মধুমিতা বসু সরকার / দু'টি কবিতা
দূরত্ব
তোমার আমার মধ্যে উঠে যাচ্ছে যতি, কোলন, কমা, পুর্নচ্ছেদ -
তবু ব্যবধান দৃশ্যমান।
জারুল বনে মৃদঙ্গ বাজে, ধামসা মাদল
সাঁওতালী রমনীর পিচ ঢালা শরীরী বিভঙ্গ জুড়ে
পিছলে যাচ্ছে সময় -
রামকিঙ্কর খোদাই করে চলেছেন
প্রান প্রতিষ্ঠা হচ্ছে অাবক্ষের
আমার চোখের সামনে প্রতিভাসিত অতীত
তোমার অবিন্যস্ত চুলে হোলির রঙ
এখনোও বসন্ত উৎসবে যাই
বর্নাঢ্যতা হারিয়েছে -
একমাত্র শান্তিনিকেতন জানে সব প্রেমে বসত হয় না
দাঁড়ি, কমা পুর্নচ্ছেদ উঠে গেলেও মনের দূরত্ব ঘোচেনা।
দু প্রান্তের মধ্যেকার সাঁকো ভেঙ্গে গেছে কবে
সেই থেকে আজও আওড়াচ্ছি, সাঁকোটা ভেঙ্গে গেলে যাক
এই ত আমি তোমার কাছে।
মেঘ সরাও
তোমার সারা শরীর জুড়ে আজ ঘন কালো মেঘের
বিষন্নতা -
আমি তোমার বিষন্নতা ছুঁয়ে আহ্লাদের আলো
চিবুক ছুঁয়ে নামছি ক্রমাগত, ওষ্ঠাধরে বিদ্যুত কটাক্ষ-
আমি নোঙর অভিপ্রায়ে তোমার উপত্যকা ছুঁয়ে
তরতর করে নামছি যেন কোনও পাহাড়ি মেয়ের
চলন তৎপরতা
আরো নামছি নাভিমূলে বিদ্রোহ
এতো প্রতিবন্ধকতা ক্লান্ত করেনি একটি বারও
আমি জানি নামতে নামতে, সর্বস্ব খোয়াবো -
নিঃস্ব হলে তুমি বিচ্যুতি বলবে -
তবু্ একবার অন্তত বিষন্নতা সরিয়ে তোমার শরীরে
আহ্লাদের রোদ উঠুক -
আমি সেই রোদে প্রলম্বিত ছায়া হতে চাই -
****************************************************************************



মুখপুস্তকের মাধ্যমে মধুমিতা বসু সরকারের কবিতার সঙ্গে আমরা অনেকেই এখন পরিচিত। অত্যন্ত ঋজু ঘনপিনদ্ধ চিত্রকল্পের মঘ্য দিয়ে কবি একটি অন্তর্জগত নির্মাণ করে কবিতার অন্তর্নিহিত বুনন সম্পূর্ণ করেন। স্বরবর্ণ-এ প্রকাশিত এই দুটি কবিতাই সেই অধরা মাধুরীর সন্ধানে আমাদের টেনে নিয়ে যায়। একজন কবির নিভৃতবিজ্ঞান স্বজ্ঞায় সঞ্চারিত হয়।
উত্তরমুছুন