বুধবার, ১৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪

উপন্যাস * বিশ্বনাথ পাল




[ 'স্বরবর্ণ * ১২ সংখ্যা থেকে শুরু হয়েছে বিশ্বনাথ পালের ধারাবাহিক উপন্যাস 'বামনের চন্দ্রাভিযান'। উপেক্ষা, অনাদর আর দারিদ্র্যের তীব্র দংশনজ্বালা দাঁতে দাঁত চেপে, একটি যুবক কী ভাবে একক নিঃসঙ্গ লড়াইয়ে জীবনের সাফল্য ছিনিয়ে আনে, এই উপন্যাস তারই জীবন্ত আখ্যান। লক্ষ লক্ষ  বেকার যুবকের বেকারত্বের জ্বালার বাণীরূপই শুধু নয়, তা থেকে উত্তরণের অমোঘ বিশল্যকরণীও বটে এই উপন্যাস।]


বামনের চন্দ্রাভিযান 

পর্ব * নয়

বিশ্বনাথ পাল

ভারতী সেনগুপ্তের বাড়িতে জরুরি সভা বসেছে। আমাদের আকাশ গ্রুপের সদস্যদের  নিয়ে।  ভারতীও আমাদের সদস্য। আমাদের আকাশ পত্রিকার পরবর্তী সংখ্যা কীভাবে প্রকাশিত হবে বা আকাশ গ্রুপের সাংস্কৃতিক কাজকর্ম কীভাবে চলবে, সদস্যদের অবদান কী হবে সেইসব নিয়ে আলোচনা। সকাল থেকেই সল্টলেকে ভারতীদের বাড়িতে আমরা হাজির। দুপুরে ওদের বাড়িতে আমাদের খাওয়ার নেমতন্নও। ভারতীরা অবস্থাপন্ন পরিবার। ওর বাবার নিজস্ব ব্যবসা আছে। আমাদের গ্রুপের আট-দশ জন সদস্য ছাড়াও উপস্থিত আছেন একজন মধ্যবয়স্ক লেখক। অঙ্কুশ রায়। তিনি আমাদের গ্রুপের আপনজন, উপদেষ্টা। পত্রিকার চলার পথ সুগম করতে তাঁর পরামর্শ আমরা পেতাম। তিনিই আমাদের পত্রিকা ছাপানোর প্রেস ঠিক করে দিয়েছিলেন। তাঁর সুপারিশে আমাদের কাগজে অনেক প্রতিষ্ঠিত লেখক লেখা দিয়েছেন।

উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার পর অয়নের নেতৃত্বে আমাদের বন্ধুদের নিয়ে যে পত্রিকার সূচনা হয়েছিল, দেখতে দেখতে তার বয়স দশ পেরোল। ইতিমধ্যে আমাদেরও বয়স বেড়েছে। কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের গণ্ডি পার হয়ে কর্মজীবনের দোরগোড়ায় আমরা। আমাদের মধ্যে ডাক্তারি পড়ছিল রজতাভ। সেও পড়া প্রায় শেষ করে ডিগ্রি পাওয়ার আগে একটি হাসপাতালে ইন্ট্রানশিপ করছে। 

অয়ন ছিল আমাদের মধ্যমণি। ওর বাবা কেমিস্ট্রির অধ্যাপক। ফলে উচ্চ মাধ্যমিকের ছাত্রছাত্রীরা ওর বাবার কাছে কেমিস্ট্রি পড়ার জন্য ভিড় করত।  ওর বাবা জয়েন্টের ক্লাসও  করাতেন। ফলে ছাত্রছাত্রীদের অনেকের সঙ্গেই অয়নের পরিচয় বন্ধুত্বে গড়াত। সেই বন্ধুত্বের সূত্র ধরেই অয়নের আকাশ গ্রুপ গঠনের পরিকল্পনা। আমার সঙ্গে অয়নের আলাপ অবশ্য ওর বাবার কাছে পড়তে গিয়ে নয়, বৈকুণ্ঠপুর শিক্ষা নিকেতনে পড়তে গিয়ে। সূর্যপুর থেকে মাধ্যমিক পাশ করেছি আমি। সেখানে উচ্চমাধ্যমিক তখনও চালু হয়নি। ফলে উচ্চমাধ্যমিক পড়তে ভর্তি হলাম বৈকুণ্ঠপুরে। নিজের ইচ্ছায় নয়, আমার ইচ্ছা ছিল নেতাজী কলোনি বিদ্যামন্দিরে পড়ার। কারণ আমার স্কুলের বন্ধুরা ওই স্কুলে ভর্তি হয়েছিল। কিন্তু অনিচ্ছা সত্ত্বেও তড়িৎস্যারের পরামর্শে বৈকুণ্ঠপুরে ভর্তি হলাম। স্যারের পরামর্শ আমার কাছে আদেশের সামিল। কারণ স্যারের কাছে আমার অশেষ ঋণ। 

ক্লাস টেনে পড়ি তখন। ইংরেজি বাদে আর কোনও বিষয়ের প্রাইভেট শিক্ষক ছিলেন না। টেস্টের পরে অবশ্য রামচন্দ্রবাবু বাড়িতে ডেকে আমাদের কয়েকজনকে বাংলা পড়িয়েছেন। তিনি কারও থেকেই বেতন নিতেন না। যাইহোক ইংরেজি কোচিঙের ফিস আমার সাধ্যের মধ্যেই ছিল, মাসে ষাট টাকা, দিতামও আমার টিউশনির প্রাপ্ত টাকা থেকে। মাধ্যমিক পরীক্ষার সাত মাস বাকি। অন্তত অঙ্ক ও ভৌতবিজ্ঞানের একজন শিক্ষক হলে ভাল হয়। ক্লাস টেনে ওঠার পর আমার বাবা তার পরিচিতদের মধ্যে একজনকে পেয়েছিলেন যিনি একটি নামী স্কুলের অঙ্কের শিক্ষক। বাবার অনুরোধে তিনি আমাকে বিনা বেতনে অঙ্ক করাতে রাজি হয়েছিলেন। ফলে বাড়ি একদিন গিয়ে অঙ্কের ‘করণী’ অধ্যায়টা শুরুও করেছিলাম। কিন্তু দ্বিতীয় দিনেই গিয়েই দেখা গেল কী কারণে তাঁর পা ভেঙেছে, তিনি শয্যাশায়ী। ফলে স্কুল বাদে অন্য কারও কাছে আমার অঙ্ক শেখার ইতি ঘটল। এদিকে স্কুলে সামনের বছর সম্ভাব্য প্রথম বিভাগের তালিকায় আমার নাম রেখেছেন শিক্ষকরা, বিশেষত তড়িৎস্যার।

এরই মধ্যে একদিন স্কুলের একবন্ধু রাজকুমার এল আমাদের বাড়িতে। নাম রাজকুমার হলেও ওরও বাড়ির আর্থিক অবস্থা ভাল ছিল না। ও জানাল তড়িৎবাবুর কাছে ও বিনা বেতনে  পড়ে। তড়িৎবাবুকে আমি গিয়ে যদি আমার দুঃস্থতার কথা বলি তাহলে আমাকেও পড়াবেন। তড়িৎস্যার পড়াতেন অঙ্ক ও ভৌতবিজ্ঞান—দুটোই বিজ্ঞান বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।  কিন্তু কারও কাছে গিয়ে নিজের দুঃস্থতার কথা বলা আমার কর্ম নয়। ফলে প্রস্তাবে রাজি হতে  পারলাম না।

দু-একদিন বাদে একদিন স্কুলে বসে ক্লাস করছি। হঠাৎ ক্লাসে তড়িৎস্যারের প্রবেশ। আমাকে লক্ষ্য করে বললেন, “সোমনাথ, টিফিন পিরিয়ডে তুই আমার সঙ্গে দেখা করবি।” 

করলাম। তড়িৎবাবু বললেন, “আমি কী করে জানব যে তোর সায়েন্সের কোনও টিচার নেই!” 

আমি নির্বাক। দু-এক মুহূর্ত পরে স্যার আবার বললেন, “তুই আজই সন্ধেবেলায় বইখাতা নিয়ে আমার বাড়ি চলে আয়। আরে দশটা ছেলের সঙ্গে আরও একজনকে পড়াতে আমাকে কি অতিরিক্ত পরিশ্রম করতে হবে? হবে না তো। শুধু একটা খাতা বেশি দেখতে হবে। আমার বাড়ি চিনিস তো? না চিনলে সুদীপের সঙ্গে আসিস, ওরও পড়া আছে আজ।”  

বুঝলাম কয়েকদিন আগে রাজকুমার ও আমার কথা মা আড়াল থেকে শুনেছিল। তাই মা আজ সকালে এসে তড়িৎবাবুকে অনুরোধ করেন তার ছেলেটিকে যেন স্যার বিনা বেতনে পড়ান।


তো, এইভাবে মাধ্যমিকের আগের শেষ সাত মাস সুদীপদের ব্যাচে তড়িৎস্যারের কোচিঙে অঙ্ক ও ভৌতবিজ্ঞান পড়ি। একটা আক্ষেপ ছিল অঙ্কে লেটার পাইনি বলে। ৭৬ পেয়েছিলাম। অঙ্ক ছিল সবার শেষে। পরীক্ষা দেওয়ার পর স্যারকে প্রশ্ন দেখাতে গিয়েছি। অঙ্কে কোন কোন প্রশ্নের উত্তর করেছি মিলিয়ে দেখা গেল ৮০ নম্বরের উত্তরই করিনি, ফলে লেটার পাওয়ার কোনও সম্ভাবনাই নেই। স্যারের গলায় হতাশা ঝরে পড়ল। আসলে আমার আত্মবিশ্বাস বেশ কম ছিল— অঙ্কটা ধরে ধরে সময় নিয়ে করতাম যেন ভুল না হয়। ফলে তিন ঘণ্টায় ৭৬-এর বেশি উত্তর করতে পারিনি। পরিমিতির একটা অঙ্ক করতে গিয়ে সূত্রটা কিছুতেই মনে পড়ল না। নাহলে ৮০ হয়ে যেত। তবে রেজাল্টে বেরোলে দেখা গেল ৭৬-এ কোনও ভুল ছিল না।আমার প্রাপ্ত নম্বর ৭৬-ই।এমনকী জ্যামিতির উপপাদ্য লেখাও আমার এতটাই সঠিক ছিল এক নম্বরও কাটেননি পরীক্ষক। এটুকুই ছিল আমার সান্ত্বনা। এরপর হয়তো এক চোরা আত্মবিশ্বাস ছুঁয়েছিল আমায়— অঙ্কটা বোধহয় একটু আধটু পারি।

তো যে স্যার আমাকে বিনাবেতনে পড়ান, আমি অঙ্কে লেটার পাব না জেনে বিমর্ষ হয়ে পড়েন, তাঁর পরামর্শ কি উড়িয়ে দেওয়া যায়? মাধ্যমিকে স্কুলের প্রধান শিক্ষকের আগ্রহে আমাকে  ঐচ্ছিক বিষয় নিতে হয়েছিল অঙ্ক। নিয়ে তো পড়ি অথৈ জলে। ঘন জ্যামিতি আরও কী সব ছিল। কেসি নাগের বই। তখনও তড়িৎবাবুকে একদিন সমস্যার কথা জানাতে স্যার ছুটির পরে এক্সট্রা ক্লাস নিয়ে ঘন জ্যামিতি ও কিছু অঙ্ক বুঝিয়ে দিয়েছেন। ওই পেপারে ৬৬ পেয়ে মোটামুটি  মুখরক্ষা করি। ফলে তড়িৎবাবুর পরামর্শে স্কুলের বন্ধুদের ছেড়ে বৈকুণ্ঠপুর শিক্ষা নিকেতনে আমার ভর্তি হওয়া এবং অয়ন ও রজতাভর সঙ্গে আলাপ। 

এই প্রসঙ্গে একটা ঘটনার কথা মনে পড়ে গেল। বলি। 

তড়িৎবাবুর পরামর্শে বৈকুণ্ঠপুরে ভর্তি তো হলাম। কিন্তু যাব কীভাবে? আমার বাড়ি থেকে স্কুলের যা দূরত্ব হেঁটে যেতে চল্লিশ মিনিট সময় লাগে। প্রথম দু-একদিন হেঁটে যাতায়াত  করলাম। কিন্তু এতটা পথ প্রায় কান্না পাওয়ার মতো অবস্থা। বিকল্প রিক্সায় যাওয়া যায়, কিন্তু ভাড়া চল্লিশ টাকা। প্রতিদিন চল্লিশ চল্লিশ আশি টাকা খরচ করে স্কুল করা অসম্ভব। অথচ  বাড়িতে যদি একটা সাইকেল থাকত, তাহলে অনায়াসেই এই সমস্যার সমাধান হত। ক্লাস এইটে থাকতেই সাইকেল চালানো শিখেছি পাড়ার এক বন্ধুর সাইকেল ধার করে। তখন মনে হত সাইকেল চালানো ও সাঁতার—এই দুটো বিষয় পুরুষ মানুষের অবশ্যই জানা উচিত। যাইহোক, দুটোই শিখেছিলাম। 

তৃতীয় দিন আর স্কুলে না গিয়ে সাইকেলের বায়না ধরলাম বাড়িতে। বিশেষত বাবার কাছে। যে করেই হোক আমাকে একটা সাইকেল কিনে দিতেই হবে। নাহলে আমার লেখাপড়া বন্ধ হয়ে যাবে। এদিকে অভাবের সংসার। হুট বললেই সাইকেল কেনা যায় না। নতুন সাইকেল তখন প্রায় হাজার দুয়েক টাকার ধাক্কা। কিন্তু আমি নিরুপায়। দু-দিন না খেয়ে থাকলাম। দাবি আদায়ে অনশন বলা যেতে পারে। অনশনের তৃতীয় দিনে আমার জামাইবাবু মানে বড়দির বর, যার বিয়ে পাড়াতেই হয়েছিল অর্থাভাবে কালীঘাট মন্দিরে, আমাদের বাড়িতে এসে একটা পুরনো সাইকেলের হদিস দিল। আটশো টাকা দাম। রেসিং কার সাইকেল। 

এই প্রস্তাবে বাবাকে রাজি করানো গেল। লাল ও সাদা রঙের মিশেলে উচ্চতায় খানিক ছোট রেসিং কার সাইকেল, হোক না সেকেন্ড হ্যান্ড, তাও তো সাইকেল। আমার কাছে হয়ে উঠল পক্ষীরাজ ঘোড়া।

সেই পক্ষীরাজে চেপে প্রথম যেদিন বৈকুণ্ঠপুর স্কুলে গেলাম, যাওয়ার পথে ঘটল এক বিপত্তি। স্কুলের গেটের কিছু আগে রাস্তায় একটা রিক্সার চাকার নাটবল্টুতে আমার সাইকেলের চাকার রিং আটকে সাইকেলসহ আমি চিৎপাত। পথচলতি মানুষের কথা কানে গেল, “এমন পাগলের মতো কেউ সদাইকেল চালায়!” আসলে নিজের বাহন চালানোর আনন্দে ওটা যে পক্ষীরাজ ঘোড়া নয়, সাইকেল— ভুলে গিয়েছি। ফলে গতিবেগের বিষয়ে কোনও খেয়াল ছিল না। যাইহোক ক্ষয়ক্ষতি বিশেষ হয়নি। নেভি ব্লু রঙের স্কুলের প্যান্টটা হাঁটুর কাছে ফুটো হ্য়, যা পরে রিফু করতে হয়েছিল। আর পায়ের খানিকটা অংশ ছড়ে গিয়েছিল। এরপর অবশ্য গতিবেগ সম্পর্কে সচেতন হয়েছিলাম।  

এর দশ-এগারো বছর পরে অবশ্য তড়িৎস্যারর একটি পরামর্শ রাখতে পারিনি। সেই প্রসঙ্গে পরে আসব। 

আবার পূর্ব প্রসঙ্গে আসি। নতুন করে আকাশ পত্রিকা প্রকাশ করতে কে কী ভাবে সাহায্য করবে এই প্রশ্ন উঠল সভায়। আমি স্পষ্ট জানালাম যে আমি চাঁদা দেব, লেখা চাইলেও দেব, কিন্তু সময় দিতে পারব না।

আকাশ গ্রুপের সঙ্গে যুক্ত থাকার জন্য অনেক সময় দিতে হত। আমাদের পত্রিকা ছাপা হত উত্তর কলকাতার একটি প্রেস থেকে। ফলে পত্রিকা বেরনোর সময় ম্যাটার জমা দেওয়া, প্রুফ দেখা প্রভৃতি কাজে বহুবার প্রেসে ছুটতে হত। এসব ছাড়াও প্রতি রবিবার সন্ধ্যায় আমরা নিজেদের লেখা পড়তাম অয়নের বাড়িতে জড়ো হয়ে। লেখা পড়ার পর শ্রোতাদের মতামত চাওয়া হত। আমি বেশির ভাগ সময় নিরুত্তর থাকতাম। কিন্তু অয়ন প্রত্যেকের লেখা শুনে খুব সুন্দর ব্যাখ্যাসহ সমালোচনা করত।  সেই সময় বাজারে মোবাইল ফোন এলেও স্মার্ট ফোন আসেনি। মোবাইল মারফৎ সমাজ মাধ্যমে যোগাযোগ রাখা কল্পনাতীত। হয়তো অরকুট সবে পাখা মেলেছে।  লোকে কম্পিউটারে তার স্বাদ পেত। 

ফলে সপ্তাহে একদিন বন্ধুদের সঙ্গে দেখা হওয়া, নিজেদের লেখা পড়া বেশ ভাল একটা ব্যাপার ছিল। প্রায় আট-দশ বছর এই আড্ডা ও সাহিত্যপাঠের নিয়মিত সদস্য ছিলাম। কিন্তু যে দিনের কথা বলছি তখন বুঝে গিয়েছি যে চাকরি-বাকরি না পেলে এই সাহিত্যানুরাগী বন্ধুদলেরও করুণার পাত্র হয়ে থাকতে হবে। কথাটা অয়নও আমাকে একাধিক বার বলেছে। ফলে স্থির করলাম, এবার ছড়ানো ছেটানো মনটাকে জড়ো করে সংহত করতে হবে। একটা সরকারি  চাকরি পাওয়ার যোগ্যতা আমার সত্যিই আছে কিনা তাও পরখ করে দেখার জন্য প্রয়োজন  একাগ্র হয়ে পড়াশোনা করা। এর জন্য কিছুদিনের জন্য আকাশ গ্রুপ, পত্রিকা, সাহিত্যসভা সমস্ত কিছুর থেকে দূরত্ব রচনা করতে চাইলাম। এমনিতে শুধুমাত্র বই মুখে করে বসে থাকার সুযোগ বা বিলাসিতা আমার ছিল না। আমাকে টিউশনি করে খেতে হত। পাশাপাশি বাবা যখন যে  ঠাকুর বানাত, তার চোখ আঁকা ও অন্যান্য কাজেও বাবাকে সাহায্য করতাম। ফলে চব্বিশ ঘণ্টার  মধ্যে দিনে দু-তিন ঘণ্টার বেশি পড়ার সময় পেতাম না। এখন এই দু-তিন ঘণ্টাটাকে সঠিক ভাবে ব্যবহার করতে গেলে উপলক্ষ্যগুলোর গায়ে দূরত্বের পর্দা দেওয়া প্রয়োজন ছিল, যাতে দৃষ্টি লক্ষ্যচ্যূত না হয়।  


****************************************************************

বইমেলায় প্রকাশিত হয়েছে। প্রকাশকঃ পরম্পরা প্রকাশন।

যোগাযোগঃ 9830747017



*****************************************************************


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন