জীবন এক শিল্প
কল্পোত্তম
আমাকে দোষ দিয়ে লাভ নেই তোমার। জীবন কি, জীবনের মানে কি,বুঝতে হবে তোমাকে। এই জগৎ সংসারে আমরা এক একজন অভিনেতা অভিনেত্রী ছাড়া কিছু নয়। এক এক সময় এক এক রকম অভিনয় করে চলেছি দিনরাত।
তোমার যখন বিয়ে হয়নি তখন তুমি এক। বাবা মা'র দুষ্টু মেয়ে হয়ে টোঁ টোঁ করে ঘুরে বেড়িয়েছো সব সময়। কেউ কোনো বাধা দেয়নি। বাধা দিলেও কান দাওনি কখনো। নিজের যা ইচ্ছা তাই করেছো। খাওয়া, পরা, খেলা, এমন কি পড়াশোনা, সবকিছুই করেছো ইচ্ছা মতো। কারোর চাপিয়ে দেওয়া মানতে পারতে না তখন। তারপর বিয়ে হলো। সব স্বাধীনতা হারিয়ে গেল তোমার। স্নান, খাওয়া-দাওয়া, কাজবাজ, সবকিছুই করতে থাকলে অন্যের কথায়। অন্যের হিসেবে চলতে থাকলে পথ। কথাও বলতে লাগলে নির্দেশ মেনে। অস্তিত্ব সংকট না হলেও, গণ্ডিটা ছোটো হয়ে গেল হঠাৎ। তবুও টিকে থাকলে। পরিস্থিতির চাপে বদলে ফেললে নিজেকে। এই পরিস্থিতিই নিয়ন্ত্রক আমাদের। পরিস্থিতির চাপে পড়ে যে কেউ বদলে যায়। বদলাতে বাধ্য হয়। উল্টো পথে হাঁটলে দেখা দেয় অস্তিত্ব সংকট।
------রুবি, রুবি, কাকাকে কি বলেছিলে তুমি?
------কই না তো। কখনো কিছু বলিনি। কাকার সঙ্গে কথাই বলিনি কখনো।
আমার প্রশ্নের উত্তরে এভাবেই জবাব দেয় রুবি। আমি আশ্চর্য হই। তারপর শান্ত গলায় বলি------ঠিক ভাবে খেয়াল করে দেখো।
------সত্যি বলছি।
সে উত্তর জানিয়ে বলে------কাকা কি কিছু বলেছে তোমায়?
------বলেছে বলেই তো বলছি।
------কি বলেছে?
শান্তভাবে জিজ্ঞেস করে রুবি।
------আমার নাকি ছেলে হবে না।
কথাটা বলে রুবির দিকে তাকিয়ে থাকি। সেও তাকায়। আমি আবার বলি------বলো না, কি বিচ্ছিরি কথা! আমার ছেলে হোক, না হোক, তার কি? তার ছেলেগুলো কি আমি নিচ্ছি? নিতে গেলেই কি দেবে সে? খামোখা বাজে বাজে কথা শোনানো। তুমি নিশ্চয় কিছু বলেছো। না হলে এমন কথা বলতো না।
রুবির ভয় হয়। মনে মনে রাগও হয় কাকিমার প্রতি। সে কাকিমাকে বিশ্বাস করে দু'টো মনের কথা বলেছিল। সেগুলোও হজম করতে পারেনি সে। বলে দিয়েছে কাকাকে। সে কথা শুনেই এইসব অপমানজনক কথা শোনাচ্ছে কাকা। ছিঃ! কাকিমা এত জঘন্য হবে ভাবতে পারেনি রুবি। এইরকম মহিলাকে মনের কথা শোনায় কেউ?
------হ্যাঁ গো বলেছিলাম। বিয়ের কয়েক মাস পরে কাকিমাকে বলেছিলাম, আমাদের অসুবিধার কথা। সেই তাহলে…
------জানি তো। তোমার মতো বোকা মেয়ে মানুষ এটাই করবে। আজকাল মনের কথা বলে কেউ? বাবা-মা, ভাই-বোন, পাড়া-প্রতিবেশী, কাউকে মনের কথা বলবে না। কেউ কিছু করে দেবে না তোমার। শুধু শুধু খিল্লি ওড়াবে। নিজেদের ব্যক্তিগত বিষয়গুলো ঘুরে বেড়াবে মুখে মুখে। শুনতে খারাপ লাগবে। যা কিছু উপভোগ, যা কিছু দুর্ভোগ, সব করতে হবে আমাদের। কেউ কারোর কপাল পাল্টাতে পারবে না। হিসেব করে কথা বলতে শেখো। মানুষ চিনতে শেখো। যাতে করে ঠকতে না হয় সারা জীবন।
চুপ করে কথাগুলো শুনে যাচ্ছিল রুবি। উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছিল কাকিমার প্রতি ঘৃণা। না বুঝে কথাগুলো বলে ফেলায় ধিক্কার দিতে ইচ্ছা করছিল নিজেকেও। তবুও চুপ থাকে। নিজের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে না। স্বামীর চোখের দিকে তাকিয়ে শুনে যায় সবকিছু।
বাইরে দরজা খোলার আওয়াজ হয়। কে যেন ডাকে। রুবি রুম থেকে বেরিয়ে ঘোমটা টানতে টানতে জিজ্ঞেস করে-----কিছু বলছো?
------তোমার শ্বশুর আছে?
জানতে চায় লোকটা।
------কি জানি, এখন তো ছিলই। দেখছি ওই ঘরে।
বলেই পা বাড়ায়। মিনিট দু'য়েকের মধ্যে ফিরে এসে বলে-----না গো, নেই। নদীর ওদিকে গেল মনে হয়। কিছু বলে দেব?
------একটু দেখা হলেই ভালো ছিল। আমার মেয়ের জন্য ওষুধ নেব।
------তাহলে বসো। কাউকে ডাকতে পাঠাচ্ছি। ডাক্তর, ডাক্তর, তোমার জ্যাঠা কোথায় আছে, জানো?
পাশের ঘরের এক দেওরকে জিজ্ঞাসা করতেই সে বলে-----না, জানি না। সকালে নদীর দিকে গিয়েছিল। ফিরেছে?
------সে অনেক আগেই ফিরেছে। তারপর, এই এখন কোনদিকে বেরিয়েছে। যাও না বাবু, একটু ডেকে দাও। এরা ওষুধ নিতে এসেছে। কতক্ষণ অপেক্ষা করবে?
------ঠিক আছে।
বলেই বেরিয়ে যায় ডাক্তর। লোকটা কুলির পিঁড়িতে বসে। রুবি নিজের কাজে চলে যায়। আমিও বেরিয়ে যায় নিজের কাজে।
পরের দিন সন্ধ্যা। খাওয়া-দাওয়ার পর বিছানায় গিয়ে ফুঁপরে উঠে রুবি। আমি রেগে গিয়ে জিজ্ঞেস করি------হঠাৎ কাঁদছো যে? কেউ কিছু বলেছে?
------তোমাকে কতদিন থেকে বলেছি, ডাক্তার দেখাও, ডাক্তার দেখাও। আমার কথা শুনবে না তুমি। তোমার তো কিছু না। সকালেই চলে যাও কাজে। ফেরো রাতে। যতসব গঞ্জনা আমার। রোজ রোজ কথা শুনতে হয়। বাড়ির লোক এর তার কাছে বলে বেড়ায়,"এতদিন হলো, কিছু না, কোনো আভাসই পাওয়া যাচ্ছে না সন্তান আসার। কি জানি বাবা, আমাদেরই এমন কপাল মন্দ, না কি লোকেরও, ঈশ্বর জানে! আর লোকের ঘরেও বউ আসছে। বছর ফিরতে না ফিরতেই সন্তান আসছে তাদের। আমাদেরই এমন। কতদিন হয়ে গেল। নাম গন্ধ নেই।"
------এই কথা? তার জন্য কান্নার কি আছে? লোকের হলো তো হলোই। তাতে আমাদের কি? আমাদের না হলেই বা তাদের কি? তাদের আরও দরকার থাকলে তিন চারটে বিয়ে করে সব বউয়ের দশ-বারোটা করে জন্মাতে থাকুক। দু'তিনটে ফুটবল টিম হয়ে যাবে ঘরেই।
লোকের দেখতে নেই রুবি। লোকের দেখলে, লোকের শুনলে, কষ্টই বাড়ে মানুষের। নিজের কি ইচ্ছা, নিজের কি অবস্থা, সেগুলোকে ভেবে সিদ্ধান্ত নাও। সেগুলোকে ভেবে পথ হাঁটো। তোমার অবস্থার কথা জানে না তারা। তারা নিজের অবস্থায় থেকে কথা শোনাচ্ছে তোমাকে। প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ যেভাবেই হোক না কেন, কথা শোনানো সহজ। বিষয়টাকে ভোগা সহজ না। কথায় আছে না, সাপে না কাটলে সাপের বিষের জ্বালা বোঝে না কেউ। এও ঠিক তাই। তোমাকে ভাবতে হবে না। যখন যা হওয়ার ঠিক হবে। যেটা হওয়ার নেই, মাথা পটকালেও হবে না। অতএব বিন্দাস বাঁচো। ওদেরকে বকতে দাও।
রুবি শুনে যায়। আমার কথা শেষ হতেই বলে ওঠে------শুধু কি তাই? তুমি টাকা পয়সা দাও না, সে কথাও বলে বেড়ায় একে তাকে। রোজগার তো করো। এক টাকাও দিয়েছো বাড়িতে? কখনো না। যতদিন বিয়ে হলো আমার, এক টাকাও দিতে দেখিনি তোমাকে। কি যে করো, কোনো কিছুই বুঝতে পারিনি আমি।
------বুঝবে কি করে? বোঝার তো চেষ্টা করোনি। রোজগারের সঙ্গে খরচের বহরটা মিলিয়ে দেখলেই বুঝতে পারবে, কেন দিইনি।
আমাকে কেউ চেনে না। এর তার পিছু ধরে ধরে কাজ জোটাতে হয়। সব সময় পুরো টাকা পাই, তাও না। প্রতি বাড়িতেই কিছু না কিছু পড়তি থাকে। সেই টাকাতেই চালাতে হয়। দেওয়ার পর হাত পাতার থেকে না দেওয়া অনেক ভালো। তুমিই বলো না, এত বড় হওয়ার পর হাত পাততে ভালো লাগে কারোর? তাছাড়া, দিলেও নাম করবে না ওরা। আমাকে এইভাবে বলাটা অভ্যাসে দাঁড়িয়ে গেছে ওদের। সেই জন্যই দিইনি। কথা যখন শুনবো, না দিয়েই শুনবো। দিয়ে থুয়ে কথা শোনার দরকার কি?
রুবি কথা বাড়ায় না আর। কথার মোড় ঘুরিয়ে বলে------আমাকে একটা শাড়ি কিনে দেবে?
------কেন, তোমার কি শাড়ি নেই? অনেক তো রয়েছে। এক্ষুনি শাড়ি কেনার দরকার কি?
-------এগুলো অনেক পুরনো। কোথাও যাওয়া আসার জন্য একটা ভালো শাড়ি দরকার। যেগুলো রয়েছে সেগুলো ঘরে পরার জন্য ঠিক আছে। কোথাও যাতায়াতের সময় পরা যায় না।
------ঠিক আছে নেবে। কয়েকদিন কাজ করতে দাও। এখন টাকা নেই।
------দামি কিন্তু…
------তার মানে?
------তার মানে দামি, কম করে হাজার টাকা দামের।
------ঠিক আছে।
আমি হাসি। রুবিও হাসিমুখে ঘুমিয়ে পড়ে।
কয়েকদিন পরের কথা। সাত-সকালে চিৎকার করতে শুরু করে রুবি।
------কি গো শুনছো, পালঙ্কের তলা থেকে পাথরগুলো সরিয়ে দাও। বাইরে কোথাও রাখো। ঝাড়ু দেওয়ারও জায়গা নেই। কোথা থেকে কি সব পাথর, কাঠ এনে এনে ঘর ভরানো ছাড়া কাজ নেই তোমার। কিছুই তো করো না। কাজ থেকে ফিরে এসে টিভি দেখবে। খেয়ে দেয়ে ঘুমোবে। সকালে ঘুম থেকে উঠে মোবাইলে ফেসবুক করবে, হোয়াটসঅ্যাপ করবে। পাথর, কাঠ দিয়ে কোনো কিছু করার সময় আছে তোমার? শুধু শুধু ঘরটাকে ভরিয়ে রাখা। ছেনি, বাটালি, হাতুড়ি সব ফেলে রাখবে। ধারালো জিনিস, লাগতেও তো পারে কারোর। ছোটো ছোটো ছেলে-মেয়ে কম আসে নাকি এ ঘরে?
আমি ছুটে আসি। ছেনি, বাটালি, হাতুড়ি, মূর্তি বানানোর সব কিছু যন্ত্রপাতি তুলে রাখি বাক্সে। পাথরগুলো পড়ে থাকে আগের মতোই। দূর দূরান্ত থেকে বেছে বেছে নিয়ে আসা পাথর। বাইরে রাখার সাহস হয় না। কাঠগুলোও তাই।
সময় হয়নি বলে পড়ে আছে। সময় হলে একটু একটু করে শিল্পের রূপ পাবে পাথরগুলো। কাঠগুলো দিয়েও তৈরি হবে কিছু না কিছু শিল্পসম্ভার। তখন পাথর আর পাথর থাকবে না। কাঠও আর কাঠ থাকবে না। রূপ পরিবর্তন করে নান্দনিক হয়ে উঠবে তারা।
কয়েক বছর আগের কথা। প্রথম একটা মূর্তি বানায় পাথরের। খুব একটা বড় না। সাত-আট ইঞ্চির কাছাকাছি। অস্পষ্ট সেই মূর্তিও পড়ে থাকে না ঘরে। একজন কবি এসে নিয়ে যান।
অযোধ্যা যাওয়ার পথে ঢুকে পড়েন হঠাৎ। সঙ্গে কয়েকজন কবি, লেখক, শিল্পী, ফটোগ্রাফার। কলকাতার সেইসব শিল্পীমনা মানুষদের সঙ্গে এসে হঠাৎ করে চোখে পড়ে মূর্তিটা। তখনই জানতে চান।
------কি রে নরেন, মূর্তিটা তুই বানিয়েছিস?
------হ্যাঁ দাদা, আমিই বানিয়েছি।
------বাঃ! বাঃ! দারুন হয়েছে। আগে তো বানাসনি কোনদিন?
------না, এই প্রথম। একটা পাথর পেয়ে গেলাম। ভাবলাম কিছু করি। তাই করে ফেললাম।
------কোথায় পেলি পাথরটা?
------নদীতে।
------কুমারী নদী?
------হ্যাঁ।
------এটা তো মূর্তি গড়ার পাথর নয়?
------জানি না। অন্যান্য পাথরের থেকে নরম মনে হলো। ঠুঁকলে ফেটেও যাচ্ছিল না। তাই নিয়ে এলাম।
------বেশ, আবার পেলে বানাস। ভালোই লাগছে কাজটা।
ওঝা ঘর যায়। সখা ঘর যায়। নানা রকম দেব-দেবীর মানত করে রুবি। কোনটাই কোনো কিছু লাভ হয় না। সন্তান আসার সম্ভাবনা দেখা দেয় না তার।
আমি বিরক্ত হই। তারপরও চুপ থাকি। খুব একটা উত্তেজনা না দেখিয়ে নিজেকে ধৈর্যশীল করে তুলি। হজম করার চেষ্টা করি কথাগুলো। কথায় কথায় তর্কাতর্কিতে সংসার কি টেকে?
গভীর সমুদ্রে জাহাজকে আটকাতে নোঙর যেভাবে আঁকড়ে ধরে মাটিকে, সংসারকে আটকাতেও সেভাবেই আঁকড়ে ধরতে হবে। নোঙর হতে হবে নিজেকে। তাহলেই সমস্ত ঢেউ, সমস্ত ঝড়, সমস্ত উথাল পাথাল সয়ে টিকে থাকবে সংসার।
কাঠ, মাটি, পাথর বা সিমেন্ট দিয়ে শিল্প সৃষ্টি করা শিল্পীর কাজ। শিল্পকে ভাঙ্গা-গড়ার খেলার মাঝে বয়স বাড়ে তার। বাড়ে অভিজ্ঞতা। বাড়ে নৈপুন্যতা। বাড়ে দক্ষতা। দক্ষতার বিচারে বাড়ে সূক্ষ্মতা। হয়ে ওঠে চিরসবুজ। হয়ে ওঠে বট।
শিল্প এক মানসিক বিশ্রাম। দৈনন্দিন জীবনের টানাপোড়েন থেকে ক্ষণিকের মুক্তি। এই মুক্তি ছাড়া জীবন এক কারাগার। জীবন এক যন্ত্রনা।
এই প্যাঁচালো ব্যাপারটা রুবির মাথায় ঢোকে না। সহজ বিষয় সহজভাবে নিতেই অভ্যস্ত সে। তাই ঘরের কোনায় শিল্পসৃষ্টির কয়েকটা সরঞ্জাম জড়ো হতেই চিৎকার করে।
------পাথরগুলো সরাও। কাঠগুলো সরাও। অসুবিধা হচ্ছে ঝাড়ু দিতে।
আমি কিছু বলি না। ফাঁকা করে দিই। ঘর ফাঁকা করতে গিয়ে মনে হয়, শূন্যতাও একপ্রকার শিল্প। তাকে অনুধাবন করার মন দরকার। দরকার তার সাথে একাত্ম হওয়ার।
আমার ঘর ভরানো, তার খালি করা; আমার চুপ থাকা, তার চিৎকার করা; সবেতেই শিল্প। সবেতেই কলা রয়েছে। পরস্পরবিরোধী হওয়াতেই বিরোধ সৃষ্টি। সৃষ্টি সংঘাতের।
সংঘাত সত্ত্বেও এই যে সহাবস্থান আমাদের, এটাই মহাশিল্প। এটাই জীবন। জীবনের থেকে বড় শিল্প হয় না।
রুবি কাঁদে। কাঁদতে কাঁদতে ভাবে------আমাদের ঘরের প্রদীপটা কেউ জ্বালাবে না। আমার মৃত্যুর পর কেউ জ্বালাবে না কোনদিন। হয় তো মানুষ থাকবে। নিজের মতো করে সব ভাঙবে সব গড়বে। আমাদের সংসারটাকে করে নেবে নিজের।
যেখানে রুবি নেই। রুবির নাম নেই। তার পদচিহ্ন নেই। অবশিষ্ট ভিটেও ভুলতে চাইবে তাকে। এই তার দুঃখ। এই তার যন্ত্রণা। দিনের পর দিন রোগা হয়ে যাওয়ার মূল কারণ।
আমি বুঝি। বুঝতে গিয়ে মনে হয়------জীবন এক যন্ত্রণার স্তুপ। যতই খোঁড়াখুঁড়ি করো যন্ত্রণা ছাড়া আর কিছু বেরোই না। তবুও আনন্দের খোঁজে তলার মাটি উপরে ও উপরের মাটি তলায় করার যে অক্লান্ত চেষ্টা, তা চলতেই থাকে। অসংখ্য রুবিরা এই চেষ্টায় মগ্ন থাকতে থাকতে কাটিয়ে দেয় দিনের পর রাত, রাতের পর দিন। কাটিয়ে দেয় জীবন। আর অসংখ্য অসংযত চারপাশ কথার কাঁটা চুবিয়ে যায় তাদের।
*****************************************************

কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন