রবিবার, ১২ জুন, ২০২২

চন্দ্রাণী গোস্বামী



চন্দ্রাণী গোস্বামী / দু'টি কবিতা 


সহবাস


মন্থর তবু কোনো কোনো সাঁঝবেলায় চাঁদ নেমে আসে

কিছু শিউলি কথা হয়ে ঝরে পড়ে

বুকের ভেতর তোমায় ডেকে যায় উড়ুক্কু পাখি

                                                             প্লুত স্বরে...


অবসন্ন সন্ধ্যা থেকে খসে পড়ে আমার যুবতী মন

বুকের আঁচল

আমরা হেঁটে যাই রাতের সমুখে


কারা যেন আঙিনার দ্বারে দ্বারে জোনাক জ্বালে

তুমি চাও নির্নিমেষ

আমার চাহনির পাশে কুণ্ঠিত লজ্জা


অপার্থিব...

তোমার ঠোঁটে খেলা করে পৌর্ণমাসী চাঁদ

আমাদের মৌন সম্মতির মাঝে নেমে আসেন 

                                                          ঈশ্বর।




নীলের গল্প

ভাঙা বিকেলের মতো নীল হয়ে যেতে থাকে হাট 

থেকে ফেরা মানুষগুলি


যদিও বিকেলগুলি দোকানির ঝাপ ফেলার শব্দে 

শেষ করে দিন

যদিও চড়ুই পাখি খানিকটা খিদে রেখে যায় 

যদিও হাটুরে লোকগুলি বিড়ি ধোঁয়া শালপাতার 

ইতিহাস নিয়ে কথা বলে


কথার ভেতরে , নীলবর্ণ খিদের কথা, ঘুরেফিরে আসে, 

ভুলে ফেলে যাওয়া রংচটা গামছার মতো, 

সন্ধ্যের ঘাসে একটুকরো খিদে নীল হতে থাকে


ঘরে ফিরে সহস্রবার উল্টে রাখে নীলের লঘু ইতিহাস,

তারপর ক্লান্তি খুলে রাখে 

ঘরের মেয়েদের খোঁপা খোলার অছিলায়,

রাতের শরীরের শেষ নীলটুকু যেভাবে মুছে নিয়ে 

চাঁদ কথকতা শোনায় মায়ার,

সেভাবেই হেঁসেলের নিভন্ত আগুনের শেষ আঁচে 

পুরনো ইচ্ছে গুলো বয়ে যেতে দেয়।


বয়ে যেন যায়, তাই ই যেন যায়...।


*************************************************************************



চন্দ্রাণী গোস্বামী

জন্ম সত্তর দশকের শেষদিকে। স্কুল জীবন, বড়ো হয়ে ওঠা সবই কলকাতা য়। পড়াশোনা স্নাতকোত্তর , কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে। বর্তমানে কলকাতার একটি কলেজে হিসাব রক্ষণ বিভাগে কর্মরত। ছোটবেলা থেকেই লেখালেখির প্রতি তীব্র আসক্তি। নতুন শতকের প্রথম দশকের শেষ থেকে নিয়মিত লেখালেখি। কবিতা আশ্রম, কৃত্তিবাস, গাঙ্গেয়, অপদর্থের আদ্যক্ষর, বম্বে ডাক, তমোহা, সাজি পত্রিকা, বিকল্প বার্তা সহ বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় লেখা প্রকাশিত।



কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন