মানসলোক মন্ডল * দুটি কবিতা
বিষাদ ও স্তোত্র- ৫১ ।। ক্রুশের পেরেক
শীতের জারুল ডালে রাত নেমে এলে
থোকা থোকা বক আর ফুটে থাকা কাক
ঘরোয়া বিবাদ সারে শাখার পাঁজরে।
ঝরে যাওয়া পাতাদের শোকগাথা বুকে
ডালগুলো কথা বলে সারা রাত জেগে
ডানাখসা পালকের ক্ষতটির সাথে।
আঁতুড়ের মাটি মাখা প্রবীণ পাতাটি
রেশনের জলে খোঁজে শেকড়ের গান,
পালতোলা ধুলোঝড়ে শিশির পতন।
পালকেরা লিখে রাখে বাকলের গায়
বাতাসের গতিপথে মেঘের প্রসব,
কুঠারের মধুমাসে আগুনের ঘ্রাণ।
জুজুব গাছের নিচে যিশুর মুকুটে
দিনরাত জমা হয় ক্রুশের পেরেক!
বিষাদ ও স্তোত্র- ৫২ ।। নৃশংস প্রলাপ
আঁশের শরীরে ঢাকা অবিচল পাখনার ঘুমে
ঢেউ ভাঙে বাসি মাছ, জলচর মেঘের ছায়ায়।
প্লবতার অভিমানে নাড়া বাঁধে মৃত চাঁদমালা
প্রণাম ভুলেছে যাকে, ভাসানের খর অপমানে।
পটিয়সী ডাঁটো চাঁদ ঠোঁট-ভাসি তরল আদরে
মুঠো মুঠো রাত চ'ষে, চলে যায় বিপরীত পাড়ে।
সকাতর নিশিবক বাওড়ের খইফোটা লাজে
অসহায় ফুল খোঁজে, জোছনার কালসিটে দাগে।
ভাসমান জলপোকা পায়ে আঁকে গুঁড়ো গুঁড়ো ঢেউ,
তারাখসা আলোটির ছাই মাখে মৃদু পরমায়ু ---
এমন ছবির মাঝে, মুজরোয় বেলোয়ারি সাজে
রাতভোর ফুটে আছে, ঠুমরির অলক্ত শালুক!
নাভি বেয়ে উঠে আসা পারদের স্নায়বিক বিষে
অনুনয়ী ইহকাল হাত সেঁকে নৃশংস প্রলাপে!
******************************************************************************************************
মানসলোক মণ্ডল
জন্ম: ০৯.১১.১৯৬৪, হলদিয়া,
পেশা: চাকুরিজীবী,
লেখা শুরু: ১৯৮৪, চূড়ান্ত অনিয়মিত,
নিজের মাঝে নিজেই থাকেন। কান পেতে নিজের কথা নিজেই শুনতে ভালোবাসেন।




কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন