রবিবার, ১২ জুন, ২০২২

কল্লোল মজুমদার



কল্লোল মজুমদার / দু'টি কবিতা 


মানসজমিন


পর পর বেশ ক'টা পরতে        ঢাকা মানসজমিন, চারণে       অভ্যস্ত তুমি, কে কেমন দূর।        থেকে হেঁকে যায় আর্যভূমে।      দিনরাত, শস্য উৎক্ষেপন,         বেশুমার...বেশুমার...চাঁদেরআড়াল থেকে কপিঞ্জল         অবিরত, অধরা নিশীথ সুখ।      তুলে নাও দু'একটা পরত।         এখন বরং মৃদু দীপালোক।         অলিন্দে, বহতা তরঙ্গ ভঙ্গে।        কাল-মহাকাল---         কিছু হাড়গোড় আর নরমাংস, রুচিটা পাল্টানো যায়, লাল- জিভ আহ্! কি অপরূপ           রণসাজে সেজেছো ঠাকরূণ!  উৎপাদন, আর উৎক্ষেপণ   লক্ষ্য স্থির শস্যভূমে, পরতের     নীচে আরেক পরত, তারপর, একই বহমান মানসজমিন...   









সময়নরক     


সে কোন সুদূর বাখরগঞ্জ থেকে, ছুটে ছুটে, লাল সূর্য         তার চোখে, সর্ষে খেতের হলুদ তার রুখু সুখু চুলে, আঘ্রাণ!     পশমী বেলুনছোঁয়ায় শিউরে      ওঠা, দক্ষিণায়নের ঝোঁক,--     হাওয়া বয়, যদিও পবনদূত         অতিদূর সমাগমে, কেলাসিত মমি হলুদের বাপুতী যেমন,        শ্রবণ ভরিয়া আসে ঘনজল,       শোনো হে কিশোর,           পিছনে বিছানো আছে            তোমার জমিন, সত্তর পেরিয়ে গেছে ঝটিতি ডানায়...                 এবং।       এখন ফিরোজা রঙ শুলুক।        সন্ধান জানে মাগুরের জল,       জানে বুদ্ধ, কিঞ্জলের সমূহ-        সম্পদ, খোলা মাঠে পড়ে আছে , দিন যায়-রাত যায়,        মোহনার অন্তরীপে অশালীন।      মানুষের ঝন্য কি যেন বিছানো আছে, জ্যোৎস্না-             চাদরে ঢাকা কোনো এক শব-দেহ... পাখি ডাকে কহু রবে,      কুজনেই ঢাকা পড়ে সবকিছু--  তবু ---                                        কিছু দিন, কিছু রাত এবার         যাপনবীজ, ভালো লাগা, মন্দলাজ, কুৎসা,রিরংসার।       গুটিপোকা, এ সবই সঙ্গোপনে ব্যূহমুখ, অন্তসূর্য সময়নরক,       অনায়াসে পেরিয়ে যাওয়ার...     


************************************************************************


 
কল্লোল মজুমদার

  জন্ম : ১৯৪৪ , কলকাতায়। আদি গ্ৰাম বরিশালের "নলচিড়া" ।মা-বাবা কর্মসূত্রে ৪২ সাল থেকেই কলকাতায়। একেবারেই সাদামাটা মধ্যবিত্ত জীবনখাতা কল্লোলের। ১৩ বছর বয়সে মায়ের আকস্মিক প্রয়ানের পরে ঘর ছেড়ে পথে পা পড়ে। তারপর এলোমেলো যাপনের পর ক্রমশ দেখা গেলো, ভবানীপুরের এক মেসবাড়ির তরুণ শিক্ষককে , যে ছাএ পড়ানোর ফাঁকে ফাঁকে কাগজ কলম আঁকা আঁকি করে। প্রায় ডজন সাতেক গল্প লিখেছেন । মূলত গল্পকার হিসাবে পরিচিত কল্লোল সাপ্তাহিক দেশ অমৃত রবিবাসরীয় ও লিটল ম্যাগাজিনে গল্প লিখেছেন, কিন্তু হঠাৎই ৯০- এর শুরু থেকে ক্রমশ সরে যান আড়ালে। হয়তো পারিবারিক কারণে বা অন্য কিছুর... হঠাৎই কোভিদ-এর লকডাউনে ঘরবন্দি লেখককে সক্রিয় করে তুলল, কলম তুলে নিলেন কল্লোল, এবার যাত্রা কবিতার জগতে অনাহুত এক বৃদ্ধ স্বপ্নাচ্ছন্ন মানুষের, বিচিত্র পথ পেরিয়ে আসা এক আতুর হৃদয়ের।


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন