কবি সুদীপ দাস-এর দুটি কবিতা
কাগজের সেপাই
একটা ছাদ ক্রমশ মাথার একবিঘতের মধ্যে চলে আসলে
যোদ্ধার ঋজুতায় শিকভাঙা ছাতা ফোটে
মাথার ওপর
একটা দেয়াল ক্রমশ চোখের একহাতের মধ্যে চলে আসলে
ছায়াকে ছ্যাঁদা করা আত্মপরিচয়
ফাৎনায় নড়ে ওঠে
সাদা রেখা হয়ে কাঁপতে থাকে নিজের নামের অক্ষরগুলো
এলোমেলো গাঢ় অন্ধকারে
প্রথম ভোরের আলো ফুটলে
আধোঘুমের মাংসাশী তুইতোকারি নিভে যায়
ডিঙি নৌকোর আড়ালে সাঁতরায় মাছ
জলজ উদ্ভিদের ভিড়ভাট্টায় শুঁড় নাড়ায় শামুক
শেষ বিকেলের আলো মরলে
ফুটে ওঠে জোৎস্নায় প্রসন্ন আপনি-আজ্ঞে-র চরাচর
এইসব সামান্য রসদে এখনও দীপ্যমান সন্ন্যাসীর ঋজুতা !
ভিতরের সব বই ঝাপসা হচ্ছে
ফিরে আসছে ঘাসের ওপর খালি পা রাখার অনুভূতি
স্তব্ধ সাবমেরিন
লোকটার জিভে কোনও হাড় নেই
জিভের আগায় সে লুকিয়ে রাখে অনুভূতিশূন্য জ্ঞান
যা দিয়ে ভেঙে দিতে পারে যেকোনও হৃদয়
সে-ই একদিন কথা বলত স্তব্ধতার চেয়েও সুন্দর ভাষায়
আর মাঝেমাঝেই উল্লম্ফনে চলে যেত দৈনন্দিনের ভাষার বাইরে
খুঁজে পেত সেই ঘরশূন্যতা
যেখানে মাথার মধ্যে একঝাঁক পাখি ওড়ে
জুতো খুলে পা দুটো হাঁটতে থাকে পিছনে
সারি সারি সাদাকালো ছবি ভেসে ওঠে জলের ওপর
আর জলের গভীরে দেখা যায় দাঁড়িয়ে আছে
স্তব্ধ সাবমেরিন
**********************************************************
প্রথম কবিতা প্রকাশ পেয়েছিল নয়ের দশকে। প্রকাশিত কবিতার বই 'তোমাকেই প্রস্তাব দেব' এবং 'নৈঃশব্দ্যের পাসওয়ার্ড'। অতি সম্প্রতি ‘চিন্তা’ প্রকাশনী থেকে বেরিয়েছে আর একটি কবিতার বই ‘অগাধ জলে খড়কুটো’। ‘নীললোহিত’ পত্রিকার সম্পাদনার সঙ্গে যুক্ত আছেন।
 
খুব ভাল লাগল সুদীপদা। কবিতায় আছেন, কবিতায় থাকবেন।
উত্তরমুছুনঘাসের উপর খালি পায়ে হাঁটা চলুক সুদীপ। লিখে চলো।
উত্তরমুছুন