প্রাণজি বসাক * দুটি কবিতা
মনমরা মুখ
মশাল নিভে গেলে হেঁটে যায় মুখস্থ মানুষ শহর প্রান্তে
কোথাও কোনো প্রতিবাদ নেই শূন্য স্থান প্রতিচ্ছবিহীন
করতলে গভীর রক্তদাগ আধভাঙ্গা চাঁদের রঙে রঙ্গিন
পাঁচ-পাঁচ দশটি আঙুলে পিষে মারতে থাকে মানুষেরা
থ্যাঁতলে গেছে সনাতনী মর্ম- ভ্রান্ত সিদ্ধান্তে স্তম্ভিত মন
এই শহর কি কখনও মনে রাখে কাহারও মনমরা মুখ
আঁচল ছুঁয়ে গেছে বাতাস সান্ধ্যকালীন মহড়া আসরে
মেঝেতে আলপনা সারারাত জেগে থাকে অহংকার -
আর তো আর প্রান্তজন মানুষ মানুষের হেতু অন্ধকার
মহাবিশ্বে মহাকালের গহ্বরে প্রবেশ করে কথা পাড়ে
নিকানো গদ্যে
মাধ্যাকর্ষণ সূত্র মুখস্থ করতে করতে কিশোর বালক
হঠাৎই লোক হয়ে ওঠে - বোঝে ঢেউ তরঙ্গ কমলিকা
নিকানো উঠোন ভেঙে সে উঠে দাঁড়ায় উপল অনুভবে
ভোর রাতে স্বপ্নে দেখা অস্পষ্ট তন্বী সরস্বতী অনুবাদে
অদ্ভুত একটা নদী সবসময় পেঁচিয়ে থাকে মগ্ন শরীরে
এখন তার পকেটভর্তি ক্রোধ বীরত্বে হলুদপাতার চিঠি
উপশম নিরাময়ের রঙিন মেঘের আকাশ দূরে দূরান্তে
নিজের পথ নিজে বানাবে এমন জেদে আকর্ষণ সূত্রে
লোক গান ধরে আর মানুষ হয়ে ওঠে সন্ধেবেলার মন্ত্র
মুখে মুখে কোথাও বৃষ্টি নামে মানুষ কাছে এসে দাঁড়ায়
***********************************************************************************************
পেশায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রশাসক ও নেশায় কবি। হিন্দি বলয়ে বাংলা ভাষার কবি। কবিতাই একমাত্র জীবনের ওষধি, একথায় বিশ্বাসী। স্কুল ও কলেজ জীবন কেটেছে উত্তরবঙ্গের তুফানগঞ্জ তথা কোচবিহার শহরে। চাকরিসূত্রে রাজধানী দিল্লিবাসী প্রায় ৪৩ বছর। আইআইটি দিল্লির ক্যাম্পাসে এবং আশেপাশে কাটালেন দীর্ঘ জীবন। কবিতা আড্ডা জমে ওঠে এখান থেকেই।
খোলবাদক পিতা ছিলেন তার কবিতার প্রেরণা। মূলত লিটম্যাগের কবি। কবিতা ছোটোগল্প অণুগল্পে তিনি স্বতঃস্ফূর্ত। দেশবিদেশে বহুবার সম্মানিত। বাংলা কবিতা নিয়ে বহুবার বাংলাদেশ এবং দুবার ইউরোপ ভ্রমণ করেছেন।
রূপসী বাংলা পুরস্কার, বনানী পুরস্কার , ভারত- বাংলাদেশ সাহিত্য সংহতি পুরস্কার, শৃন্বন্তু সারস্বত সম্মান, উত্তর বাংলা পুরস্কার,তিনবাংলা সম্মাননা উল্লেখযোগ্য। বিভিন্ন সময়ে তিনটি পত্রিকা এবং দুটি কাব্যসংকলন সম্পাদনা করেছেন। তাঁর রচিত কাব্যগ্রন্থের সংখ্যা ২২ টি।






কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন