কৌশিক সেন * দুটি কবিতা
চিরহরিৎ অরণ্য
তোমাকে দেখেছি বলো, আলোর দোয়াব যেন
কতদূর পার হলে পথ, নিরলস মালাকার, পুঁতি
জলের সোহাগ গড়া আমূল পাহাড় ভলক্যানো
তোমাকে দেখেছি যেন, নিবিড় গাছের সম্মতি।
সবুজ পাতার সাধ, ঝোড়ো হাওয়া জেনেছিল পাখি
সুখ নয়, সুখা নয়, ভ্রমের বিভবে যদি রাত
কেন তবে মন্বন্তর, পাঁজরের কালবৈশাখী
বেদনা নামিয়ে রাখে, বহুদূরে আদিম কিরাত।
পাখির ঠোঁটের কোণে বীজ, মনসিজ, নত হয়, সেই
তিরের ফলায় যদি বিষ, নখের আঁচড়ে হেমলক
যদি বলি কলমের নিব একদা শ্রাবণ আনবেই
ঋতভাষ যদি সঞ্জীব, মেনে নেবে রাখালবালক।
বড় কাছে আমরা সবাই, হতে পারি কিছু বেশি ঘন
তবু কাটে আলোবৎসর, বিভেদ মেটে কি কক্ষনও!!
শঙ্খচিলজাত
ও কথা থাক তবু, মেঘে মেঘে রাত নামে জানি
গভীর মৎস্যসুখ, ঘ্রাণে ঘ্রাণে জেগে ওঠে স্রোত
উড়ালে সাগর যত, আসলেতো পেলব আধানই
যতদূর ছায়াপথ, চোখের পলকে দেখা মাছের আড়ৎ
ডানায় আরুণীসাধ, বেঁধে রাখা নোঙরের ভাণ
গাভীন নদীর দেশ, মোহনীয় বহুদূর খাড়ি
যা’ছিল ঠোঁটের ভাষা, বুঝেছিল একা সাম্পান
যা’কিছু আবেশ ছিল, আসলে তো পুষ্পবাজারই
নিভৃতমাছের স্বাদ, তবুও তা তরিপতে লেখা
শঙ্খধ্বনির মত প্রাণ, মাজুলি দ্বীপের মহাদেশে
স্রোতে স্রোতে রুপোলি আবাদ, অশ্রুত লক্ষণরেখা
মুছে যায়, ঘুচে যায় মোহযাম নিশুতি আবেশে।
আকাশ তবুও ছিল, কিছু আলো শাওন ভাদরে
মাস্তুলে তুলির আঁচড়, নীড়বাঁধা নদীবন্দরে।।
***************************************************************************************
জন্ম :২২ সেপ্টেম্বর ১৯৭৬ বহরমপুর, মুর্শিদাবাদে। ছাত্রজীবন ও বেড়ে ওঠা বহরমপুর শহরেই। কলেজ উত্তীর্ণ হওয়ার পর কঠোর জীবন সংগ্রাম। সাতাশ বছর বয়সে দিল্লীতে আগমন। কেন্দ্রীয় সরকারী কর্মচারী। আঠেরো বছর ধরে দিল্লীর বাসিন্দা। দিল্লী ও দিল্লীর বাইরে বেশ কিছু পত্র পত্রিকায় লেখা প্রকাশিত ও প্রশংসিত। প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ : রাই জাগো গো, কর্ষণলিপি,পাখিঘুম।







কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন