শিবালোক দাস * দুটি কবিতা
পোড়া রুটির দিব্যি
চাদরে জড়ানো তখন আমার
ঈশ্বরীর নবজাতক, ছড়িয়ে দেওয়া
চুল সরিয়ে ভাবলাম সপাটে কষানো
চড়টা মুছে ফেলি ওর গালে।
পোড়া রুটির দিব্যি করে বলছি, শরীর
থেকে ওর উঠে দাঁড়িয়েছে যে সমস্ত নীরব
খাদ ও কঙ্কালের পরত, ছোট করে
দেব আগুনে দগ্ধ করে।
আমি জানি, বিশ্বাসে ঘা মেরেছে,
তারপর কিছুক্ষণ চুপ করে বসে
থেকেছে নরম রোদ ডোবানো দুটি
পায়ের কাছে, আজ হয়তো আমাকে
অপবিত্র অবস্থায় কোনো রেখা ছুঁয়ে
বলবে, আমি নারীজন্মের অনেক পরে
খুঁজে পেলাম একটি কবিতা, যা চাঁদকে
বলে, তুমি আমাকে ভেঙে দাও, আমি
পেতে রাখি ঠোঁট, যার সান্নিধ্য লাভের জন্য
পাঁচবার জলে ভেসে তুলে এনেছি কাঠ।
পোড়া রুটির দিব্যি করে বলছি, আমি
কল্পতরুর নীচে হতে চাইনা ছাই।
চারিপাশে লুকোনো দেওয়াল
নরম হাতের পাতার মধ্যে সদ্য বেড়ে
ওঠা চারাগাছটা থেকে তুলে নিই দুটি পাতা,
দু বেলার খিদে মেটানোর জন্য।
চারিপাশে লুকোনো দেওয়াল,
তার মধ্যে কোনো আবছা হাত
ভেসে বেড়ায় না রোমন্থনে।
হেসে ওঠো, উল্লাসে বনভোজন সারো,
যতক্ষণ পর্যন্ত না কেউ তুলে নিয়ে যায় তোমাকে।
চোখ ফুটলে যে অন্ধকারের ভিতর থেকে তুলে
এনেছিলে তোমার কেশগুচ্ছ, তাকে প্রণাম করো।
তবু কোনোদিন রাস্তা উল্টো পায়ে পিছিয়ে এলে
সামনে তুলে ধরার দরকার নেই ভাগবত,
আয়নার ভেতর বিস্মরণ, বিস্মরণের ভেতর
অমসৃণ অনুভূতি, নেহাত পাশা খেলার দান নয় !
যাকে তুমি ঘূর্ণনে করেছ মুগ্ধ,
আগুন দিও না, পুড়ে যাবে কৌস্তুভ,
আঙুলের ভেতর তখন কি শীতার্দ্র চাও?
চারিপাশে লুকোনো দেওয়াল,
পাহাড় ছোঁবার আগে যে বরফ গলে
জল হয়েছিল, দেখো, সেখানে একটি
হাঁস সেই জলের অবকাশে লিপ্তপদ খুঁজে মরে।
***************************************************************************************************
শিবালোক দাস
তরুণ কবি শিবালোক দাস-এর শৈশব কেটেছে মুর্শিদাবাদ জেলার কান্দি শহরে। বর্তমানে কলকাতার আই.পি.জি.এম.ই.আর. এবং এস.এস.কে.এম. হাসপাতালে এম.বি.বি.এস এর তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। ক্লাস এইট থেকে কবিতা চর্চা শুরু। সাহিত্যকে ভালোবাসেন এবং আলাদা আঙ্গিকে তুলে ধরার চেষ্টা করেন। এখনও পর্যন্ত কোনও প্রকাশিত গ্রন্থ নেই।





কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন