গুচ্ছ কবিতা * মনোজ বাগ
বৈজয়ন্তি
পত্ পত্ করে উড়ছে তোমার বৈজয়ন্তি !
যুদ্ধ জয়ের নিশান !
সারি বদ্ধ শান্তি সেনারা মিছিলে সামিল ।
ঝেঁপে আসা আমজনতা -- যারা মূলত জনমজুর , কেরানি , কৃষাণ -- অভিভূত ।
পুষ্পবৃষ্টি হচ্ছে মহাশূন্য থেকেও ! বাহ্ !
স্তবক হাতে যত আমলা-নেতা-মন্ত্রীরা শশব্যস্ত ইষ্ট বন্দনায় ।
আইন-কানুন সব শিকেয় তুলে গোটা রাজ্য জুড়ে
চলছে বিজয় সম্মিলন !
ক্ষোভ অসন্তোষগুলি প্রকাশ্যে নেই ।
অগরু আতরে সুগন্ধিত সব দেহ -
ফুঁসে ওঠা দ্রোহগুলিতেও ঢেলে জল
উদ্দাম তান্ডবে মেতেছে নারী - পুরুষ ।
বাদ্যি বাজছে - লয়দার মাদলের বোল ।
যুদ্ধ মানেই সংঘর্ষ ।
যুদ্ধ মানেই রঙ ও রক্ত হোলি ।
যুদ্ধ মানেই কারো হার কারো বা জিৎ ।
যুদ্ধ মানেই ফুলের মতো ফুটে থাকা লাশের পাশে লাশ ।
যার একটিও আমার বা আমার কারোর নয় ।
সবই অন্যের ।
অন্য কারোর বাবার , কাকার , জ্যাঠার , দাদার ...
মুখরিত চারপাশ ।
মহোৎসব !
টিপে ধরা সব কণ্ঠের চাপা আর্তিগুলি আর কোথাও নেই !
কোথাও কী নেই -- অস্ফুট সব গোঙানি !
হাড় হিম করা সব রুদ্ধশ্বাস !
তারা আজ কোথায় !
যারা সত্যদর্শী , যারা সব জানেন বোঝেন ?
যারা জানেন , কোন বর্ষণ কতটা অস্বস্তির ।
যারা জানেন , কার নিদাঘ কতটা অসহ্যের ।
যারা জানেন , মধু মেশানো বিষ কতটা উপাদেয় -
গরল মেশানো মধু কতটা ক্ষতির ।
এ ভূমি বধ্যভূমির !
কাদের ?
নাকি মরূদ্যান !
কাদের ?
হট্টমেলার দেশ আমাদের ।
এত হট্টমেলার দেশও আজ গুমসুম !
কেন এত গুমসুম !
প্রথম আলোয়
অন্ধ দুটি চোখ খুঁজে ফিরছে আলো , খঞ্জ দুটি পা ঘুরে দেখছে পথ ।
কেউ এমনি আতুর-পঙ্গু , পড়ে আছে ।
যে নিঃস্ব - সর্বশ্রান্ত , বাড়িয়ে দিয়েছে হাত ।
যে দুঃস্থ - ক্ষতবিক্ষত , বরাভয় চাইছে ।
আর আমি না অন্ধ , না পঙ্গু , না দুঃস্থ , না আতুর -- চেয়ে আছি যেন প্রাণহীন পাথর ।
বলি , ও পাথর -- পাথর চোখের সব অবরোধগুলি ভেঙে এবার সর্বতোব্যাপ্ত করো দৃষ্টি ।
প্রাণের স্পর্শটি রাখো সর্বংসহা এই মাটিতেই ।
যে মাটিই আমাদের সমস্ত শক্তির উৎস ।
দিনান্তে ঘরে ফেরা পাখিরা আবারও খুব ভোরে , দেখি
ডানা মেলতে মেলতে উড়ে যাচ্ছে ছুন্নি হয়ে দূরে ।
যে টুকু বলার
সঙ্গীতের মতো বেজে বেজে ওঠো তুমি ।
আমি তোমার অন্তর্ধ্বনি তন্নিষ্ঠ হয়ে শুনি ।
তোমার সুর , তোমার ধ্বনি ,
তোমার তাল , লয় ও বাণী -
নিরন্তর তরঙ্গের মতো ।
আর কিচ্ছুটি নয় -
ঐ তরঙ্গে চিরদিনই উথাল-পাতাল যেন হই
আমার চাওয়া এই এতটুকুই ।
স্থির নৈঃশব্দ্যেও যা জেগে থাকে
কখনো মর্গের পাশে যাই ,
দেখি , স্থূপাকৃতি লাশ , নশ্বরতা ।
শ্মশানে গিয়ে দাঁড়াই -- দেখি , ভস্মীভূত কাঠ , সাদা ছাই ।
নৈঃশব্দ্যের মধ্যেও জেগে থাকে শ্মশান ও মর্গের কথা ।
ঝুঁকে পড়া পাংশু পাতায় হাওয়া লাগে ।
হাওয়া লেগে ঝরে যায় শুকনো পাতা ।
তার মর্মর ছুঁয়ে যায় স্মৃতি ।
দূরাগত ঐ ধ্বনি যখনই বাজে , খুব তন্ময় হয়ে শুনি ।
অন্ধকার সান্দ্র হলেও যত দূর দৃষ্টি যায় তা দেখি ।
ছড়ানো ঘাস -- ঘাসের অঙ্কুর ।
ঐ ঘাসের ওপরই পা দুটি ফেলে যখন চলি -
অনাগত সময়ের ধ্বনি কানে শুনি ।
ভালোবাসা যারে কয়
ভালোবাসা শেখো ।
ভালোবাসাও শিখতে হয় ।
জানতে হয় তার কলা-কৌশল ।
যারা শিখেছে , তারা জানে ।
যারা শেখেনি , তারা জানে নি ।
একটা বৃত্তি আছে যাকে বলে আগ্রাসন ।
আছে কেড়ে-কুরে মেরে-মুরে সব কিছু আত্মসাৎ করে নেওয়ার অদম্য ঝোঁক ।
যো সো করে সব নিজের করে নেওয়াতেও এক ধরণের আত্মতৃপ্তি থাকে ।
তবে তা অন্য কিছু , ভালোবাসা নয় ।
ফুটে আছে একটি ফুল ।
দেখে মুগ্ধ তুমি ।
তার বর্ণে গন্ধে আবিষ্ট তুমি বিমূঢ়ও হতে পারো ।
তবে যা প্রকৃত সত্য -- আসক্তি নয় ,
ভালোবাসা হলে , ভিতর থেকে তুমি তার দাসস্য দাস হবে ।
প্রভু নয় ।
এই দাসবৃত্তিই একজন মাকে আদর্শ মা হতে উদ্দীপ্ত করে ।
একজন পিতাকে সর্বস্ব পণ করেও সংসার নির্বাহে প্রবুদ্ধ করে ।
উচ্ছল একটি যুবককে করে ঘোর সংসারী ।
একটি যুবতীকে এক পরিবারের মায়া কাটিয়ে আর এক পরিবারে মিশে যাওয়ার ইন্ধন দেয় ।
আমি অজস্র দম্পতি দেখেছি ।
যারা একে অন্যের দাসত্ব করতে করতেই সারাজীবন পরস্পরের পাশে থেকেছেন ।
সন্তানের জন্ম দিয়েছেন , তাদের লালন-পালন করে বড় করেছেন ।
জীবন-যজ্ঞের অগ্নিটিকে সদা প্রজ্জলিত রাখতে যা যা করতে হয় সব করে একদিন বিগত হয়েছেন ।
তাদের উত্তরসুরিরা তাদের সে সাক্ষী বহন করছেন ।
নিঃস্ব হওয়ার আনন্দ কী ,
সম্পূর্ণ রিক্ত থাকার সুখ কতটা -
কিছুর অভাব বোধও কতটা উজ্জ্বল করে আমাদের , বা কান্নারও যে মাধুর্য আছে --
জানতে হলে ভালোবাসা না শিখে উপায় নেই ।
যা আর পাঁচটা বিদ্যার মতোই একটি বিদ্যা ।
যা জানতে জানতেই জানা হয় ।
যাতে সেধে সেধেই সিদ্ধ হয় প্রতিটি মানুষ ।
মায় কীট-পতঙ্গ , পশু-পাখি , উদ্ভিদ ...
সবাই ।
হিংস্র বাঘ-বাঘিনীও জানে , এ বিদ্যা রপ্ত না হলে তাদেরও বাঘ জন্ম , বাঘিনী জন্ম সম্পূর্ণ নয় ।
রাজভিখারী
রাজ-রাজেশ্বর পথে পথে ঘুরে ফিরছেন ।
চান , আমজনতার সহধর্মিতা , সহমর্মিতা , সহযোগ ।
আমরা পশু পাখি , কীট পতঙ্গ , মানুষ মানুষী ,
যে যার জায়গায় , যে যার মতো ঠিকই আছি -- ভালো অথবা মন্দ ।
রাজা তবু ঘুরে ফিরছেন পথে প্রান্তরে ,
হাতে বাটি , কাঁধে ভিক্ষার ঝুলি ।
নাহ্ , এ রাজার নিজস্ব কোন ভালো - মন্দ নেই ।
মন্দ - ভালোও নেই ।
অগাধ ঐশ্বর্যের অধিকারী হয়েও তিনি ঘুরে ফিরছেন তোমার আমার এর তার -- আমজনতার দ্বারে দ্বারে ।
শ্রুতি
কোলাহল বলি বা ক্যাওস
সোরগোলে - হইচই হট্টগোলে কোন সুর নেই ।
যাকে বলি নাদ , যার থেকে জাত হয় শ্রুতির , সঙ্গীতের ,
তাতে কোন সোরগোল নেই , আছে সুর , আছে অশ্রুত বিচিত্র সব লয়ে তালের সঙ্গত।
একজন সঙ্গীতজ্ঞ জানেন , যে কোন ধ্বনিই কেন সুরের দ্যোতক নয় ।
তাই যা নিছকই কোলাহল তা থেকে যতটা সম্ভব নিজেকে দূরে রাখেন তিনি ।
যাতে তার সুর সাধনায় কোন ব্যাঘাত না আসে ।
কিন্তু একজন সাধারণ মানুষের অত বাছবিচার নিয়ে থাকলে কী করে চলে ?
তাই সমস্ত পরিস্থিতিতেই একটু শান্তির জন্য ,
কিছুটা স্বস্তির জন্য তাকে ক্যাওসের মধ্যেও খুঁজে নিতে হয় সেই শ্রুতিই ,
যা তার ভিতরের সুর বোধকে জাগিয়ে রাখে ।
এই বোধ যে মানুষটির হয়েছে তিনিও সুর-সাধক ।
একজন সুর সাধক জেনে হোক বা না জেনেই
সারাটি জীবন ধরে যে সাধনটি করে চলেছেন
তা এক অখন্ড সুরেরই সাধনা ।
যে অখন্ডতায় শত সহস্র কোলাহলও
এক অমোঘ নিয়মে বাজছে ,
এক পরম সুরে ভাসছে ।
কীটপতঙ্গ
মনোজ বাগ
অন্ধকারের কীট আলোয় জগতে এসে হয়ে উঠতে পারে আলোরই কণা ।
ঐ কণাগুলোই আবারও অন্ধকারে ফিরে গেলে
জোনাকির মতো তারাও হতে পারে একটি একটি স্বয়ংক্রিয় আলো।
জীবনও এ রকমই ।
চোখ ফুটে গেলেই তাই সবাই আলো চায় ।
যে আলোর কোন অন্তর-বার নেই ।
ভিতরে আসি , বাইরে যাই ।
পর্দাগুলো সরিয়ে সরিয়ে এ সবই যত দূর দৃষ্টি যায় দেখি ।
ঈশ্বর স্বভাবের মানুষ
আপনি কী ম্যাজিক জানেন ?
এটা কী সত্যিই কোন ম্যাজিক , ইন্দ্রজাল !
এই একটু আগেই ফেটে পড়ছিলেন রাগে , ক্ষোভে --
এখন ধীর , স্থির ...
আলোড়ন কত ভাবেই তো জীবনে আসে ।
তরঙ্গ ওঠে , নামেও ।
হাওয়া কখনো মৃদুমন্দ , কখনো প্রবল ।
তুফান যখনি শান্ত হয় , চেয়ে চেয়ে দেখি --
সমস্ত ওলোটপালটের মধ্যেও আপনি
কী করে থাকতে পারেন এতটা শান্ত , স্থিতধীর !
আপনাকে দেখে হাসি পাওয়ারই কথা ,
বা হওয়ার কথা ভয় -
অথচ আমার এ সব কিছুই হয় না ।
বরাবরই দেখে এসেছি উচ্ছল কোন আবেগই আপনার ভিতরে দীর্ঘস্থায়ী হয় না ।
খরতাপেই হোক বা প্রবল শৈত্যে ,
সব অবস্থাতেই আপনার সমগ্র মুখ-মন্ডল জুড়ে থাকে একটা অদ্ভুত আলো ।
তাকে লাবণ্য বলব , নাকি প্রশান্তি ?
আপনি তো ম্যাজিক জানেন না ।
তবে কী ম্যাজিকের মতোই ভিন্নধর্মী সব অবস্থাকেই তার গভীর অন্তরে টেনে নেয় ওই স্থির প্রশান্তিই !
এ মেয়ে ঠিক মায়ের মতো নন , বড় দিদির মতো
একটা আলোর বলয় তাঁর মতো করেই ঝলঝল করছে মধ্যাহ্নের সূর্যের মতো ।
নাহ্ , দিনদুপুরে নয় , ঘোর একটা দুর্দিনের গাঢ় অন্ধকারে ।
তার সব আলো উত্তাপ সারা অঙ্গে মেখে
অন্ধকারেও জ্বলে ওঠার পরিবর্তে
আমরা আমাদের স্বভাব কালো , স্বভাব ধূসর আবছায়াদের পোষা কুকুরের মতো লেলিয়ে দিয়েছি তার দিকেই ।
ঘুমন্ত মানুষের চোখে আলো বড় বেঁধে কিনা , তাই
তার সামান্য আভাও বড় অসহ্য লাগে আমাদের ।
স্বভাবদুষ্ট মন আমাদের ।
আমাদের চোখের কোণে , হাতের মুঠোয় , বাজুতে -
জমে আছে সহস্রাধিক বছরের সব আদিখ্যেতা ।
এই একবিংশ শতাব্দীতেও যা অন্য কোন কিছুকেই রেয়াত করে না !
আলো স্বভাবের মেয়ে ঘোর অন্ধকারেও তবু ফুটেই থাকেন তাঁর মতো করে ।
তাঁর সব কষ্ট লাঘব করতে এক বিশ্ব প্লাবনে যখন সব ভাসিয়ে দেওয়ার কথা -
তা না করে , এই আমরা একটি দুটি কাগুজে বিদ্যুৎ , ঝলসে উঠছি মাঝে মধ্যে , একটু আধটু দায় সারতে , বিনা মেঘেও ।
দু এক ফালি গর্জেই ঘুমিয়ে পড়ছি , কালেভাদ্রে -- কিন্তু তাতে কী !
সব আলোয় আলো করে আছেন যে মেয়ে ,
তাঁর জন্যই দোয়াত ভর্তি কালি আমরা মজুত করেছি যে যতটা পেরেছি ।
কেন এমনটা করেছি ?
অন্তরে দর্পণ কৈফিয়ত তলব করছে হরবখত্ !
বদ্ধ ঘরে , খোলা ছাদে , রাস্তা-ঘাটে , হাটে বাটেও ...
যদি ভূতের রাজা দিত বর
কোথায় ডোকলামাকান , কোথায় আল্পস !
পামীর থেকে জিল্যান্ডিয়া --
সবই আছে একই বিশ্বে ধরা ।
ভিসুভিয়াসে যখন প্রচন্ড অগ্ন্যুপাত চলছে ,
আমাজনের গভীর নির্জনে যখন খুলে যাচ্ছে অনেক সাবেকী রহস্যের জট ,
দাবদাহে যখন জ্বলে পুড়ে খাক হয়ে যাচ্ছে ক্যালিফর্নিয়া --
আদুরে ব্যাঙের মতো গর্তে ঢুকে আমি মগ্ন হয়ে আছি শীতঘুমে ।
যদিও লেপের ভেতর থেকে জুলজুল চোখে কখনো সখনো বুঝেও নিচ্ছি পরিস্থিতি পরিবেশ আমার জন্য কতটা নাতিশীতোষ্ণ ।
আটার টিন থেকে বেরিয়ে আসে সাদা আরশোলা ,
নালা নর্দমা থেকে পিলপিল করে বেরিয়ে আসা সমাজপতিদের সঙ্গে মিলেমিশে রাস্তা-ঘাটে বিধান দিচ্ছেন :
"কেউ কারো নয় তবু সবাই সবার ।
গনতন্ত্রে মুড়ি - মিছরি , গরু -গাধা-ঘোড়া কেউ আলাদা আলাদা নয় -- সব এক ।"
হোডিং-এ , পোস্টারে ছয়লাম রাজ্য ।
স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত দেশ ।
কান ঝালাপালা হলেও শুনি অমৃতবাণী তা না হলে যাবটা কোথায় !
ঠাঁই নেই - ঠাঁই নাড়াদের - ছিলও না কোথাও কোন কালেই ।
জানি , তাই মিলিয়ে নিই বেসুরে সুর , বেতালে তাল ।
তাল কানাদের সঙ্গে এর'ম বেঁচে থাকা কতটা মরণের , জেনেও ।
এ ভাবেই ছিলাম , আছি , থাকতেও হবে যতদিন ধড়ে প্রাণ আছে ।
ভাবছি কী করি আর কী না করি ।
ভূত রাজার যৎসামান্য প্রজা , এদিক ওদিক দেখি -
কথায় কথায় বর প্রার্থনা যাদের ধাতে নেই ,
তারাও তো মুখ চেয়ে থাকে সেই রাজারই ।
জীবন এ রকমই !
মহাপ্রাকৃতিক ভান
প্রকৃতি এরকমই -
যেখানে যেমন , সেখানে তেমন ।
কোথাও উদ্বৃত্ত বৃষ্টি লাগু করেছে বন্যা ।
কোথাও চরের পরে চর ধূ ধূ করছে বালি ।
যে বুক লালন করে সবুজতা , সজলতা ,
তাতেই কী করে অন্তরীন থাকে গলিত লাভা !
থাকে ।
তবে সোহাগিণী জ্বালামুখী হলেই উগরে দেয় সব ,
তখন আর চেপেচুপে রেখেঢেকে রাখে না কিছুরই ।
এ তো রোজের দেখা , রোজের শোনা ।
শৈত্যে ওম , দাবদাহে নাতিশৈত্য তবু চাই ।
প্রচ্ছায়া আশা করি মধ্যাহ্নে , বৃক্ষের কাছেই -
গুল্ম-আগাছা বা তৃণদের কাছে নয় ।
চলাচল করে রক্ত ধমনী শিরায় ।
চলাচল করে হলাহল আশরীর ।
চলাচল করি তুমি আমি কখনো ডোকলামাকানে , কখনো আল্পস , পামীরে কখনো জিল্যান্ডিয়ায় ।
আর ভূতে পাওয়া মন মেতে থাকে আলাপচারিতায়
এর ওর সঙ্গে
আর গুণকীর্তন করে - যে সুবিধা দেয় , তাঁর ।
গালি দেয় , যে সব কেড়ে কুড়ে নেয় , মারে -কাটে , তাকে ।
প্রকৃতি সবই জানে ।
জানে , কী সে কী হয় -- জানে , কোনটি কী ..
সব জেনে শুনেও চুপ থাকে ,
সব জেনে শুনেও কোন কিছুই না জানার ভান করে ।
*********************************************************************************************
পেশায় ব্যবসাজীবী । কবিতা বেঁচে থাকার রসদ ; অনিবার্য এক ইন্ধনও । প্রিয় কবিতার গ্রন্থ : গীতা , ঈশোপনিষদ , গীতবিতান , আমিই মাটি , আমিই আকাশ (সুজিত সরকার) । কবিতা প্রিয় বিষয় হলেও সাহিত্যের প্রতিটি শাখাই টানে । সঙ্গীত ও চিত্রকলার প্রতিও প্রবল আকর্ষণ আছে । ভালো লাগে ভাবতে : আপাত যা কিছু -- এই সবই এক পরম সত্যেরই প্রকাশ ।





কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন