তাপস কুমার দে * দু'টি কবিতা
কুসুম গলা সকালের স্বাদ
যদি কঠিন ও কোমল ত্বকের শ্লোকলোক শীত হয় ---- চোখের পাতায় লিখে দিও কুসুম গলা সকালের স্বাদ। একটা মুখ ভাসে লাল আর নীল থেকেও দূরে। খুলে খুলে পড়ে শ্বাস পুরুষ সময়ের ধূসর অবকাশে। সেই তুমি শামুকগুচ্ছ ভুলোমন দৈনিক দোতারা হয়ে উঠেছ ঘাতকের চোখে। অনুচ্চারিত মাধবীলতা কটাক্ষের ব্যাকরণ মেনে চলার মতো একটিও সম্পাদক পায়নি। শিল্প শুধু ছবি নয় নিঃসঙ্কোচে রেখে আসা জলের ঘোর আর উত্তরণের সত্তা যেখানে চেতনা আন্দলিত ঝড় মাংসের আড়াল থেকে পাঠ হয় বানানের গদ্যে। ইচ্ছের অস্ত ছুঁয়ে ফিরে আসে ঘর প্রতিবেশি। ফেলে রাখা নিজের পৃথিবী উড়িয়ে দূর করে ধুকপুক করা বুকের নিঃশ্বাস। নিয়ত শব্দ ঠোঁট ছোঁয় বৃক্ষ দুলে ওঠা আবৃত্তি শেষ হলে। হাসে সুগন্ধি মুখ। প্রশ্ন প্রহরের তীক্ষ্ণ আলো ঝলমল লাবণ্য ত্বকের বহুবর্ণ রক্তবীজ ধরে রাখে স্রোত। অবাক ধমনি কি মানুষ জন্মের মহত্ত্ব লিখবে প্রবাহিত রক্তনালি দিয়ে! না-কি বধির প্রার্থণায় দ্যুতি ছড়াবে...
পৃষ্ঠা ছেঁড়া ছায়া
প্রভাতে প্রথম আলোর আলপনায় শরৎ অর্ঘ্য সাজানো।
জানালায় হেসে যাওয়া পাখিরা আঁকাবাঁকা পথ আঁকে।
কিংবা অন্য রকম এক অনুভূতি অনুভব করা যায়, এমন রোদে কুমড়োফুলের শোভা ছড়াচ্ছে।
বানানের পৃষ্ঠায় এসে অপরূপ আবৃত্তি ধ্বনি তোলে।
যেন পেঁজাতুলোর মেঘ অসুর দমনী বন্দনায় ছড়াচ্ছে ছন্দ। ভেসে আসে কবিতার সন্তাপ থেকে শিশির ভেজা ঢেউ।
সৈকত সমুখে ভয়াবহ প্রমত্ত জোয়ারজলে খোলা জন্মান্তরের দুয়ার।
পেরিয়ে এলে দেখা হয় নারীর মতো কোনো নদীর।
মুদ্রাহত পুরাতন বিচ্ছেদের শিলাবৃষ্টি।
অচেনা নক্ষত্র খোঁজে সুরভী চোখের শিল্প।
নেই প্রত্যহ উড়াল দেওয়ার মতো শব্দের আলাপ বিষয়ক শালিকের ওড়াউড়ি।
বোষ্টমী নিরক্ষরেখা দ্রাঘিমাংশ মেপে কিছু পরপর দৃষ্টি রাখে স্বপ্নাবিষ্ট ঘুমের ভেতর।
সেখানে হিজল জন্মে বসন্তেরা ভোরে ডানা নেড়ে বলতে চাইছে,
"দেখুন তো উপরের স্তাবক পুষ্পগন্ধা জ্বলন্ত নগরের উষ্ণ আলিঙ্গন।
ধরতে পারা কথাগুলি মানুষ সৌন্দর্য মিলেমিশে ঘুমিয়ে পড়া কাজলের বাঁকে মিলিয়ে যায় কি-না! "
সূর্যোস্পশ্যার প্রণয়ের পৃথিবী তখন লবনের ক্ষত থেকে দূরে সরিয়ে রেখেছে খুচরো পয়সার পুঁটলি।
পুণ্যাত্মার পদ্মফুল।
অকপট স্বচ্ছজলের বোঝাপড়ায় রেখে যায় অভিলাষের বীজ পোতা বজ্রঘাত।
শরতের গভীরে লালন করে ফসলের হুইসেল।
জ্বলে যায় কোন নদী
ধুমায়িত শিকারির উন্মুক্ত গদ্য।
অল্প আয়ুর গূঢ় গোপন ইশারায় পরিবর্তন হতে থাকে ঘাসের আবাদি সংসার। আগুন সেঁকে আড়াল করে অপরিশোধিত গল্পের পেট্রোল।
এককোণা আকাশ আজ এক গোপন ক্যানভাস।
সংক্ষিপ্তাকারে বিশাল পাথরের কালবেলা যেন একটা লোহার অতীত।
দু-চোখে জলের বুক ফেটে পড়ছে মহাযুদ্ধের দিকে।
সদ্য ফোটা ফুলের চরণগুলোয় ছিল
লঙ্কার মেজাজ।
********************************************************************************************************





কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন