উদয় ভানু চক্রবর্তী * দুটি কবিতা
জল
আলোকবর্ষ ধরে পৃথিবীতে রয়েছি..
উচ্ছল তরঙ্গের ধারায় ..
পাহাড়ী ঝরনায়..
সরসীর অদম্য স্রোতে..
চলেছি বয়ে শত সহস্র যোজন..
শতাব্দীর আক্রোশ নিয়ে আছড়ে পড়েছি মানব সভ্যতার ওপর ..
ভেসে গিয়েছে হাজার মহেঞ্জোদাড়ো..
কান্না, মড়ক আর হাহাকারের সাক্ষি হয়েছি যত..
শাঁখা সিঁদুর ভেসে গেছে আমারই বুক বেয়ে কত..
প্রেম হয়েছে শ্রান্ত উদাসী..
মমতাজ নুরজাহানের কাহিনী ইতিহাস..
দুঃখ হয়ে ঝরেছি..
দীর্ঘশ্বাসের সাক্ষি হয়েছি..
অভিমান হয়ে মিলিয়েছি বাতাসে..
অযুত বছর ধরে..
মাটি আবাদ করে গোলাপ ফুটিয়েছি..
শষ্য ক্ষেতের হলদে হাসিতে হাসেম চাচার মুখ রাঙ্গিয়েছি..
আনন্দে উথলে উঠেছি চিন্ত্রাঙ্গদার চোখের কোনে..
বিরহ থেকেছে গোপনে..
অসীম সৌন্দর্যের রূপে ফেনিল হয়েছি সাগরে..
উর্বশী, উর্মিলা হয়ে..
কত যুগ ধরে..
গঙ্গা হয়ে পুরাণ মেনে পতিত পাবন হয়েছি..
শঙ্কর মৌলি বিহারিণী..
ভালবাসা জীবন আর সমাপ্তি..
প্রান দিয়েছি..
প্রান নিয়েছি..
লক্ষ লক্ষ আবেগের জমায়েত ..
সৃষ্টি ধ্বংস প্রলয়..
আদি অমৃত শাশ্বত..
আমি অম্বু..
আমি জল !!
ভালবাসা
মাঝে মাঝে এ যে কী সর্বনাশ ঘটে,
নিখোঁজ মন ওই আয়ত কৃষ্ণ তটে-
ইচ্ছে করে নিজের কাছে হঠাৎই হেরে যাওয়া,
কোথাও অভিমানে রক্তাক্ত ছিন্ন পলাশ, বাঁশির সুর,
অথবা সুদূর বর্ষার গান গাওয়া-
পুড়ুক রৌদ্রে সবাই ওরা, ভেসে যাক স্বপ্ন দেখার দু'চোখ,
তবু অশ্রু লুকিয়ে গোপনে দুজনের কথা হোক-
এই যে ব্যথার গভীরে ডুবে রোজ কাঁদা হাসা,
আসলে একসাথে নিঃসঙ্গ হয়ে যাওয়ার নামই ভালোবাসা।
*********************************************************************




কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন