রবিবার, ১২ জুন, ২০২২

নিতাই চন্দ্র মাঝি



নিতাই চন্দ্র মাঝি / দু'টি কবিতা 


সবার অলক্ষ্যে লক্ষ্য


শ্রমিকের অধিকার    নিয়ে মে দিবস,

এখনো কথার কথা    অধিকার হারা,

কৃত্রিম অভাব এনে    সাধু সাজে তারা;

বুর্জোয়া শ্রেণীর কাছে    শ্রমিক বিবশ।


কোটি টাকা লুঠ করে    তবু পায় যশ,

অনাহারে মরে নিঃস্ব    যারা সর্বহারা,

শাসন পীড়ন শুধু     ভোগ করে তারা;

অনায়াসে লেপে দেয়    কালিমা নিকষ।


মেকি গনতন্ত্র বলে   স্বাধিকার নাই,

বজ্রমুষ্ঠি কর করে    বুলি চাই চাই।


প্রকৃত গরীব আজো    শুধু বুলি শিখে,

নেতাদের পেটে ঢোকে   কড়কড়ে নোট,

মহান নেতার বাণী    কত জনে লিখে;

সবার মিথ্যে ভাষণ    লক্ষ্য শুধু ভোট।









আঞ্চলিক কবিতা 

নেহর


টুকু মাড় বইলত্যেছিলি ব্যাটা।

কাইলল্যে তর মায়ের পেটটা ফাকার ফুকুর কইরছিল,

তাই বইলত্যেছিলি ব্যাটা।

জানিস বাপ, তরা যখন উয়ার পেটে থাকথিস-

আমি তত ঢিপু কইরত্যে বলছি নাই,

কেবল যেমন পেটটা পিঠের সঙে-

না লেইপ্টে থাকে।

এই বুঢ়া হাড়ে মাটি তাইড়্যে তাইড়্যে-

কমরে গামছা সাইট্যে,ঐ নদীধারের-

খেতগিলা কইরেছিলি তদের থথনা ভাইল্যে।

একডুভা মাড়ের আশায়, শুধু এক ডুভা মাড়।

জানিস ব্যাটা?

মাড় হইথ্য ছেইল্যাঘুমা রাইত্যে,তরা ঘুমাই যাথিস।

হামরা ডাইক্যে ডাইক্যে উঠাথি-

খাওয়াই নিয়ে শুঁয়াই দিথি।

ঠাণ্ডায় মুইত্যে গটা গতর ডবরাঞ দিথিস।

তর মা কাপড়টা খুইল্যে চুলহা সালে টাইঙ্গে দিথ্য।

ভোরে খুখড়া ডাকার আগেই চাল মেরাইথ্য।

কিছু নাই বাপ, এই দু বিত্তা পেটের লাইগ্যে-

হামরা চরখির লেখেন ঘুইরে বুলথি,

নুড়ি টানা টানাথ্যি, লেকড়ি ছিঁড়া টানাঞ মরথ্যি।

আজ সভেই আছে ব্যাটা, টুকুন-

মনটা টুকুন সিধা রাখ বাপ।

এই বুঢ়া উমরে লকের ঘরে ঘরে-

যদি ঢইনকে বুলি, যদি লকের দুয়ারে-

ডুভা টঁকা কাছড়াই-

তর মান কথাই থাইকবেক বাপ,তর ভাল হবেক?

আর কটা দিন রে বাপ।

তার পরে আর জ্বালাব নাঞ ব্যাটা।

মরলি ন সরলি।

তার পরে তুই হয়ত কত লককে-

ডাইক্যে আইন্যে খাওয়াবি,

কত বাভুন বৈষ্টম খাবেক,মেনতেক-

মনে রাখিস বাপ-এই মরা মা বাপ-

সেটঅ দেইখতেও আইসবেক নাঞ।


*******************************************************************************



  নিতাই চন্দ্র মাঝি

পেশা : গৃহশিক্ষকতা  লেখালেখি,ও সুকুমার বিদ্যাচর্চায় যুক্ত রয়েছেন দীর্ঘ ৩৫বছর  নিজস্ব ছাপা বই নেই। প্রচন্ড অর্থনৈতিক অনটনের মধ্যেও তিনি সাহিত্যচর্চায় নিমগ্ন । ঠিকানাগ্রাম-পখুরিয়া,পো-হুড়া, জেলা -পুরুলিয়া।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন