সোমবার, ১৩ জুন, ২০২২

অণুগল্প * বিশ্বনাথ পাল

 


ণুগল্প সাহিত্যের একটি বিস্ময়কর শাখা। ' বিন্দুতে সিন্ধু দর্শন ?' ঠিক তাও নয় যেন, বিন্দুতে সপ্তসিন্ধু দশ দিগন্ত চকিতে উদ্ভাসিত হয়ে ওঠে সার্থক অণুগল্পে। তেমনই একটি অসাধারণ অণুগল্প এবার আমরা পড়ছি ,বিশ্বনাথ পাল-এর কলমে -----



বড়োলোক

বিশ্বনাথ পাল 


একটা লিটল ম্যাগাজিন সম্পাদনা করি। বন্ধু-লেখককে সৌজন্য সংখ্যা দিতে বিকেলে সাড়ে পাঁচটা-ছ'টায় তার বাড়ি যাব বলে হোয়াটসঅ্যাপে ঠিক হল। সাইকেলে মিনিট পনেরোর দূরত্ব। 

বিকেলে বেরোব বেরোব করছি এমন সময় বন্ধুর ফোন, "তুই আসছিস?"

---"হ্যাঁ, এই বেরোচ্ছি।" 

---"শোন তুই আসার সময় একটা কাজ করতে পারবি?"

---"কী কাজ?"

---"তুই আসার সময় একটু টক দই নিয়ে আসিস।"

---"কতটা? আড়াইশো?"

---"হ্যাঁ, নিয়ে আয়। আর একটু বেশি করে রাবরি। নেতাজীনগরের কমলা থেকে।"

বন্ধুর স্বতঃস্ফূর্ততায় আমি অবাক। বললাম, "কিন্তু আমি তো নেতাজীনগর হয়ে যাব না।"

---"আচ্ছা তাহলে তোদের ওখানকার কোনও  ভালো মিষ্টির দোকান থেকে। আর একটু ল্যাংচা।"

লাইন কেটে গেল। বন্ধু লেখক বেশ ক্ষমতাবান। এক বিখ্যাত কবির পার্টটাইম সহকারী হিসেবে কাজ করে। বন্ধুরা বেশ বড়োলোক। বাবা কলেজের অধ্যাপক। কিন্তু বন্ধুর ক্যারিয়ার সেই তুলনায় ম্রিয়মাণ।  একটি বেসরকারি স্কুলের শিক্ষক। কিন্তু লেখালিখির জগতে প্রায় সবাই চেনে।

মনে হল ফোন করে বলি, "আমি কি তোর বাবার চাকর?" 

কিন্তু ফোন করলাম না। হোয়াটসঅ্যাপে লিখলাম, "আমি এখন তোদের বাড়ি যাচ্ছি না...দুঃখিত।"





***********************************************************************



বিশ্বনাথ পাল


কাব্যগ্রন্থ 

বিজ্ঞাপনে বলা নেই  *  যারা দুধের ব্যবসা করি 

ব্যথাকে করেছি সামাজিক * সন্ধিপ্রস্তাব 

উপন্যাস 

জলে লেখা  


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন