যুদ্ধে হেরে গেছি,
তোমার নামে লেখা বশ্যতায়।
নিহত সেনাসব বাসায় ফিরেছিল।
তাদের প্রেমিকারা আজ কোথায়?
****************************************************************************************************




কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন