কবিতাগুচ্ছ * বিজয় সিংহ
চাঁদ
পিঠভর্তি আকন্দের আলো
দু'মুঠোয় জোনাকিরা
নাভির অনন্তমূল ছিঁড়ে জাগিয়েছে সান্ধ্যরতি
থিরশব্দবোধে
নদীকে পেছনে রেখে
বর্ণহীন ঝুলে থাকা সাঁকো
দোল খাচ্ছে আর্জন্মের ঋণশোধে
দরোজা দুহাট করে খুলে
আমি কারো প্রতীক্ষায় আছি?
আখোলা বইয়ের থেকে ম্লান অক্ষরেরা
ওড়ে খুব কাছে থেকে.. খুব কাছাকাছি..
এছাড়া সমস্ত দৃশ্য একাকার দৃশ্যাতীতে
রুমি বলে, পথ কিন্তু সীমানার খোঁজ
পায় না পরন্তু চাঁদ জানালা দিয়েই
ঘরে ঢোকে, রক্তস্নান গায়ে মেখে
অনর্থের যে চাঁদ জোছনার পেয়ালা নিয়ে
ঠিকানা হারায়, রুমি নয়, তাকে
আমি জানি, তার
দ্বিত্বের আর্তিরা কতভাবে ভূমি ছোঁয়
ভূমাতে আছড়িয়ে নীল
কতভাবে মৃত্যু ছুঁতে চায়
কথা
মূর্ধার জখম নিয়ে
যে কথারা ওষ্ঠে এসে বাষ্পীভূত হল
তাদেরও প্রশ্রয় দিয়ে গেছ
এই ভূমির বাইরেও
আরেকটা পৃথিবী, আরও একটা
ম্লান রক্তস্নান, ক্ষতে
জলের প্রবাহ ঢেউ হাওয়া
তোমার সে পৃথিবীর কৃমি ও কেঁচোর
বাড়িঘরে সে কথারা
একটু একটু বেড়ে ওঠে
জিভ
যে নেই সে ছিল না কখনোই
যে আছে সে তো চিরসমীপে রয়েছে
এ ভুয়ো দর্শনে তুমি
মাথুরের মেঘ নামিয়েছ
গিদ্দড় কঁহিকা আমি
তোমার বৈতরণীর থেকে
মুঠো-অশ্রু জড়িয়েছি
তৃষার্ত আলজিভে, জিহ্বার ভিতর
গ্রন্থ
গ্রন্থের অন্তরে ঢোক, যেই ঢোক
অনন্তের ফর্মা হয়ে যাও
তৎগত তোমার যোনি, যোনিরন্ধ্র থেকে
শব্দ ধ্বনি ধ্বনিময় বেরিয়ে এসেছে
শব্দের বাহিরে এই পৃথিবীর
বাণিজ্য বাতাস আঘাত হানলেই
টেবিলল্যাম্পের আলো অবরোধে নেয়
সাপের ফনার মতো তার গতি
সোজাসুজি ও তিক্ত বঙ্কিম
অগ্রন্থ পুরুষ এসে তোমাকে জড়ালে
বুকে নাও তুমি তাকে অভিধান মেনে
চার ফর্মার জীবনে রতিশিখা
যে বিভাজ্য অধ্যায় দেয়, লোকায়তে
তারই নাম ছায়া
ছায়াদের নৈঃশব্দ্য প্রকৃত জেনেছিল
অপ্রাকৃত রুপোলি কীটেরা
************************************************************************


কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন