রবিবার, ১২ জুন, ২০২২

শুভজিৎ গুপ্ত



শুভজিৎ গুপ্ত / দু'টি কবিতা 


লাল এবং স্বভাবত ধুলোমাখা আত্মজীবনী


রসাতলের দক্ষিণকোণে বামপন্থী আত্মজীবনী 

রাখা

ঈর্ষাকাতর অনুবাদক তাকে শ্যামাসঙ্গীত ভাবছে

ইতিমধ্যে ভাষাহারানো বসন্তকাল চলে এসেছে 

বাংলায়

মা ও মেজো-সেজো মাসিদের জমকালো 

খুকিসাজ


একটা নিঃসঙ্গ কান্নার সঙ্গে দেখা হয়েছিল 

শীতপাহাড়ে।

মেঘের ইউনিফর্মে লুকোনো অক্ষর ধুলোজমা 

মলাট ছেঁড়া পঞ্জিকা বড়োদিনের বারান্দায় ঝুলে 

থাকা চৌকো লন্ঠন

অনুবাদক এদের সবকটিতেই সাপলুডোর মই  

বেয়ে উঠেছে।

অনুবাদক এদের সবাইকে শিস দিয়ে ডেকেছে।

অনুবাদক শুধু বুঝতে পারেনি আত্মজীবনীটির 

ভাষার নাম বিভূতিভূষণ ।

আত্মজীবনীর প্রতিটি অক্ষরই বিনোদবিহারী।










ভুল সুরে চাঁদ ও সূর্য গাইতে গাইতে একটা 

সকালবেলা হেঁটে গেলো।

আমি তো ফুল না-ফোটা পলাশগাছ 

প্রতিদিন ভোরবেলা সন্তানের পদশব্দ শুনি 

শবরীর টিলা থেকে প্রজাপতি উড়ে যায় 

পিতৃযানের পথে।


এই দৃশ্য, দৃশ্যমালা অনুবাদ করেন রবীন্দ্রনাথ।

এই রঙ,রঙমাখা ঘরবাড়িপথে বালিকাঁকর 

কুড়োন রামকিঙ্কর।

ব্রম্ভান্ডের পঙ্গু হাতে কারা সব মাদুলি বেঁধে যায়।

 চাঁদ -সূর্য ফুরিয়ে গেলে পলাশগাছের নাম 

বদলায় সকাল-বিকেল হারিয়ে গেলে পলাশ 

গাছের রঙ বদলায়


ভুল সুরে রবীন্দ্র-নজরুল গাইতে গাইতে নাগরিক 

সন্ধ্যে হেঁটে যায় ।      


আমি তো কালী খুঁজতে থাকা রামপ্রসাদ 

প্রতিদিন মধ্যরাতে জবাগাছ হয়ে জন্মাই।


**************************************************************************



শুভজিৎ গুপ্ত 


শুভজিৎ গুপ্ত-এর কবিতাগ্রন্থ :

 

পাখিদের আহিরভৈরব (১৯৯৯)

ঘুমন্ত লাটাই (২০০৫)

তোমাকেই দিদিমণি (২০০৮)

নীলরঙের বেঁচে থাকা (২০১২)

ঘুমিয়ে পড়া পতাকা সংগ্রহ (২০১৪)

কথাবার্তার বোবাছায়া (২০১৫)

ক্ষতচিহ্ন জমিয়ে রাখছি (২০১৬)


অন্যান্য গ্রন্থ :

এটা হল কেমন করে ওটা হচ্ছে কেন (২০০৪)

পাখিপড়া (২০০৫)


1 টি মন্তব্য: