রবিবার, ১২ জুন, ২০২২

কবিতাগুচ্ছ * হীরক বন্দ্যোপাধ্যায়




কবিতাগুচ্ছ * হীরক বন্দ্যোপাধ্যায়


আজ বৃষ্টির দিন


আজ বৃষ্টির দিন, বৃষ্টি কিন্তু হয় নি এক ফোঁটাও

তবু এই গরমে প্রায় পঞ্চাশ ডিগ্রীর কাছাকাছিতে এসে 

চিন্তা করতে তো দোষ নেই

যা বলো তা বলো যা করো তা করো না

বৃক্ষনাথ কমল চক্কোত্তি বলেছিলেন দোলে অমিতের

ফ্ল্যাটে পান করতে করতে যা চাইবে তাই পাবে

আমি আঙুরফল চেয়েছিলাম

শর্মিলা যে দুধে আলতা আমাদের উদ্ভিন্ন য়ৌবনে

ভোরের তারার মতো উজ্জ্বল

এখন কোথায় ?

শান্তনু জানে,সৌমিত জানে তাপস জানে না

এবার সম্মেলনে গিয়ে দেখি ফাঁকা

জেটির কাছে দাঁড়িয়ে র ইলাম কিছুক্ষণ একা ...

প্রবুদ্ধ বলেছে জব্বর...

সব কিছুতেই ণত্ব বিধি সত্ত্ব বিধি মেনে চলতে হয় ...



ইতিহাস


এই শরীরকে দান করেছিল শুক্রানু ডিম্বানুর দাম্পত্য

এই ঐশী শক্তিকে ধারণ করেছিল ভূমা

ভোরের সূর্যোদয়ের মতো ,তারপর শান্ত ও সংহত

সুরে বেজেছিল বিসমিল্লাহির সানাই,অন্ন ও ব্যঞ্জন

সংগ্রহ করেছিল হাজার হাজার বছরের ইতিহাস

আহল্যা কুন্তী তারা মন্দোদরীর এই দেশে সমস্তকিছু

ঘুমিয়ে থাকা আগ্নেয়গিরি, কখনো দেখা যায় কখনো

দেখা যায় না ...









রহস্যের জাল


আভ্যন্তরীন রহস্যের জাল চিরকাল আমাদের

স্পর্শ করেছে অজ্ঞানে জ্ঞানে যোগেশচন্দ্র বাগলের ভূমিকাসমেত ,

রামানন্দ চট্টোপাধ্যায় হেঁটে চলেছেন

বিষ্ণুপুরের ছিন্নমস্তার মন্দিরের পাশের লালমাটির

রাস্তাটি ধরে _বগলে ও কীসের পুঁথি...

পত্রিকা প্রকাশে  বড়ো দেরি হয়ে গেল এবার

একটি কবিসম্মেলনের ব্যবস্থা হয়েছে পঁচিশের বৈশাখের বিকেলে ।

সেই দলমাদল সেই রাসমঞ্চর ,অন্যতর বিন্যাসে

ছড়ানো সর্বমঙ্গলার মন্দির অচেনা ঠেকছে কি  ?

পলাশে শিরীষে কৃষ্ণচূড়ায় এখন এটাই প্রশ্ন

আর কি কখনো ফিরে পাবে মাটি জল আর হাওয়া ...



মা বাবার জন্য


মায়েদের জন্যে ইতিহাসে অনেক কিছু লেখা থাকে

বাবাদের জন্য কিছুই না,বাবাজীকা ঢুল্লু

বাবাদের প্রাধান্য দিলে নাকি ভাও কমে যায়

টি আর পি কমে যায়

বাবাদের কথা বললে নাকি পুরুষতান্ত্রিকতা মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে ...

মা  মা ই হয় এটা ঘটনা এ নিয়ে কোনও কথা হবে না

মা তাঁর শিশুকে খাওয়ায় দাওয়ায় চান করায় শয়ান দেয় ,

এতো সত্যি এবং অবিনাশী সত্যি

অথচ সারাটাদিন মাথার ঘাম পায়ে ফেলে 

টাকা রোজগার করে এনে দেয় কে?

একটি সত্যিকারের সংসার বানানোর জন্য যা যা

লাগে বাবার কি অবদান কম তাতে ? 


বাগান সাজিয়ে ফুল ফল লতা গাছ

যখন নারীবাদীদের হাতকাটা ব্লাউজ ও গাঢ় লিপস্টিকে 

মুখ রাঙিয়ে মঞ্চ দাপিয়ে বক্তৃতা শুনি

পুরুষ মানেই অত্যাচারী ,সে যে কোনও ক্ষমার অযোগ্য ,

অর্বাচীন কামুক.…

অথচ ভুলে গেলে চলবে না  মঞ্চটি তৈরি করেছে যে 

সে আসলে একজন পুরুষ

বড় হবার পর ছেলে মেয়েরা বুঝতে পারে

বাবা না থাকলে কি কি হয় না বা কি কি হতে পারতো 


মায়েরা ক্ষমা করবেন প্লিজ ......


*****************************************************************************



হীরক বন্দ্যোপাধ্যায়

আশির কবি।কুড়ির বেশি কাব্য।ছোটবড় মিলে প্রায় শতাধিক পুরস্কার।দেশ পরিচয় নন্দন চতুরঙ্গ অনুষ্টুপ ছাড়াও অসংখ্য লিটল ম্যাগাজিনে নিয়মিত লিখে চলেছেন৷


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন