রুমা ঢ্যাং অধিকারী / দু'টি কবিতা
প্রতিক্রিয়া
একার বিশেষণে তাপ গলে গলে পড়েছে পাতায় পাতায়। মেলানকলি হাওয়া এবং পেটের সন্ত্রাস -- মিলেমিশে প্রস্তুত করেছে এক আবছা রান্নাঘর। এখানে জমানো অভিলাষগুলোকেই ভিন্নমাত্রার পদ হিসাবে রেঁধেবেড়ে রাখি আমি। দূরে গিয়ে তুমি পাখির খোঁজে জঙ্গলকাব্য লেখো। সেদিনই দুপুরের অন্তমিলগুলোর ভেতর বৃষ্টি নামে ভালো। তোমাতে রক্ষিত এমন প্রতিক্রিয়াগুলো এখন গান হয়ে বাজে নিজের গলায়। আস্তাবল থেকে সেই গান আর পৌঁছায় না --- তাও গেয়ে যাই... কার নামে গাই কেই বা জানে! শুধু পিছল উঠোনজমির কথা মনে করে অবতরণের আগে খুলে ফেলি চটি।
শরতকালের লুকোচুরি খেলায় তো বিরাম থাকে না কোনও। তবু বিরামহীন দেহে উদাস যাত্রাপালাও যেন আবর্তিত, অবিরত। জলপুষ্ট দিগন্ত থেকে চরিত্ররা খুঁটে খায় ফল। আর চারপায়ে ভর করে ফিরে আসে বিড়াল চোখের মায়া। সে এক বেড়ালের জলভীতি। ন্যুনতম করে রাখে চর্বিত কাঁটার খিদে। এই ধর্মেই যেন সম্প্রদান করেন আদিমতম পুরুষটি
কেল্লাফতেঃ এক ফলো আপ রুল
ন্যুনতম বরফে রাত্রি নামলে তার হ্রেষাধ্বনি হবে মৌন। একথার পর যাবতীয় শব্দপ্রয়াসে ঠোঁটের ভেতরেই রয়ে গেল আস্ত এক গোলাঘর। মেঘের ফাঁক আবিষ্কার করে স্নানের আলোচনায় সেদিন উঠে আসবে আরও বেশি দূরত্ব। অথচ যাপনের আড়াই চালের ভেতর থেকে বারান্দায় লাগানো অগভীর শালুক লতা যেন শিথিল করতে চাইছিল সময়ের খঞ্জর। টেস্ট সামলাতে গিয়ে আপনি হয়তো দাঁড়িয়ে গেলেন কোনো বিজন সেতুর সমীক্ষায়। সেখানেও দেখলেন নক্ষত্রদের পাশে মঙ্গলগ্রহের ঘর, বাঁকা চাঁদপুরের পুরানো আলমারি আর স্ট্যাম্প রঙের প্রচ্ছদ।
এই হলো ম্লান ক্যানভাস। লাল মেঝের টুকু বাদ দিয়ে এখানে কোনো তুলিবিষয়ক কথা ছিল না এমনকি নিজস্ব কোনো রং ও বাহার। কেবল নৈবেদ্য সাজাতে চেয়ে কেউ হবেন শ্রেষ্ঠ কারিগর আর কেউ অবশিষ্ট কাতুর্জ বিতরণ করে ঠিক করে নেবেন কারিগরের উপত্যকা। আর... এক আলুথালু বিনুনির দৃশ্যে, শিউলি গাছের ছায়ায় এবং দুপুরভোক্তা জীবিকানির্বাহী প্রাণীর দেহে বাস করে আপনি তখন শুধু একজন ফলো আপ রুল মান্যকারী ছাড়া কিছু নয়। কটিবন্ধে বাঁধা পড়া মিয়ানো দেশলাই...
তবুও জীবনকে ধাপ্পা দিয়ে যেসব জারিজুরি উপস্থিত হবে ---এই যেমন আকাশের দীর্ঘশ্বাস জমা হলে ঘুমের কার্নিশে, সূর্যের নাভির ভেতর রোদ নিভে গেলে --- তখন অনেক প্রশ্রয়কে জিয়ন কাঠি দিয়ে মাখনের পিঠে একটু আঁচড়ে নিন আর বাইপাসের ধারে জীবনপটিয়সী মারপ্যাঁচে আপনার অস্বস্তিকে একটু হাউসকোট দিলেন শব্দবন্ধনীতে ---ব্যস, আর কী! কেল্লাফতে।
***********************************************************************************************************
ব্ল্যাকহোলের আধার থেকে জন্ম নেওয়া নীলচে কথাগুলো যখন মনের ঘড়া ভর্তি করে দেয়--- পোড়া এই সভ্যতা থেকে, জলন্ত চিতা থেকে উঠে আসে কিছু ভাবনা, কিছু অন্তরালের কথা। অব্যক্ত সেই ভাবপ্রকৃতি গুমরায় আর তাকে ঘিরেই যেসব শব্দের ঘূর্ণিপাক - এক নীরব যন্ত্রণাবোধ সেসবই নির্জন সময়ের ভাবজগতে ডুব দিয়ে তুলে এনে এই উলুবনে ছড়ানো যেন মুক্তো-- শব্দের মায়াজাল- কবিতার এই তো একমাত্র ধর্ম। কবিতার দেয়ালে লেগে থাকা উত্তমপুরুষ থেকে সবপুরুষ অতিক্রম করার এক খেয়াল। হঠাৎ করে পাওয়া এক জগৎ -- কবিতাজগৎ--মনের তাগিদে লেখা মনের টানে। কবিতা এক অসুখের নাম -- আমি সেই অসুখেই ভুক্তভুগী এক রুগী। কবিতার বই--- বাইশ স্কোয়্যার ফুট (২০১৮)





দুটো কবিতাই অসাধারণ । খুব ভালো ভালো শব্দের ব্যবহার করেছেন
উত্তরমুছুন